ডায়রিয়া বাড়ছে : সচেতনতার বিকল্প নেই
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২২, ০১:২৭ এএম
রাজধানীতে ডায়রিয়া পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হচ্ছে। ডায়রিয়ার প্রকোপ গত ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে। গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ওয়াসার পানির উৎসে জীবাণু না থাকলেও বাসাবাড়ির রিজার্ভার এবং বেআইনিভাবে লাইন টানার সময় ছিদ্র থেকে ব্যাকটেরিয়া ছড়াচ্ছে। আর কিছু এলাকায় পানিতে ক্লোরিনের মাত্রা কমে যাওয়াও এক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে বলে তারা দেখতে পেয়েছেন। এ অবস্থায় বিশুদ্ধ পানি পানের বিষয়ে সবাইকে সচেতন করার ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি বহুতল ভবনগুলোর নিচে থাকা রিজার্ভ ট্যাংক কিছু দিন পর পর পরিষ্কার করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানকে গুরুত্বসহকারে দেখা উচিত। জানা গেছে, ডায়রিয়া আক্রান্তদের বেশিরভাগই রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, শনিরআখড়া, মোহাম্মদপুর, টঙ্গী, উত্তরা, আজিমপুরসহ নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা থেকে আসা। এভাবে রোগী বাড়তে থাকলে মহামারির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। বছরে দুবার ডায়রিয়া মৌসুম আসে। একবার মার্চ-এপ্রিল। এ সময়কে ডায়রিয়ার প্রি-মৌসুম বলা হয়। দ্বিতীয়বার আগস্ট-অক্টোবর মাস। এই সময়কে পোস্ট মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। এ সময় রোগীর চাপ বেশি থাকে। আর গরমের সময়ে ডায়রিয়ায় শিশুদের সংখ্যা থাকে কম, বড়রা বেশি আক্রান্ত হন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়ার প্রেক্ষাপটে স্বাভাবিক কারণেই বেশকিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন পড়েছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের ক্ষেত্রে মানুষের করণীয় কিছু নেই, তবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে ডায়রিয়ার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। এসব সতর্কতামূলক ব্যবস্থার মধ্যে পানি ফুটিয়ে পান করা অন্যতম। এছাড়া ডায়রিয়া হলে স্যালাইন ও অন্যান্য তরল খাবার, যেমন- ডাবের পানি, চিড়া ভিজিয়ে তার পানি, ডালের পানি, ভাতের মাড়, চালের গুঁড়ার জাউ ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। রাস্তার পাশের খোলা খাবার বা শরবতজাতীয় পানীয় পরিহার করতে হবে। যে কোনো খাবার গ্রহণের আগে ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করাও ডায়রিয়া প্রতিরোধের অন্যতম উপায়। ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের মধ্যে বৃদ্ধ ও শিশুর সংখ্যাই বেশি। শিশুদের ক্ষেত্রে মায়ের দুধসহ অন্যান্য খাবার তাদের যথেষ্ট পরিমাণে খাওয়ানোই সমীচীন। পাশাপাশি কলা, চিড়া ও ডাবের পানি খাওয়াতে হবে। আর পানিশূন্যতা দেখা দিলে স্যালাইন খাওয়াতে হবে। তবে কোনোভাবেই বাসি খাবার দেয়া যাবে না। সাধারণ ডায়রিয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক না দেয়ারও পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক। সর্বোপরি জনসাধারণকে ডায়রিয়া রোগ সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে হবে। হাসপাতালে যেসব বৃদ্ধ ও শিশু ভর্তি হচ্ছে তারা বেশিরভাগই দরিদ্র। তাদের বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ ও সময়মতো চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে কর্তৃপক্ষকে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের চিকিৎসায় গুরুত্ব দিতে হবে এ সময়।