×

মুক্তচিন্তা

নিশ্চিত হোক শ্রমিক অধিকার

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২২, ১২:৩৪ এএম

নিশ্চিত হোক শ্রমিক অধিকার

শ্রমিক দিবস! যেটাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে বিশ্বের প্রায় নব্বইটি দেশ। ১৮৮৬ সালের ১ মে, যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ে রক্ত দিয়েছিলেন। ন্যায্য দাবি আদায়ের মধ্যে মূল বিষয়বন্তু ছিল কর্মদিবস ৮ ঘণ্টা করা। পরবর্তীতে ১৮৮৯ সালের ১৪ জুলাই ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে ১ মে শ্রমিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এর পরের বছর থেকে ১ মে বিশ্বব্যাপী পালন হয়ে আসছে ‘মে দিবস’ তথা ‘শ্রমিক দিবস’। শ্রমিকদের এত ত্যাগ, আন্দোলনের মধ্য দিয়েও কি ন্যায্য দাবি অর্জিত হয়েছে? নাকি এখনো তারা শোষণের শিকার? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হলে দেখতে হবে বর্তমানে শ্রমিকরা কোন পরিস্থিতিতে আছে! ১ মে সারাবিশ্বে পালিত হয় শ্রমিক দিবস হিসেবে। স্বাধীনতার পর থেকে দেশে সরকারিভাবে দিবসটি পালন করা হয়। অথচ এখনো শ্রমিকদের নির্দিষ্ট শ্রম ঘণ্টা, ন্যূনতম মজুরি, বেতন বৈষম্য দূর করার দাবিতে আন্দোলনে নামতে হয়। শ্রমিকরা একটি দেশের মূল চালিকাশক্তি। চারদিকে ইটপাথরের বহুতল ভবন তৈরি এবং শিল্পকারখানা স্থাপনের মধ্য দিয়ে দেশ ও পৃথিবীর এত অগ্রগতি, যার সবকিছুই সাধারণ শ্রমিকদের দ্বারা গঠিত। মালিকপক্ষ তাদের ঘাম ঝরানো শ্রমেই বিলাসিতার জীবনযাপন করছে। কিন্তু সেই মালিকপক্ষ থেকে শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার আদায় নিয়ে শঙ্কিত। শ্রমিকদের শ্রম দিয়েই সভ্যতার আমূল পরিবর্তন, অথচ সে অনুযায়ী পরিবর্তন হয়নি শ্রমিকদের ভাগ্যের। মে দিবসে উপরমহলের নানা প্রতিশ্রæতিমূলক বক্তৃতা শোনা যায়। এই প্রতিশ্রæতির ওপর ভিত্তি করে মে দিবসে শ্রমিকদের আনন্দ উল্লাসে কাটানোর কথা ছিল। তবে প্রতিশ্রæতি কেবল প্রতিশ্রæতিতেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে। এখনো মে দিবসে শ্রমিকদের আন্দোলনে নামতে হয় ওপর মহলের দেয়া প্রতিশ্রæতি এবং ন্যায্য দাবি আদায়ে। রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় হতাহতের জন্য সরকার ১২২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিলেও, বিজিএমইএর অবহেলা অথবা দুর্নীতির কারণে সেই টাকা কয়েক জন ছাড়া পৌঁছায়নি বেশির ভাগই হতাহত শ্রমিকের পরিবারের কাছে। রানা প্লাজা দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করা হচ্ছে মালিকপক্ষের অবহেলাকে। মালিকপক্ষের এমন অবহেলার কারণে কর্মস্থলে অনেক শ্রমিক দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। শ্রমিকদের কাজে নিয়োগের পূর্বে তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। সুতরাং এখন প্রয়োজন হয়ে পড়েছে শ্রমিকদের স্বার্থ এবং সম্মান রক্ষার্থে ওপর মহলের নজর দেয়া। কারণ তাদের ঘামে তৈরি আজকের এই সভ্যতা। তাই শুধু কাগজে কলমে স্বাক্ষরিত হয়ে শ্রমিক আইন থাকলে চলবে না। এর কঠোর বাস্তবায়ন জরুরি। যাতে সাধারণ শ্রমিকরা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারে। মালিকপক্ষকে শ্রমিকদের ওপর সদয় হতে হবে এবং ন্যায্য দাবি আদায় করতে হবে। শ্রমিকদের নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবা প্রদান এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ করতে হবে।

মাইন উদ্দীন হাসান : শিক্ষার্থী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App