×

রাজনীতি

তৃণমূল কোন্দল মেটানোই চ্যালেঞ্জ আওয়ামী লীগের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২২, ০৯:১২ এএম

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চলতি বছরই নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করবে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। এর মধ্যেই প্রতিটি ইউনিটের কাউন্সিল শেষ করে কেন্দ্রীয় কাউন্সিল করা হবে। এক্ষেত্রে তৃণমূলের কোন্দল মেটানোই বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন ক্ষমতাসীনরা। দলটির শীর্ষ নেতাদের মতে, জাতীয় নির্বাচনের আগে দলের তৃণমূলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে সংগঠনকে আরো সুসংহত করাকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন পর্যায়ের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলন করাকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।

এদিকে সবশেষ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের সংকট তৈরি হয়েছে যা সংগঠনের ওপর প্রভাব পড়বে বলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা আশঙ্কা করছেন। সারাদেশে ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে হেরে গেছে প্রায় দেড় হাজারের বেশি প্রার্থী। আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের অনেকে জানিয়েছেন তৃণমূলকে পাশ কাটিয়ে প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ায় অনেক জায়গায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্থানীয়ভাবে একজোট হয়েছিলেন দলটির অন্য অংশগুলো। আবার এই অংশগুলোকে অনানুষ্ঠানিক সমর্থন বা ভোট দিয়েছে আওয়ামী লীগ বিরোধী ভোটাররাও। আর কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, বিরোধী দল নির্বাচনে আনুষ্ঠানিকভাবে না থাকায় তারা বহু জায়গায় দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের নির্বাচনে অংশ নেয়াকে অনুমোদন দিয়েছেন। নির্বাচনে কয়েকটি স্থানে নিজেদের মধ্যে সংঘাতে কয়েকজন নেতাকর্মীর প্রাণও ঝরে গেছে। ইউপি নির্বাচন, ক্ষমতার দ্ব›দ্ব, ব্যক্তিগত বিরোধের কারণে তৃণমূলের অনেক স্থানেই আওয়ামী লীগে বিদ্যমান অভ্যন্তরীণ দ্ব›দ্ব-বিবাদ রীতিমতো সংঘাতে রূপ নিয়েছে। কিছুদিন পর পরই দেশের কোথাও না কোথাও নিজেদের মধ্যে ভ্রাতৃঘাতী সংঘর্ষে জড়াচ্ছেন নেতাকর্মীরা। এসব ঘটনায় ক্ষুব্ধ দলটির হাইকমান্ড। দ্রুত এসব দ্ব›দ্ব-কোন্দল মিটিয়ে দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকমান্ড।

শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, দলীয়প্রধানের নির্দেশে অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসন ও নেতাকর্মীদের মধ্যে দূরত্ব কমানোর লক্ষ্যেই তৃণমূল নেতাদের ঢাকায় ডেকে এনে ধারাবাহিক বৈঠক করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। এছাড়া সংগঠনকে চাঙ্গা করতে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে বর্ধিত সভা, মতবিনিময় সভা এবং সম্মেলন করা হচ্ছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করতে নির্বাচনের দলের ঐক্য ফিরিয়ে আনা এবং সংগঠনকে আরো সুসংহত করাকে জরুরি মনে করছেন দলটির শীর্ষ নেতারা। অভিযুক্তদের তালিকা করে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ একটি ঐতিহ্যবাহী দল। কোন্দল কিছুটা থাকবে স্বাভাবিক। তা নিরসনে আমরা কাজ করছি।

এদিকে দলের ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে ৫৮টি জেলার সম্মেলন শেষ হয়েছে। সবশেষ ৮ ফেব্রুয়ারি দলের সভাপতিমণ্ডলীর সভায় মে মাসের মধ্যে বাকিগুলো শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন দলীয় সভাপতি। নেতারা জানিয়েছেন, কোন্দল মেটানোর পাশাপাশি সরকারের উন্নয়ন ও সাফল্য জনগণের কাছে তুলে ধরা এবং সরকার বিরোধীদের অপপ্রচার প্রতিহত করার নির্দেশনা তৃণমূলকে দেয়া হয়েছে। দলকে কোন্দলমুক্ত করতে সম্মেলনের আগে বিরোধ মেটাতে তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে হুঁশিয়ার করা হচ্ছে।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ভোরের কাগজকে বলেন, পৃথিবীর যে প্রান্তে তিনজন বাঙালি আছেন সেখানেই একাধিক গ্রুপের অস্তিত্ব আছে। রাজনীতিতে প্রতিযোগিতা থেকে কোন্দলের সূচনা হয়। সুতরাং কোন্দল মুক্ত করা অসম্ভব। তবে এটি যেন ভয়াবহ আকার ধারণ না করে, হানাহানির সৃষ্টি না হয়, আমরা সেদিকে দৃষ্টি রাখি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App