×

জাতীয়

ভূরাজনীতি ও ভূঅর্থনীতি নিয়ে আলোচনার ইঙ্গিত

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২২, ০৭:৪৩ পিএম

‘প্রতিবেশীই প্রথম’ নীতির অংশ হিসেবে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস. জয়শঙ্কর আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে আসছেন। পরে বাংলাদেশ থেকে তিনি ভুটান সফরে যাবেন। তার এ সফরে ভূরাজনীতি ও ভূঅর্থনীতি নিয়ে আলোচনার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

এ সফরের সময় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করবেন। এ সময় তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেয়া চিঠি প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেবেন এবং দিল্লি সফরের বিষয়টি চূড়ান্ত করার জন্য কথা বলবেন। পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।

দুই মন্ত্রীর বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, এবারের আলোচনাটি আনুষ্ঠানিক হবে না এবং এটি ‘ড্রইংরুম অ্যারেঞ্জমেন্ট’, অর্থাৎ সোফায় বসে বৈঠক হবে।

বুধবার (২৭ এপ্রিল) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ড. জয়শঙ্করের বাংলাদেশ সফরটি নিয়মিত দ্বিপক্ষীয় উচ্চ-পর্যায়ের সফরের অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। গত বছরের মার্চ মাসে তিনি সর্বশেষ ঢাকা সফর করেছিলেন। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের মন্ত্রী পর্যায়ের ফোরামের আলোচনার সাইডলাইনে মোমেনের সঙ্গে আলোচনা করেন জয়শঙ্কর।

এরপর টুইট বার্তায় জয়শঙ্কর বলেছিলেন, ২০২১ সাল ছিল ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের জন্য একটি দুর্দান্ত বছর। ২০২২ সালে এটিকে আরো উচ্চ স্তরে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

প্রসঙ্গত, ফোরাম ফর ইন্দো-প্যাসিফিক কো-অপারেশনে যোগ দিতে তারা দুজনই ফ্রান্সে তিন দিনের সফরে ছিলেন।

সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব (পূর্ব) রিভা গাঙ্গুলি দাস এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলির সঙ্গে যে সংযোগ প্রকল্পগুলো রয়েছে সেটি গ্রহণ করার জন্য উন্মুক্ত করেছে ভারত। এরফলে থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া এবং ভিয়েতনামের সঙ্গে পূর্ব ভারতকে সংযুক্ত করা হবে। এতে ভারতের পূর্ব রাজ্যগুলো বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তর-পূর্বের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

ভারতের বার্তাসংস্থা পিটিআইকে রিভা গাঙ্গুলি দাস বলেছেন, আন্তর্জাতিক সড়ক, রেল এবং খাল সংযোগ প্রকল্পের উন্নয়ন দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে এবং আগামী তিন থেকে চার বছরের মধ্যে সেগুলোর কাজ শেষ হবে। এতে এই অঞ্চলে বাণিজ্য বাড়বে। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে জলপথের মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কে কথা বলার সময় তিনি বলেন, ওই পথগুলো পুরোপুরিভাবে চালু হলে ভারত উত্তর-পূর্বে পণ্য পরিবহনের জন্য বাংলাদেশের মংলা এবং চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করতে সক্ষম হবে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র বলেছে, গত ২২ ফেব্রুয়ারি প্যারিসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে ইন্দো-প্যাসিফিক ফোরামের সাইডলাইনে বৈঠক করেন এস জয়শঙ্কর। তখনই প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল মে মাসের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিল্লি যাবেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এবারের সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের আমন্ত্রণের পাশাপাশি ভূ-রাজনৈতিক আলোচনা গুরুত্ব পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, পানি, বাণিজ্য, কানেক্টিভিটি, সীমান্ত ব্যবস্থাপনাসহ অমীমাংসিত বিষয় এবং ভবিষ্যৎ সহযোগিতা নিয়েই আলোচনা হবে। পাশাপাশি চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, আফগানিস্তানে মানবিক বিপর্যয়, শ্রীলঙ্কায় অস্থিরতাসহ অনেক কিছু হচ্ছে-যা ভারতের মতো বড় দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই পরিস্থিতিতে ভারত তার বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে একই ধরনের কৌশল নিয়ে আলোচনা করতেই পারে।

ঢাকা সফর শেষে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর ভুটানে যাবেন। আগামী ২৯ ও ৩০ এপ্রিল থিম্পুতে থাকবেন তিনি। ভারত সরকারের মন্ত্রী পর্যায়ে জয়শঙ্করই প্রধান যিনি ২০২০ সালের মার্চের পর দেশটি সফরে যাচ্ছেন। কোভিড -১৯ মহামারি শুরু হওয়ার পর এটিই হবে প্রথম উচ্চ-স্তরের সরকারি সফর। জয়শঙ্কর ভুটানের রাজধানীতে রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক, প্রধানমন্ত্রী ড. লোটে শেরিং এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী তান্ডি দরজির সঙ্গে দেখা ও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App