×

সম্পাদকীয়

করোনার চতুর্থ ঢেউয়ের শঙ্কা : ঈদযাত্রায় সতর্কতা অবলম্বন করুন

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০২২, ১২:২৯ এএম

করোনার চতুর্থ ঢেউয়ের শঙ্কা : ঈদযাত্রায় সতর্কতা অবলম্বন করুন

দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কম থাকলেও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে নতুন করে আক্রান্তের খবর দেখছি। এছাড়া চীন, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি ও কোথাও কোথাও ভাইরাসটির নতুন ধরন শনাক্ত হচ্ছে। এমতাবস্থায় আমাদের সতর্ক হতে হবে। বিশেষ করে আসন্ন ঈদে চলাচলে আমাদের সচেতন হতে হবে। ইতোমধ্যে করোনা থেকে সুরক্ষা পেতে ৬ দফা সুপারিশ করেছে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত পরামর্শক কমিটি। গত রবিবার এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও করোনা ভাইরাস নিয়ে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা আমাদের জন্য জরুরি। কিন্তু বর্তমান অবস্থা দেখলে মনে হয় ঠিক উল্টোপথে আমরা হাঁটছি। গতকাল কয়েকটি কাগজে কমলাপুর রেলস্টেশনে টিকেট সংগ্রহের ছবি ছাপা হয়েছে। হাজার হাজার ঘুরমুখো মানুষ গাদাগাদি করে টিকেটের জন্য অপেক্ষা করছে। এমন ছবি বলে দেয় আমাদের সচেতনার চিত্র। ঈদকে সামনে রেখে এবারো ঘরমুখো মানুষের ঢল নামবে, তাতে শঙ্কা বেড়ে যায়। গত বছর নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ বাড়ি ফিরেছিলেন। এবারো তার ব্যতিক্রম হবে না। গতবার ঈদের ছুটি কমিয়ে, দূরপাল্লার পরিবহন বাস, লঞ্চ ও ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখে মানুষের গ্রামে যাওয়া আটকে দেয়ার যে পরিকল্পনা সরকার করেছিল, তা কার্যত ভেঙে পড়েছে। বিকল্প পথে হাজার হাজার মানুষ গ্রামে ছুটছেন। কোনোভাবেই ঘোষিত লকডাউন ও সামাজিক দূরত্ব নির্দেশনা মানা হয়নি। চিকিৎসা বিশ্লেষকরা বলছেন, সামনে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ বিপর্যয় নামতে পারে। জনসচেতনতার অভাব তৃতীয় বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে মহামারি নিয়ন্ত্রণের একটি অন্যতম চ্যালেঞ্জ। কোভিড-১৯ প্রতিরোধে মাস্ক পরিধান, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, হাঁচি-কাশির শিষ্টাচারসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সাধারণ মানুষকে কমই উদ্বুদ্ধ হতে দেখা গেছে। বাংলাদেশের মতো ঘনবসতি দেশে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা দুরূহ বিষয় হলেও মাস্ক পরিধান বিষয়টিও বিভিন্ন স্তরের মানুষের কাছে অবহেলিত। মূল করণীয়গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো মাস্ক ব্যবহার। সব সময় সঠিকভাবে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এ সংক্রান্ত জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে এগিয়ে আসতে হবে। মসজিদ, মন্দির, মহল্লা, ওয়ার্ড সবখানে মাস্ক ব্যবহারে মানুষকে উৎসাহিত করতে হবে। বাস্তবতা হলো, শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করার জন্য এর আগে সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিল, তা ক্রমান্বয়ে শিথিল করা হচ্ছে। ঈদ, পার্বণ এসব কিছুই কেন যেন জীবনের আগে অগ্রাধিকারের সঙ্গে জীবিকার প্রশ্নও। সরকার যেমন অনন্তকাল প্রণোদনা দিয়ে মানুষ বাঁচিয়ে রাখতে পারবে না তেমনি মানুষও শুধুই প্রণোদনায় বেঁচে থাকতে চাইবে তেমনটাও প্রত্যাশা করা যায় না। কাজেই মানুষের জীবন ও জীবিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হলে করোনার চতুর্থ ঢেউ আসার আগেই সংশ্লিষ্ট সবাইকে অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। নিজে সতর্ক না হলে, সচেতন না হলে আমাদের ভুগতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App