×

সাহিত্য

সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়তে বই পড়া বাধ্যতামূলক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২২, ০৯:২২ পিএম

সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়তে বই পড়া বাধ্যতামূলক

মঙ্গলবার সকালে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ছবি: ভোরের কাগজ

বিশ্ব গ্রন্থ ও কপিরাইট দিবস উদযাপন উপলক্ষে চার দিনব্যাপী গ্রন্থ প্রদর্শনীর সমাপনী দিনে বেসরকারি গ্রন্থাগারের ৫০ জন বর্ষসেরা পাঠককে বই উপহার এবং ‘তরুণ প্রজন্মকে গ্রন্থপাঠে উদ্বুদ্ধকরণে কার কী করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) সকালে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা- সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ম হামিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত সংস্কৃতি সচিব অসীম কুমার দে।

জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক কবি মিনার মনসুরের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। আলোচক ছিলেন দনিয়া পাঠাগারের সভাপতি মো. শাহনেওয়াজ, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির উপদেষ্টা ওসমান গনি, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশখ সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের উপপরিচালক সুহিতা সুলতানা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনায় ছিলেন জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের গ্রন্থাগারিক মো. ফরিদ উদ্দিন।

সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি বই পড়া বাধ্যতামূলক এমন মন্তব্য করে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ম হামিদ বলেন, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠ্য বই বহির্ভূত বইপাঠ বাধ্যতামূলক করা দরকার। একসময় বই নিয়ে আলোচনা, বইপাঠ এবং স্কুল কলেজ থেকে বই সরবরাহ করা হতো। কিন্তু এখন সেই অসাধারণ আয়োজনটি কোথাও আর নেই। স্কুল কলেজে পাঠ্যবই বহির্ভূত বই পড়া বাধ্যতামূলক করতে হবে। কারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বৃহদাকারের প্রতিষ্ঠান যেখান থেকে শিক্ষার্থীদের মনোজগৎ তৈরী হয়।

তিনি আরো বলেন, পাঠ্যবই বহির্ভূত বই পড়া বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি সংস্কৃতি চর্চাও বাধ্যতামূলক করতে হবে। পাঠাগারগুলোতে বই পড়ার পাশাপাশি তরুণ প্রজন্ম যেন সংস্কৃতি চর্চাও করতে পারে এদিকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে নজর দিতে হবে। তাদেরকে সাংস্কৃতিক সংগঠন হিসেবে বিবেচনায় নিতে হবে। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে হলে এ উদ্যোগের কোন বিকল্প নেই। মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, একটি সুশিক্ষিত এবং সৃজনশীল প্রজন্ম গড়ে তুলতে হলে ঘরে ঘরে পাঠাগার গড়ে তুলতে হবে। সরকারের পাশাপাশি সবাইকে এদিকে নজর দিতে হবে। এটা এখন সময়ের দাবি।

মিনার মনসুর বলেন, প্রতি বছর বই দিবসে বইটাকে কেন্দ্র করে আমাদের উৎসব করা উচিৎ। আমাদের প্রতিনিয়ত সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে, আর সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়তে গেলে বইয়ের কোন বিকল্প নেই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী তৎপরতার বিরুদ্ধে লড়তে গেলে বইয়ের কোন বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখ কিংবা অমর একুশে ফেব্রুয়ারিতে যেমন আমরা অসাম্প্রদায়িকতার উৎসব করি, একইভাবে বিশ্ব গ্রন্থ দিবসেও বইয়ের উৎসব করা দরকার। যে উৎসব দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে রাজধানী ঢাকা পর্যন্ত হওয়া উচিত। যে উৎসব লেখক, পাঠক, প্রকাশক, সংস্কৃতি কর্মীদের উৎসব এবং সর্বোপরি সরকারের উৎসব। যে সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ গড়তে চায় সেই সরকারে উৎসব। আগামি বছর গ্রন্থকেন্দ্র আজকের মতো ঘরোয়াভাবে নয়, মাঠেই বই উৎসবের আয়োজন করবে। বক্তারা বলেন, একটি সৃজনশীল প্রজন্ম গড়ে তুলতে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ গড়তে হলে বই পড়ার ওপর জোর দিতে হবে। সরকারের এদিকে নজর দিতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App