×

জাতীয়

বিল ভরাট করে শপিংমল করেছে বসুন্ধরা : প্রধানমন্ত্রী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২২, ০১:২২ পিএম

বিল ভরাট করে শপিংমল করেছে বসুন্ধরা : প্রধানমন্ত্রী
বিল ভরাট করে শপিংমল করেছে বসুন্ধরা : প্রধানমন্ত্রী

ফাইল ছবি

রাজধানীর পান্থপথে যেখানে বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়েছে সেটি ছিল একটি বিল। সেই বিল ভরাট করেই বসুন্ধরা শপিং মল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রবিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে দেশের বিভিন্ন স্থানে নবনির্মিত ফায়ার স্টেশনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন সরকার প্রধান। তিনি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব ফায়ার স্টেশনের উদ্বোধন করেন।

বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বসুন্ধরা শপিং মলে যখন আগুন লাগে, তখন সেই আগুন নির্বাপণের তেমন কোনো ব্যবস্থাই ছিল না। বসুন্ধরা সিটি পান্থপথে হয়েছে। আসলে ওখানে ছিল খাল। সেই খাল নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ছিল এবং নৌকাও আসতো। ওই এলাকাটা ছিল বিশাল বিল এলাকা। সেই বিল এলাকাটাকে ভরাট করে আর খালগুলো বক্স কালভার্ট করার ফলে বসুন্ধরায় যখন আগুন লাগল। যে বিল্ডিং গড়ে উঠেছে একটি বিলের ভেতর, সেই ভবনে আগুন নেভাবার এবং পানি দেয়ার ব্যবস্থা নেই। পানি আনতে হয়েছিল হোটেল সোনারগাঁও হোটেল থেকে। হোটেলের সুইমিং পুল থেকে পানি এনে আগুন নেভানো হয়। এটাই হচ্ছে- আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যের বিষয়। ‌তখন অগ্নি নির্বাপণের জন্য মাত্র চারতলা পর্যন্ত পানি দেয়ার সুযোগ ছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি সিদ্ধান্ত দিয়েছিলাম প্রতিটি উপজেলায় একটি করে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অবশ্যই হতে হবে। সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের দেশের মানুষকে এ ব্যাপারে আরো বেশি সতর্ক হতে হবে। ফায়ার ফাইটার আধুনিক প্রশিক্ষিত হয় আন্তর্জাতিক মানের হয় সে দিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ফায়ার একাডেমি প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নিয়েছি এখানেও একটা দক্ষ জনশক্তি দরকার। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা পদক্ষেপটা হাতে নিয়েছি। ইতিমধ্যে জমি হস্তান্তর করা হয়েছে।

যেখানে মাত্র ২০৪টি ফায়ার স্টেশন ছিল। অথচ জনসংখ্যা বেড়ে গেছে ১৬ কোটির উপরে সে দিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা পদক্ষেপ নিয়েছিলাম যে প্রত্যেকটা উপজেলা অন্তত একটি করে ফায়ার স্টেশন হবে। এছাড়া বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে ফায়ার স্টেশন গড়ে তুলবো। এখন প্রায় ৪৫৬ ফায়ার স্টেশন আমাদের আছে। আজকে আরো ৪০টি ফায়ার স্টেশন উদ্বোধন করা হচ্ছে। ‌ আগামী জুনের মধ্যে আরো ৫৫টি তৈরি হয়ে যাবে- বলে জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বসুন্ধরার অভিজ্ঞতার আলোকে যদি বলি, যারা আমাদের উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে, আমাদের আর্কিটেক্ট যারা এবং প্রকৌশলী যারা বাজারের ডিজাইন করেন সবকিছু করেন, প্রত্যেককে একটি কথা মনে রাখতে হবে। যে কোনো একটি প্রজেক্ট যখন তৈরি করেন তাহলে সেই জায়গায় সেই প্রতিষ্ঠানগুলোতে অগ্নিনির্বাপণের আধুনিক ব্যবস্থা আছে কিনা সেটি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি যদি কখনো আগুন লাগে সেটা নেবানোর জন্য পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যায় কিনা সেটাও নিশ্চিত করতে হবে। জলাধারগুলিকে সংরক্ষণ করতে হবে। বক্স কালভার্ট বা জলাধার ভরাট করে সবকিছু করা ঠিক না। ‌ যেখানে শুধু জলই ছিল যেখানে শুধু বিল ছিল আর সেখানেই একটি বিল্ডিং এর অগ্নি নির্বাপনের জন্য পানি পাওয়া যায় না ঢাকা শহরে অজস্র খাল-বিল পুকুর এর জায়গা বাংলাদেশ তাইতো এরকম। ভরাট করার আগে কথাটা মাথায় রাখা উচিত ছিল। অনেক সময় আগুন লাগলে কাছাকাছি পানি পাওয়া যায় না , পানি নিতে পারে না বলে আগুন তো আর বসে থাকে না। আগুনের গতিতে তীব্র। সেটা ফাইট করতে হলে যে জিনিসগুলো দরকার সেটাই যদি না পাওয়া যায় তাহলে ফায়ার ফাইটার কিভাবে কাজ করবে তাদের এত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়। সেটা মাথায় রেখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সেজন্য আমার অনুরোধ থাকবে প্রত্যেকটা ও উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অথবা যারা আমাদের যারা আর্কিটেক্ট এবং ইঞ্জিনিয়ার তাদের অনুরোধ করবো যখন কোন প্ল্যান করবেন প্রজেক্ট প্রস্তুত করবেন বিভিন্ন মন্ত্রনালয় প্রজেক্ট তৈরি করে তাদেরকে অনুরোধ থাকবে ফায়ার সার্ভিসের জন্য জন্য বিশেষ সুবিধা থাকে সে বিষয়টা দেখতে হবে। অর্থাৎ তাদের গাড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা এবং পানি পাওয়ার ব্যবস্থা পানির প্রাপ্যতা যেন নিশ্চিত নিশ্চিত হয় সেটার ব্যবস্থা করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলাধার এবং বৃষ্টির পানি যাতে সংরক্ষণ করা থাকে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রতিটি ভবনে এখন তো অনেক উচ্চ তলা ভবন হয় আমাদের এখন মাত্র ২০ তলা পর্যন্ত ফায়ার ফাইটিং এর সব ক্ষমতা আছে। কিন্তু সেখানে আমি দেখতে পাই কেউ হয়তো শত তলা উঁচু ভবন করবে কেউ ৩০ তলা ৪০ তলা নানারকম প্ল্যান করে বসে আছে। তাদের চিন্তা করতে হবে এখানে কখনো কোনো দুর্ঘটনা দেখা দিলে সেখান থেকে উদ্ধার কাজ করবার মতো সক্ষমতা আমাদের কতটুকু আছে, সেই চিন্তাটা করেই পরিকল্পনা নেয়া উচিত।

তিনি বলেন, প্রতিটি বিল্ডিং স্কুল আদালত অফিস শপিং মল, বিনোদন কেন্দ্র সিনেমা হল বিভিন্ন শিল্প-কারখানাসহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই অগ্নি নির্বাপনের ব্যবস্থা থাকতে হবে। অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা একান্তভাবেই জরুরি। সেটা যেমন করতে হবে আবার আশেপাশে যেন জলাধার থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ‌ এটা নিজেদের নিরাপত্তার জন্যই একান্তভাবে দরকার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App