×

জাতীয়

তারা সরকার উৎখাত করতে চায়, উদ্দেশ্যটা কি: প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২২, ০৪:২৩ পিএম

আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাতের ঘোষণা দিয়ে মাঠে সরব হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত জোট সঙ্গে বাসদসহ কিছু বাম দল- তাদের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রায়ই দেখি আমাদের দেশে কিছু নেতা আছে তারা খুব আন্দোলনের জন্য ব্যস্ত। কি তাদের আন্দোলন এই সরকারকে হঠাতে হবে। কোন সরকার, আওয়ামী লীগ সরকার। এখানে বিএনপি-জামাত জোট তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন আমাদের মান্না সাহেব তার সঙ্গে ড. কামাল হোসেন সাহেবের একটা অংশ আর সেই সঙ্গে আবার যুক্ত হয়েছে কমিউনিস্ট পার্টি এবং আমাদের বাম দল-বাসদ আরো কারা কারা, তারা প্রায়ই বলে তারা নাকি সবাই এক হয়ে আন্দোলন করে আওয়ামী লীগ সরকারকে হঠাবে। আমার প্রশ্ন অপরাধটা কি আওয়ামী লীগের?

বুধবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ কৃষক লীগের ৫০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিশ্ব নাথ সরকার বিটুর সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য উম্মে কুলসুম স্মৃতি, মীর্জা আব্দুল জলিল প্রমুখ।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি প্রায়ই শুনি বক্তৃতায় আমাদের দেশের কিছু নেতারা আছে দুঃসময়ে মানুষের পাশে কতটুকু দাঁড়িয়েছে সেটা আমি জানি না। করোনাকালীন সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্য করেছে কি-না সেটার তারও কোনো আমরা দেখি নাই, তবে তারা আন্দোলনের জন্য খুব ব্যস্ত। কি আন্দোলন এই সরকারকে হঠাতে হবে। তিনি বলেন, আমরা ২০০৮ সালের নির্বাচনে সরকারে এসেছি। তখন ইশতেহার রূপকল্প ২০২১ ঘোষণা দিয়েছিলাম। আমরা তা অর্জন করেছি।

২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করেছি, ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছি। এই সময় আমরা কি অর্জন করেছি বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হয়েছে। আমার প্রশ্ন, এটা কি তাদের ভালো লাগেনি? সে কারণেই তারা এই সরকারকে হঠাতে চায়? বাংলাদেশ উন্নত দেশের মর্যাদা প্রাপ্তি। মাথাপিছু আয় বাড়িয়েছি। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে, শতভাগ বিদ্যুৎ পৌঁছাতে পেরেছি, কৃষকরা ভর্তুকির টাকাটা ব্যাংকের মাধ্যমে সরাসরি পাচ্ছে। সারের দাম চার দফা কমিয়েছি। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করেছি। বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। এই একটি সিদ্ধান্ত সারা বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পরিবর্তন করে দিয়েছে। জাতির পিতা ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বলেছিলেন, কেউ দাবায়া রাখতে পারবেনা, বাংলাদেশকে কেউ দাবায়া রাখতে পারে নাই।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আজকে বাংলাদেশ ডিজিটাল। প্রতিটি ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ড সংযোগ দিয়েছি। ডিজিটাল সেন্টার করেছি। ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনেক মানুষ ঘরে বসে বিদেশে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে, আর্থিক সচ্ছলতা পাচ্ছে। স্যাটেলাইট যুগে প্রবেশ করেছি, নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট প্রস্তুত করে যাচ্ছি, নিউক্লিয়ার প্লান্টের যুগে প্রবেশ করেছে। পায়রাতে ১৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করলাম। সেখানে ৮ মাস আগেই কাজ শেষ হয়েছে, তাতে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। সময়ের আগেই আমরা শেষ করেছি। অনেকে প্রশ্ন করেন এত বড় বড় প্রজেক্টের প্রয়োজনটা কি? শতভাগ বিদ্যুৎ দিতে গেলে বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করতেই হবে। গ্রামপর্যায়ে রাস্তা সেতু কালভাট করে দিয়েছি। এখন আর গ্রামে কাঁদা পায়ে হাটতে হয় না। রাস্তা ঘাট তৈরি করে দিয়েছি, বোধ হয় এটাও তাদের কাছে অপরাধ। কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে কোন যুবক বিনা জামানতে ২ লাখ টাকা নিয়ে কোন একটা কর্মসংস্থান করতে পারে। যুবকরা যেন উদ্যাক্তা হতে পারে সেই সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছি। বেকারত্ব থেকে যুব সমাজকে মুক্তির ব্যবস্থা নিয়েছি। বিনামূল্যে বই দিচ্ছি। ২ কোটির মতো বৃত্তি উপ বৃত্তি দিচ্ছি। সামাজিক নিরাপত্তার কর্মসূচির টাকাও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পৌছে দিচ্ছি।

কমিউনিটি ক্লিনিক করে চিকিৎসা সেবা জনগণের দৌড়গোড়ায় পৌছে দিয়ে সারা দেশে বিনামূল্যে ৩০ প্রকারের ওষুধ মানুষকে দিচ্ছি। উপজেলা এবং জেলা পর্যায়ে চিকিৎসা বৃদ্ধি করে দিচ্ছি। এদেশের কৃষক শ্রমিক সাধারণ মানুষ প্রত্যেকটা মানুষের ভাগ্য যাতে পরিবর্তন হয় তার ব্যবস্থা করেছি। আজকে দারিদ্রের হ্রাস পেয়েছে। করোনাকালীন সময়েও দারিদ্রের হার হ্রাস পেয়েছে এই যে বহু কাজ আমরা করেছি আমার প্রশ্নটা হচ্ছে এই যে কাজগুলি আমরা করে যাচ্ছি এতে সাধারণ মানুষ উপকৃত হচ্ছে। তৃণমূলের মানুষ গ্রামের মানুষ উপকার পাচ্ছে, তারা যে সরকার উৎখাত করতে চায়, তাদের উদ্দেশ্যটা কি? এই মানুষগুলোকে এই সমস্ত সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে দেয়া। এটাই তাদের উদ্দেশ্য? সেজন্যই কী সরকারকে উৎখাত করতে হবে?

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App