×

খেলা

আবাহনী-মোহনবাগান দ্বৈরথ আগামীকাল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২২, ১১:২৮ পিএম

আবাহনী-মোহনবাগান দ্বৈরথ আগামীকাল

নাবীব নেওয়াজ জীবন ও প্রীতম কোটাল

এএফসি কাপের প্লে-অফে কলকাতার বিশ্ব যুব ভারতী স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার দুই বাংলার বিখ্যাত ক্লাব আবাহনী ও মোহনবাগান মুখোমুখি হচ্ছে। কলকাতার ফুটবলপ্রেমীরা ম্যাচটি দেখার জন্য মুখিয়ে আছেন। ১২ এপ্রিল শ্রীলঙ্কার ব্লু স্টারের বিপক্ষে খেলেছিল মোহনবাগান। সেই ম্যাচে দর্শকসংখ্যা ছিল ২৮ হাজার ৭৭৩ জন। মঙ্গলবার সেই সংখ্যা আরো বেশি হওয়ার কথা জানিয়েছেন, মোহনবাগানের কোষাধ্যক্ষ উত্তম। বাংলাদেশের ফুটবলের প্রতি ভারতীয়দের বিশেষ টান সব সময়ই রয়েছে। যে জিতবে সে যাবে এএফসি কাপের মূলপর্বে। ফলে বাড়তি টান টান উত্তেজনা ম্যাচকে ঘিরে। কে জিতবে মঙ্গলবারের ম্যাচে, ঢাকা আবাহনী নাকি কলকাতা মোহনবাগান এ নিয়ে সমর্থকদের মধ্যে চলছে নানা আলোচনা। শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই জিততে মরিয়া দুই দল। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ।

আবাহনীর ম্যাচে দর্শক যেন বেশি হয় এজন্য মোহনবাগান টিকেটের দামও কমিয়ে দিয়েছে। মাত্র ১০০ রুপি দিয়েও জীবন-প্রীতম কোটাল দ্বৈরথ দেখা যাবে। আগের ম্যাচে টিকেটের সর্বনিম্ন দাম ছিল ৩০০ রুপি। এএফসি কাপের প্লে-অফে কলকাতা মোহনবাগানের চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত ঢাকা আবাহনী। কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামে ম্যাচ সামনে রেখে সোমবার অনুশীলন করেছে নাবীব নেওয়াজ জীবনরা। ম্যাচের আগে দলে কোনো ইনজুরি না থাকায় নির্ভার ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রুপু। প্রতিপক্ষ স্বাগতিক হলেও মাঠের লড়াইয়ে কোনো ছাড় দিতে নারাজ আকাশি-নীল জার্সিধারীরা।

ঘরোয়া ফুটবলে এ মৌসুমে ফেডারেশন কাপ ও স্বাধীনতা কাপের শিরোপা দুটোই ঘরে তুলেছে ঢাকা আবাহনী। প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলেও শেখ জামালকে পেছনে ফেলে দুইয়ে উঠে এসেছে আকাশি-নীলরা। ১১ ম্যাচ শেষে ২২ পয়েন্ট লেমসের দলের। এএফসি কাপের প্লে-অফে গেল সপ্তাহে মালদ্বীপের ক্লাব ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে শেষ মুহূর্তে বাতিল হয়েছে ম্যাচটি। অর্থনৈতিক কারণে আসেনি ভ্যালেন্সিয়া। ফলে ওয়াকওভার পেয়ে প্লে-অফে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলের ৬ বারের চ্যাম্পিয়নরা।

এবার কলকাতা জয়ের লক্ষ্য আবাহনীর। প্রতিপক্ষ মোহনবাগান। কলকাতার বিশ্ব যুব ভারতী স্টেডিয়ামে, ফেভারিট থাকবে স্বাগতিকরাই। তবে মাঠের লড়াইয়ে ফেভারিটের হিসাব পাল্টে দেয়ার লক্ষ্য লেমসের ছাত্রদের। কলকাতায় পৌঁছে প্রথম অনুশীলনে শীষ্যদের চোখেমুখেও ছিল ভালো করার প্রত্যয়। ফর্মে আছেন রাফায়েল, কলিনদ্রেস, নাবীব নেওয়াজ জীবন, জুয়েল রানারা।

এর আগে ২০১৭ সালের এএফসি কাপে দুইবার মোহনবাগানের মুখোমুখি হয়েছিল আবাহনী। দুই পর্বের ম্যাচে ঘরের মাঠে ১-১ গোলে ড্র করতে পারলেও কলকাতার যুব ভারতী স্টেডিয়ামে ৩-১ গোলে হেরেছিল আবাহনী।

তবে গত বছর মালদ্বীপের মাঠে নিজেদের শক্তিমত্তা মোহনবাগানকে বুঝিয়েছিল বসুন্ধরা কিংস। মালদ্বীপে অনুষ্ঠেয় এএফসি কাপে ১০ খেলোয়াড় নিয়েও ১-১ গোলে ড্র করেছিল কিংস। আকাশি-নীলরা আক্রমণভাগের শক্তি বাড়াতে দলে ভিড়িয়েছে বসনিয়ার নেডোকে। মোহনবাগানের নজর থাকবে আবাহনী ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রাফায়েল আগুস্তর দিকে। কারণ এই ফরোয়ার্ডের ভারতে খেলার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা আছে। তিনি ইন্ডিয়ান সুপার লিগে খেলেছেন চেন্নাই ও ব্যাঙ্গালুরুতে। ভারতীয় ফুটবল সম্পর্কে তার অনেক ধারণা রয়েছে বলে তার দিকে বাড়তি নজর থাকবে স্বাগতিক ক্লাবের কোচের।

আইএসএলে খেলা মোহনবাগানের সবচেয়ে সফল বিদেশি স্ট্রাইকার রয় কৃষ্ণা। ৩৪ বছর বয়সি ফিজির এই স্ট্রাইকার ২০২০ সালে যোগ দিয়ে ৩৯ ম্যাচে ২১ গোল করেছেন। যদিও আগামী মৌসুমে তার দলে থাকাটা অনিশ্চিত। সবশেষ ম্যাচে ব্লু স্টারের বিপক্ষেও খেলেননি। তবে আবাহনীর বিপক্ষে তিনি মাঠে নামলে, বাদশা-মিলাদ শেখদের জন্য তা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।

এএফসি কাপে আবাহনীর প্লে-অফের দ্বিতীয় ম্যাচের আগে অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড উইলিয়ামের কথাও বলতে হয়। ২০২০ সালে এটিকে মোহনবাগানে যোগ দিয়ে ৩৭ ম্যাচে ১০ গোল করেছেন এই ফরোয়ার্ড। ৩৪ বছর বয়সি ফরোয়ার্ড অস্ট্রেলিয়ার হয়েও খেলেছেন দুই ম্যাচ। আরেক খেলোয়াড় ৩১ বছর বয়সি ফিনল্যান্ড জাতীয় দলের জনি কোয়াকু ২৮ ম্যাচে পেয়েছেন এক গোল। ২০২১ সালে মোহনবাগানে যোগ দিয়ে ৬ ফুট দুই ইঞ্চি উচ্চতার এই মিডফিল্ডার বলের জোগানটা ভালোই দিয়ে যাচ্ছেন।

২৬ বছর বয়সি ফ্রেঞ্চ ম্যান হুগো ভামোসও কম আতঙ্কজনক নন। খেলছেন অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে। ২০২১ সালে যোগ দিয়ে ২১ ম্যাচে আছে ৫ গোল। আর প্রতিপক্ষের আক্রমণ রুখে দিতে রক্ষণে স্প্যানিশ ডিফেন্ডার তিরিতো রয়েছেনই। বর্তমান দলে ৩৮ ম্যাচ খেলেছেন ৩০ বছর বয়সি দীর্ঘদেহী এই ডিফেন্ডার। মোহনবাগানের বড় শক্তি বিদেশি সংগ্রহে। এএফসি কাপের প্রিলিমিনারি রাউন্ডে শ্রীলঙ্কার ব্লু স্টারকে ৫ গোলে উড়িয়ে দেয়ার নেপথ্যে রয়েছে তাদেরই অবদান। বিদেশিরা তিন গোল দিয়েছেন। আর স্থানীয়দের পা থেকে এসেছে দুটি। এছাড়া ফর্মেও আছেন প্রায় সবাই। তাই এএফসি কাপে দলটির স্থানীয়দের পাশাপাশি বিদেশিদের নিয়েও আলাদা করে ভাবতে হচ্ছে আবাহনীর তরুণ কোচ মারিও লেমসকে। এই দুই দলকেই প্লে-অফের লড়াই জিতে উঠতে হবে গ্রুপ পর্বে। দুই দলই প্রথম হার্ডলস পার হয়ে এখন মূলপর্বে যাওয়ার পরীক্ষায়। ভাগ্য কার দিকে ঝুলে পড়ে সেটাই দেখার। মোহনবাগান প্লে-অফের প্রথম পর্বে শ্রীলঙ্কার দল ব্লু স্টারকে উড়িয়ে দিয়েছে আগের ম্যাচে, আবাহনী ওয়াকওভার পেয়েছে মালদ্বীপের ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App