×

জাতীয়

হাইকোর্টে চোখের জলে কানাডাগামী মেয়েকে বিদায় জানাল বাবা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২২, ০৫:২১ পিএম

হাইকোর্টে চোখের জলে কানাডাগামী মেয়েকে বিদায় জানাল বাবা

ফাইল ছবি

মেয়েকে হাইকোর্ট থেকে বিদায় জানালেন সেই বাবা। চূড়ান্ত রায় ঘোষণার পর আদালতের এজলাস কক্ষে মেয়েকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন বাবা। আশেপাশে থাকা অনেকের চোখ থেকেও জল গড়িয়ে পড়ে। আদালত কক্ষে তৈরি হয় আবেগঘন দৃশ্য।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক ১৯ বছর বয়সী তরুণীকে বাবা-মা গৃহবন্দি রেখেছেন এমন অভিযোগের বিষয়ে দায়ের করা রিটের শুনানি শেষে এমন দৃশ্য তৈরি হয়। শুনানি শেষে নিরাপত্তা, চিকিৎসা, শিক্ষাসহ সব ধরনের দায়িত্বের নিশ্চয়তার শর্তে কানাডিয়ান দূতাবাসের তত্ত্বাবধানে ওই তরুণীকে সেদেশে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন হাইকোর্ট।

রবিবার (১৭ এপ্রিল) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ও আদেশ দেন। হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. গোলাম রব্বানীকে আজই (রবিবার) ওই তরুণীকে কানাডিয়ান হাইকমিশনে পৌঁছে দিতে বলা হয়।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম (জেড আই) খান পান্না। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. শাহীনুজ্জামান ও আয়েশা আক্তার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।

ওই তরুণীর বাবা-মায়ের পক্ষে শুনানিত ছিলেন আইনজীবী অজিউল্লাহ। তাকে সহযোগিতার জন্য ছিলেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট আজিম উদ্দীন পাটোয়ারি। এছাড়া আদালতে উপস্থিত ছিলেন কানাডিয়ান হাইকমিশনের প্রতিনিধিসহ কানাডার একটি মানবাধিকার সংস্থার প্রতিনিধি। বাবা-মা সহ ওই তরুণীও আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে আদালতকে এই তরুণীর বাবা বলেন, আমার মেয়ে কানাডা চলে যাচ্ছে। এতে আমার দুঃখ নেই। যেখানেই যাক মেয়ে ভাল থাকুক, সুস্থ থাকুক- এটাই আমার চাওয়া। আমার মেয়ের পড়াশুনা নিয়েও মাথা ব্যাথা নেই। শুধু চাওয়া, আমার মেয়ে যেন চিকিৎসা পায়, আমার মেয়ে বেঁচে থাকুক। এক পর্যায়ে হাইকোর্ট তরুণীকে উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা চাই তুমি কানাডায় ভালভাবে পড়ালেখা করে বাংলাদেশের ভাবর্মূতি উজ্জ্বল করবে। আমরা যেন তোমাকে নিয়ে গর্ব করতে পারি।

রিটের নথি থেকে জানা যায়, বাবা-মা কানাডায় থাকতেন। তাই তরুণীর জন্ম কানাডায়। তাই তিনি সেই দেশের নাগরিক। কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। ১০ মাস আগে তার বাবা-মা বেড়ানোর কথা বলে তাকে নিয়ে বাংলাদেশে আসেন। এরপর ওই তরুণী কানাডায় ফিরে যেতে চাইলেও তাকে যেতে দেওয়া হয়নি। এক পর্যায়ে ওই তরুণী ল্যান্ড ফোনে কানাডা সরকার ও ঢাকায় কানাডিয়ান হাইকমিশনকে ফোন করে তাকে জোরপূর্বক ঘরবন্দি করে রাখার কথা জানান। ওই তরুণী কানাডায় ফিরে যাওয়ার ইচ্ছার কথা জানান।

এরপর গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মুগদা থানায় কানাডিয়ান হাইকমিশন থেকে সাধারণ ডায়েরি করা হয়। তারপর হাইকমিশনের পক্ষে মানবাধিকার সংগঠন ব্লাস্ট, আইন ও সালিশ কেন্দ্র হাইকোর্টে রিট করে। ১৯ বছরের তরুণীর অসম্মতিতে তাকে ১০ মাস ধরে আটক রাখা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিল আদালত। আজ সেই রিটের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App