×

মুক্তচিন্তা

ভালো খবর আসে কী করে?

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২২, ০১:৫৯ এএম

আমাদের উন্নতির ইতিহাসের একটি অনুষঙ্গ হচ্ছে রাজনৈতিক দলে যেমন তেমনি সরকারি প্রতিষ্ঠানে দলগত বিভাজন এবং সঙ্গে সঙ্গে গণতন্ত্র সংরক্ষণের জন্য সাংবিধানিকভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর কার্যক্ষমতা ধারাবাহিক হরণ। পেশাজীবীদের সংগঠনগুলোও ইতোমধ্যেই বিভাজিত হয়ে গেছে। এবার টের পাওয়া গেল যে বিভাজন শিল্পীদের সংগঠন পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে; তবে তার ভিত্তি মোটেই রাজনৈতিক মতাদর্শ কিংবা রাজনৈতিক দলের প্রতি আনুগত্য নয়, ভিত্তি হচ্ছে স্বার্থ। গদি। নইলে চলচ্চিত্রশিল্পীদের সংস্থায় কেন বিভাজন দেখা দেবে? চলচ্চিত্রশিল্পের এখন যে অভূতপূর্ব দুঃসময় চলছে তার পরিপ্রেক্ষিতে শিল্পীদের সংগঠনের কাজ তো হওয়া উচিত একটাই; ধ্বংসের হাত থেকে শিল্পটিকে রক্ষা করা। ভালো চলচ্চিত্র যাতে তৈরি হয়, সিনেমা হলগুলো যাতে নিশ্চিহ্ন না হয়ে যায়, নতুন নতুন প্রেক্ষাগৃহ যাতে নির্মিত হয়, সেসবের জন্য পদক্ষেপ নেয়া। তা না করে নির্বাচনে কে হারলেন কে জিতলেন তাই নিয়ে চলছে অতিনাটকীয় ঝগড়া-ফ্যাসাদ, যা আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন ছিল নাটক ও নাট্যকর্মীদের স্বার্থ দেখবার জরুরি প্রতিষ্ঠান। এতকাল ঐক্যবদ্ধই ছিল, কিন্তু হালে সেখানেও ফাটল ধরার লক্ষণ বিলক্ষণ দেখা দিয়েছে। আদালত পাড়াতে কী ধরনের স্থূল দ্ব›দ্ব ও সংঘর্ষ চলছে তারও একটা আভাস পাওয়া গেছে সিরাজগঞ্জে, সেখানে দুপক্ষের মারামারিকে কেন্দ্র করে আদালতের এজলাসে তালা লাগিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটে গেছে। ঘটনা এই যে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের স্টেনোগ্রাফার ইউসুফ আলী সাহেব এডভোকেট আবুল কালাম সাহেবের কাছে ঘুষ দাবি করেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। অচিরেই সেটা মারামারিতে গড়ায়। পরের দিন ইউসুফ সাহেবের পক্ষের লোকজন বিভিন্ন অফিস কক্ষসহ আদালতের সব এজলাসে তালা ঝুলিয়ে দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে এডভোকেট সাহেবের লোকেরা স্টোনোগ্রাফার সাহেবের লোকদের শাস্তি দাবি করে মিছিল বের করেন এবং জেলা আইনজীবী সদস্যরা বিক্ষোভ মিছিল ও সংবাদ সম্মেলনে মিলিত হন। মীমাংসা নিশ্চয়ই একটা হয়েছে। কিন্তু ফাটলটা তো রয়ে গেল। আর সেটা যে এখন কোনো এক এলাকায় তা নয়, কোনো একটি পেশাতেও নয়, ফাটল ঘটেছে সর্বত্র। যেখানে এখনো ফাটল নেই সেখানেও অচিরেই দেখা দেবার অপেক্ষা। সর্বসাম্প্রতিক সময়ে একটি ফাটলের খবর এসেছে স্বাধীন দুর্নীতি কমিশনের কাছ থেকেই। অভিযোগটা কমিশনের ভেতরেই ভূত ঢোকার। একজন কর্মকর্তা পদচ্যুত হয়েছেন; নাকি প্রভাবশালী আমলা ও রাজনীতিকদের দুর্নীতির তদন্ত করতে গিয়ে। পদচ্যুতের সমর্থনে তার সহকর্মীরা মানববন্ধন করেছেন- ঢাকাতে এবং চট্টগ্রামে। ব্যাপার কতদূর গড়াবে কে জানে। ফাটল শুধু নয়, বিভাজনও দেখা দিয়েছে। দুর্নীতিদমন কমিশনে কর্মচারী এবং কর্মকর্তাদের ভেতর যে মতপার্থক্য ও বিরোধ প্রকাশ্যে চলে এসেছে তা একটি বিভাজনের প্রমাণ বটে। এ রকমের আরেকটি বিভাজন জনসমক্ষে চলে এসেছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় সৃষ্ট বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে, যে ঘটনার কথা ওপরে উল্লেখ করেছি। শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভের সঙ্গে উপাচার্যসহ শিক্ষকরা শুধু একাত্মতা ঘোষণা করেননি এতে যোগও দিয়েছেন। সবাই একপক্ষ হয়ে গেছেন। বিপরীত পক্ষে রয়েছে জেলা প্রশাসন, জেলা ছাত্রলীগ ও স্থানীয় কিছু লোকজন, যাদের মাইক ব্যবহার করে হামলা করতে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছিল। শিক্ষার্থীদের এক নম্বর দাবি অবশ্যই ধর্ষকদের গ্রেপ্তার, বিচার ও শাস্তি। কিন্তু তাদের দুই নম্বর দাবি হচ্ছে হামলাকারীদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থার। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে জেলা ছাত্রলীগকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে। তাদের তিন নম্বর দাবি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ। কারণ তারা স্থানীয় প্রশাসনের ওপর আস্থা হারিয়েছে। আস্থা হারানোর এ ব্যাপারটাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ শিক্ষক সমিতিও একমত। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলা অর্থহীন বলে তাদের সিদ্ধান্ত। বিভাজনটা কী তাহলে দাঁড়াচ্ছে শাসক ও শাসিতের? মনে হচ্ছে সে রকমেরই। এই বিভাজনটা একটি বাস্তবিক ও মৌলিক সত্য। কিন্তু তার প্রাতিষ্ঠানিক প্রকাশটা নিশ্চয়ই তাৎপর্যপূর্ণ। বলার অপেক্ষা রাখে না যে এই বিভাজন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিরোধ-বিভাজনের চেয়ে অনেক অনেক গভীরের ব্যাপার। আগামীতে এটি বাড়বে বলেই আমাদের ধারণা। গুম, ক্রসফায়ার, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড- এসবের অভিযোগ পুলিশ ও র‌্যাব উভয় বাহিনীর বিরুদ্ধেই রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বেশ স্পষ্টাস্পষ্টিই সেটা জানানো হয়েছে। র‌্যাবের সাতজন বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তারা নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছে। আমাদের সরকার অবশ্য যথারীতি অভিযোগ অস্বীকার করেছে, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র যে তাতে সাড়া দিচ্ছে এমন নয়, অনড়ই রয়েছে। এর পেছনে ভূরাজনৈতিক ব্যাপার থাকতে পারে, সরকারি মহল থেকে বলা হচ্ছে যে বাংলাদেশ যাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রবল ও প্রধান প্রতিদ্ব›দ্বী চীনের দিকে না ঝোঁকে সে-বিষয়ে সতর্কবাণী জানানোর জন্যই মানবাধিকার লঙ্ঘনের ওই অভিযোগগুলোকে অতটা গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এই বক্তব্যের পেছনে কিছুটা সত্য থাকা খুবই সম্ভব; কিন্তু তাই বলে মানুষ যে নিখোঁজ হয়ে যায় সেটা তো আর মিথ্যা নয়। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো তো তা জানাবার চেষ্টা করে। তারা সভা করে, সভায় কান্নাকাটির ঘটনা যে ঘটে না এমনও নয়। কিন্তু হারানো স্বজনরা ফেরত আসে না। দুয়েকজন যারা ফেরত আসেন তারাও মুখ খোলেন না। মনে হয় ভয় পান। সাগর ও রুনি যে নিহত হয়েছেন এটা তো কোনো বানানো গল্প নয়, সবাই জানে, ঘটনায় তদন্তের দাবি উচ্চকণ্ঠেই ও নানা মহল থেকে জানানো হয়েছে। দশ বছর পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে কিন্তু কই তদন্ত রিপোর্ট তো জমা পড়ল না। সময় চাওয়া হচ্ছে, সময় দেয়াও হচ্ছে, চাওয়া দেয়ার এই ব্যাপারটা মনে হয় গুনে গুনে সেঞ্চুরি করার দিকেই এগুচ্ছে। গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার ব্যাপারে পুলিশ বাহিনী একেবারেই নির্দোষ এমনটা দাবি করা হয়, প্রদীপ কুমারেরা নেই বলেই জানানো হয়; কিন্তু ঘটনা তো ঘটে। পুলিশ জড়িত নয় তা না হয় বুঝলাম, কিন্তু তাদের তো দায়িত্ব আছে। দায়িত্ব প্রথমত, ওই রকমের ঘটনা যাতে না ঘটে সেটা দেখা; দ্বিতীয়ত, ঘটনা ঘটলে মানুষগুলোকে উদ্ধার এবং দায়ীদের শাস্তি দেবার ব্যবস্থা গ্রহণ করা। পুলিশের কাজ তো মানুষকে নিরাপত্তা দেয়াই। তাদের বেতন-ভাতা, সুযোগ-সুবিধা সবই তো জনগণের টাকাতেই সম্ভব হয়; তাহলে? সরকারের পক্ষ থেকে এমনও বলা হয় যে গুম হয়ে যাওয়া লোকেরা ইচ্ছে করে লুকিয়ে থাকে। সেটা বুঝলাম, কিন্তু তাদের খুঁজে বের করে আনা তো পুলিশের গোয়েন্দাদের কর্তব্য; গোয়েন্দারা যে অদক্ষ এমন বদনাম কেউ করবে না। তাহলে? সম্প্রতি আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরেকটি নতুন এবং বেশ চাঞ্চল্যকর সংবাদ আমাদের দিয়েছেন; সেটা এই যে জাতিসংঘের সংস্থাগুলো যাদের ‘গুম’ বলছে তাদের অনেকেই নাকি আসলে পানিতে ডুবে মারা গেছে। এ তথ্য অন্যরা কতটা মেনে নেবে জানি না, না নেবারই কথা। বাম গণতান্ত্রিক জোট মেনে নেয়নি। তারা বলেছে, ‘খুবই নিষ্ঠুর, অশালীন ও চরম দায়িত্বহীনতার প্রকাশ এবং গুম হয়ে যাওয়া পরিবারগুলোর জন্য খুবই বেদনার ও কষ্টের।’ তাদের মতে, ওটি কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দেয়ার শামিল। [প্রথম আলো, ০৯-০২-২২] মনে হয় না তারা বাড়িয়ে বলেছে। তবে এটা অবশ্যই সত্য যে বহু মানুষ তথাকথিত অবৈধ উপায়ে বিদেশে যাবার চেষ্টাতে সমুদ্রের পানিতে ডুবে প্রাণ হারাচ্ছেন। অতিসাম্প্রতিক ঘটনা, লিবিয়া থেকে ইতালিতে যাবার জন্য রওনা হয়ে ঠাণ্ডায় জমে সাতজন বাংলাদেশি প্রাণ হারিয়েছেন। যে নৌকায় তারা যাচ্ছিলেন সেখানে অন্যদেশের মানুষও ছিলেন, কিন্তু অধিকাংশই ছিলেন বাংলাদেশি। এমন খবরও শোনা গেল যে নৌকার ওই যাত্রীদের ২৮৭ জনের ভেতর ১৭৩ জনই ছিলেন বাংলাদেশের নাগরিক। [কালের কণ্ঠ, ২৯-০২-২২] খবরে তো এটাও প্রকাশিত যে ইউরোপে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের ভেতর গত বছর প্রথম স্থানে ছিল বাংলাদেশি যুবকেরা। দরখাস্ত করেছিল ২০ হাজার জন। এই কথাটা তো সত্যি সত্যি কুৎসিত রকমের মিথ্যা এবং যারা যান ও যাবার চেষ্টা করেন তাদের জন্য অত্যন্ত অপমানজনক যে তারা ছুটছেন লোভের কারণে। লোভ নয়, ছুটছেন তারা জীবিকার খোঁজে। দেশে জীবিকার সংস্থান নেই, তাই বিদেশে ছোটে, পথিমধ্যে কেউ কেউ প্রাণ হারায়, যারা প্রাণে বাঁচে তারা অমানুষিক পরিশ্রম করে, যা উপার্জন হয় পারলে তার প্রায় সবটাই দেশে টাকা পাঠায়। সেই টাকা উৎপাদন খাতে যে বিনিয়োগ হবে এমন পরিবেশ পরিস্থিতি দেশে নেই, কিন্তু খুব ভালো সুযোগ আছে পাচার হওয়ার। সম্প্রতি-প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে অর্থনীতিবিদ মইনুল ইসলাম যথার্থই বলেছেন যে, পুঁজি পাচারকারীরা হচ্ছে দেশের জন্য ‘এক নম্বর দুশমন।’ [প্রথম আলো, ০৯.০২.২২]। কথা ছিল দেশের পুঁজি দেশেই বিনিয়োগ হবে। হচ্ছে না। বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করবার জন্য নানা ধরনের চেষ্টা চলছে; কিন্তু বিনিয়োগ আসছে না। যেখানে দেশি ধনীরাই বিনিয়োগবিমুখ এবং পুঁজি পাচারে উন্মুখ, সেখানে বিদেশি পুঁজি আসবে কোন ভরসায়? পুঁজি আর যাই হোক নির্বোধ নয়, নির্বোধ হলে সে বিশ্বজয় করতে পারত না। জানা গেল যে দেশি ব্যবসায়ীরা যাতে সহজে বিদেশে বিনিয়োগ করতে পারে তার জন্য বিধিমালা তৈরি হচ্ছে, একটা যুক্তি এই যে এতে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাচার বন্ধ হবে এবং বিদেশ থেকে মুনাফা আসার দরজাটা প্রশস্ত হয়ে যাবে। এমনটা হলে খুবই ভালো হতো; কিন্তু হবে বলে ভরসা করবার কারণ দেখি না। ধনী ব্যবসায়ীরা হঠাৎ করে এতটা দেশপ্রেমিক হয়ে যাবেন যে সযতেœ ও শুশ্রƒষায় গড়ে-ওঠা স্বভাবটা হঠাৎ করে বদলে ফেলবেন এমনটা ঘটবার তো কোনো কারণ ঘটেনি। ধনীদের বিদেশে বিনিয়োগ আগেও চলছিল, এখন সেটা সহজতর হবে, এই যা। আসল চাহিদাটা হচ্ছে দেশপ্রেমের, অর্থাৎ দেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসার, তার বৃদ্ধির তো কোনো লক্ষণ বা দৃষ্টান্ত দেখতে পাচ্ছি না। কেবল পুঁজি নয়, মেধাও পাচার হচ্ছে অবিরাম। আমরা সম্পদহারা হচ্ছি। উন্নতি ঘটছে, কিন্তু বিনিয়োগ বাড়ছে না। ফলে কর্মসংস্থানের বৃদ্ধি নেই। এটাই হচ্ছে প্রকৃত ঘটনা। উদরে স্ফীত কিন্তু হৃদযন্ত্রের কর্মকাণ্ডে দুর্বল- ব্যাপারটা এই রকমের। এটি নিশ্চয়ই ভালো খবর নয়, ব্যক্তির জন্য যেমন নয়, দেশের জন্যও তেমনি নয়। এমনিতেই বেকার সমস্যা ক্রমশ ভয়াবহ হয়ে উঠছিল। করোনা এসে তাকে এবারো ভয়ংকর করে দিয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়েরই এক পর্যালোচনা বলছে যে করোনাকালে ১৬ লাখ তরুণ কাজ হারিয়েছে, এবং ২ কোটি মানুষের আয় রোজগার কমে গেছে। [ডেইলি স্টার, ১০-০১-২২]। এটা অবশ্য কেবল বাংলাদেশের ব্যাপার নয়, বিশ্বময় একই ঘটনা দেখা গেছে; করোনা লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটিয়েছে, কিন্তু মুনাফা ঠিকই এনে দিয়েছে ধনীদের গৃহে। টিকা এবং ওষুধপত্র উদ্ভাবন করেছেন বিজ্ঞানীরা, মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছে ওষুধ কোম্পানির মালিকেরা। করোনাকালে বিশ্বের শীর্ষ দশজন ধনীর সবাই আরো বেশি ধনী হয়েছেন, কারো কারো স্ফীতি শতকরা একশ ভাগ, বেচারা বিল গেটস নানা ব্যক্তিগত অসুবিধার কারণে সুবিধা করতে পারেননি, তবু ঈশ্বরের কৃপায় তার স্ফীতিও শতকরা ৩০ ভাগ। এসব প্রতিবন্ধক ঠেলে ভালো খবর আসে কি করে? তাই বলে ভালো মানুষরা কি সংসারে নেই? অবশ্যই আছেন, প্রচুর পরিমাণেই রয়েছেন, নইলে জগৎ সংসার এখনো চলছে কীভাবে? কিন্তু তারা বিচ্ছিন্ন, তারা সংঘবদ্ধ নন, তাদের হাতে ক্ষমতা নেই। ব্যবস্থাটা তাদের পক্ষে নয়; তারা এর ভুক্তভোগী। আর এটা তো নিয়মের মধ্যেই পড়ে যে অশুভের দাপট বেশি দাঁড়াবে শুভের তুলনায়। আবার অশুভই সর্বাগ্রে দৃশ্যমান হয়।

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী : ইমেরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App