×

জাতীয়

সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয়া হচ্ছে: ফখরুল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২২, ০১:২৪ পিএম

সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয়া হচ্ছে: ফখরুল

সোমবার সকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ক্ষমতাসীন দল ও সরকারের দুর্নীতির তদন্তের দাবি জানিয়ে দুদককে চিঠি দেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: ভোরের কাগজ

সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ সোমবার (১১ এপ্রিল) সকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি জানান, বাংলাদেশের বর্তমান দুর্নীতির একটা মহোৎসব চলছে। আপনারা এখন সাহস করে অনেক কিছু লিখেছেন যার মাধ্যমে আমরা অনেক কিছু জানতে পারছি। আমরা দুর্নীতির বিষয়গুলো নিয়ে বিভিন্ন সময়ে কথা বলেছি। সরকারের এক উপদেষ্টা এবং মন্ত্রীর টেলিফোন কনভারসেশন, যেটা দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল, সেই কনভারসেশনে যে বিষয়গুলো ছিল আমরা সেটা জানতে চেয়েছিলাম- এর তদন্ত হয়েছে কিনা তাও জানতে চেয়েছিলাম। ফরিদপুরের অত্যন্ত স্পর্শকাতর একটি পরিবারের এক সদস্যকে দুই হাজার কোটি টাকা অর্থ পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, এ বিষয়গুলো ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে। আর কোনো কথাই হচ্ছে না এগুলো নিয়ে। আমরা দলের সর্বোচ্চ ফোরামে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমরা দুর্নীতির এ বিষয়গুলো নিয়ে আপাতত দুর্নীতি দমন কমিশনে চিঠি দেবো। সেই চিঠিতে তাদেরকে আমরা তদন্ত করার জন্য অনুরোধ করবো। এরপরে ধারাবাহিকভাবে প্রত্যেকটা ইস্যু যেটা আসছে সেটা আমরা জাতির কাছে তুলে ধরবো এবং একই সঙ্গে দুদকে পাঠাব।

দলের এ সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে সোমবার দুপুরে দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে চিঠি নিয়ে যাবেন বলে জানান বিএনপির মহাসচিব।

তিনি বলেন, আমরা আশা করব দুদকের শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং তারা আমরা দুর্নীতির যে বিষয়গুলো দিচ্ছি সেগুলোর ওপরে সুষ্ঠু তদন্ত করে তা জাতির সামনে তুলে ধরবেন এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ যে ব্যবস্থা আছে তা গ্রহণ করবেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, দুদক অত্যন্ত সেনসিটিভ ইস্যুগুলো নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আপনারা লক্ষ্য করেছে যে, দুর্নীতি দমন কমিশনে একটু যারা কাজ করতে চান, তাদের স্টাফ অর্থাৎ কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের বিরুদ্ধে দুদকই ব্যবস্থা নেয়। কিছুদিন আগে দেখেছেন যে, একজন কর্মকর্তা শরীফ সাহেবকে বদলি করা হয়েছে এবং পদাবনতি করা হয়েছে একটি বিশেষ দুর্নীতির মামলার তদন্ত করার কারণে।

তিনি আরও বলেন, আজকে পত্রিকায় আছে, দুর্নীতি দমন কমিশন তারা নিজেরাই দুর্নীতির যেসব বিষয়গুলো আসছে সেগুলো তদন্ত করে যে রিপোর্টগুলো আসছে সেগুলোর তারা আমলে নিচ্ছে না এবং সেগুলোকে তারা ধামাচাপা দিয়ে রাখার ব্যবস্থা করছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দুদকের বেশিরভাগ সরকারি আমলাকে নিয়োগ দেয়া হয় অথবা সাবেক আমলাদেরকে নিয়োগ দেয়া হয় তারা অত্যন্ত সচেতনভাবে চেষ্টা করেন যে, সরকারের উচ্চপদস্ত কর্মকর্তা অথবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত যাতে না হয় এবং দুর্নীতির মধ্যে তারা যেন না আসেন।

বাংলাদেশের যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে সেগুলোকে ধবংস করে ফেলার জন্য দুর্নীতি সবচেয়ে বড় ব্যাধি। এটা এখন ক্যান্সার আকারে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। কোথায় পাবেন না যে, ঘুষ দেয়া ছাড়া কোনো কাজ হবে না, কথা শুনবে না, আইন-আদালতে বিচার পাবে না এবং সবচেয়ে খারাপ অবস্থা হচ্ছে আদালতে, যেখানে সব হুকুমে কাজ হয় সেখানেও কোনো কাজ হয় না দুর্নীতি ছাড়া। এর কারণটা হচ্ছে সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে দুর্নীতিকে আজকে প্রশ্রয় দেয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, এ মুহুর্তে আমাদের শ্বেতপত্র প্রকাশের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা এখন দরকার নেই। তবে সেটা সক্রিয় আলোচনা ও বিবেচনার মধ্যে আছে।

সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু উপস্থিত ছিলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App