ঝিনাইগাতীতে ধর্ষকের পরিবারের মামলা আতঙ্কে ধর্ষিতার পরিবার
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২২, ০৩:১৮ পিএম
শুক্রবার শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে ধর্ষকের বিচার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবারের প্রতিনিধিরা। ছবি: ভোরের কাগজ
শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে উল্টো মিথ্যা মামলা আতঙ্কে স্কুলছাত্রী ধর্ষিতার পরিবার। ধর্ষকের বিচার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ধর্ষিতা স্কুলছাত্রীর ভুক্তভোগী পরিবার।
শুক্রবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে ঝিনাইগাতী উপজেলার পূর্ব ধানশাইল গ্রামে ধর্ষিতা স্কুলছাত্রীর বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে ধর্ষিতা পরিবারের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নাজমুল হোসেন রিপন।
তিনি বলেন, শ্রীবরদী উপজেলার চক কাউরিয়া গ্রামের প্রভাবশালী ফরহাদ আলীর ছেলে মাহামুদুল হাসান (২১) নানা প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ষষ্ঠ শ্রেণিপড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ধানশাইল গ্রামের একটি কলা বাগানে নিয়ে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে। এ সময় ধর্ষিতা স্কুলছাত্রীর ডাক চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এসে ধর্ষক মাহামুদুল হাসানকে আটক করে।
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ধর্ষক মাহমুদুল হাসানের পরিবারের লোকজন ধর্ষিতা স্কুলছাত্রীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনের মাধ্যমে ধর্ষণের ঘটনাটি মীমাংসা করাতে রাজি হন। কিন্তু স্কুলছাত্রী নাবালিকা হওয়া স্থানীয় নিকাহ রেজিস্ট্রার বিবাহ পড়াতে অসম্মতি প্রকাশ করেন। একপর্যায়ে উভয় পরিবারের সম্মতিক্রমে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি শেরপুরের একটি নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে মাহমুদুল ও স্কুলছাত্রীর বিবাহ দেয়া হয়।
এরপর মাহমুদুল হাসানকে নিয়ে ওই স্কুলছাত্রী আসে তার বাবার বাড়িতে। এদিকে মাহামুদুল হাসানের পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে আটকে রাখা হয়েছে মর্মে দাবি করে আদালতে ১০০ ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় বিচারক মাহামুদুল হাসানকে উদ্ধারের বিষয়ে ওয়ারেন্ট ইস্যু করে। উক্ত নির্দেশ বলে থানা পুলিশ মাহামুদুল হাসানকে উদ্ধার করে আদালতে পাঠানো হয়।
আদালত থেকে ছাড়া পেয়ে মাহামুদুল হাসান তার পরিবারের সঙ্গেই রয়েছে। ওই স্কুলছাত্রীকে তার পরিবার স্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকার করে আসছেন। পাশাপাশি ওই ধর্ষিতা স্কুলছাত্রী ও তার বাবা-মাকে আসামি করে আদালতে একটি প্রতারণা মামলা দায়ের করে। বর্তমানে মামলাটি তদন্তধীন রয়েছে।
অপরদিকে ধর্ষিতার পিতা বাদী হয়ে ধর্ষণের অভিযোগে গত ২০ মার্চ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মাহমুদুল হাসানসহ অজ্ঞাতনামা আরো একজনকে আসামি করে একটি দায়ের করেন।
মামলার আইনজীবী এএইচএম নূরে আলম হীরা জানান, নাবালিকা একটি মেয়েকে ধর্ষণের পর বিয়ের নামে প্রতারণা শুধুমাত্র। এফিডেভিট করা হয়েছে, যা কোনভাবেই আইনসিদ্ধ নয়। ওই ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নালিশী মামলা দায়েরের পর ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান ঘটনাটির তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কে নির্দেশ দিয়েছেন
এ ব্যাপারে জামালপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার এমএম সালাহউদ্দীন বলেন, ওই ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলছে। দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।