×

মুক্তচিন্তা

আসুন সোচ্চার হই অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২০২২, ১২:৫৫ এএম

বাংলাদেশে যে কোনো ইস্যু ভাইরাল হলে সেটা নিয়ে উত্তাল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। আমরা এসব কম-বেশি সবাই জানি। কিন্তু দুঃখ এবং আফসোস হয় তখন, যখন আমরা সেসব সমস্যা সমাধানে আওয়াজ তুলি না যেসব সমস্যা রোজ আমাদের পীড়া দেয়। এই যে ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে এটা নিয়ে কি কারো কোনো মাথাব্যথা আছে? আমরা নেতার কথা শুনে রাস্তায় নামছি, আর ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফিরে ভাত খাচ্ছি। এই চালের মূল্য কত কি খোঁজ রাখছি। তেলের মূল্য কত কি জানতে চেষ্টা করেছি? আসলে এসব নিয়ে কারো কোনো ভাবনাও নেই। অথচ দেশের মানুষের ওপর প্রতি বছরই এমন অন্যায় করে অসাধু ব্যবসায়ীরা। প্রতি বছর রমজান শুরুর আগেই অভিনব কারসাজি নিয়ে কতিপয় ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট বাজারে নামে। মাস পনেরো দিন আগে থেকেই অতি প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, অতি প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১০-৫০ টাকা। গত ১৫ দিনের ব্যবধানে মুদির দোকানে দাম বেড়েছে প্রায় প্রতিটি পণ্যের। অস্ট্রেলিয়ান উন্নতমানের ছোলা কেজিপ্রতি ১১৫ টাকায়, চিনি ৮০ টাকায়, মসুর ডাল (ছোট জাত) ১৪৫ টাকা ও বড় জাতের মসুর ডাল ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। মটর ডাল ৪৫ টাকা ও খেসারি ডালের দাম ১৩৫ টাকা। খোলা সয়াবিনের কেজি ১৫০ টাকা ও পলিব্যাগ কোম্পানি ভেদে বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪০ টাকার মধ্যে। বোতল জাত সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটার ১৬৮ টাকায়। আদা ৯৫ টাকা, আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা, চিনির দাম মণপ্রতি বেড়েছে ২০-৩০ টাকা, কেজিতে ৬৭ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খেজুর আরিচা ৪০০, বড়ই ৩৪০, জিয়াদা ২৪০ এবং সর্বনিম্ন ইরাকি খেজুর ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। একই দশা চালের বাজারে। মিনিকেট চাল কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে। মিনিকেট কেজিপ্রতি ৬০, মিনিকেট আতপ ৬০, মালা ৫৫, জিরা সিদ্ধ ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি ১০-১২ টাকা বেড়েছে। একটি জাতীয় পত্রিকার রিপোর্টে বলা হয়েছে, রোজার মাস সামনে রেখে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার পেছনে ১১টি কারণ খুঁজে পেয়েছে একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থা। কারণগুলো হচ্ছে প্রথাগত সরবরাহ প্রক্রিয়া, অতিরিক্ত মজুদের মাধ্যমে পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি, অপর্যাপ্ত ও সমন্বয়হীন বাজার মনিটরিং, রমজানে পণ্যের বাড়তি চাহিদা, পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি, যানজট ও অতিরিক্ত পরিবহন ব্যয়, অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি, স্বার্থান্বেষী মহলের অপতৎপরতা, ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর উচ্চ সুদের হার, ঋণপ্রাপ্তিতে জটিলতা এবং ব্যবসা পরিচালনায় ব্যয় বেড়ে যাওয়া। প্রতি বছর রমজানকে ঘিরে নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিতিশীলতা তৈরি করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। কিন্তু এভাবে আর কত? আসুন এই অসাধু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামি। এই ভোগ্যপণ্যের দাম কমিয়ে আনার জন্য যদি রাস্তায় নামতে হয় তবে সর্বস্তরের মানুষ রাস্তায় নামবে। এটা কোনো দলের জন্য নয়, এটা দেশের মানুষের জন্য। আসুন না এসব রাজনীতি বাদ দিয়ে একটু মানুষের কথা ভাবি। পেঠে ভাত না পড়লে তো রাস্তায়ও নামতে পারবেন না। তাই নড়বড়ে ইস্যু নিয়ে রাজপথ গরম না করে ভোগ্যপণ্যের দাম কমানোর জন্য সকলে সোচ্চার হই, আন্দোলন করি। আগে মানুষ, তারপর রাজনীতি। মানুষের জন্য কিছু করুন, তবে মানুষ আপনাদের জন্য কিছু করবে। সরকারের কাছে অনুরোধ দয়া করে রমজান মাসে বাজারের এই অস্থিরতা বন্ধ করতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। দেশের মানুষের সমস্যাকে গুরুত্ব দেয়া সরকারের প্রথম এবং প্রধান কাজ। সরকার এই সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসবে এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনবে সেই প্রত্যাশা রাখছি।

আজহার মাহমুদ : খুলশী-১, চট্টগ্রাম ৪২০২। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App