×

সম্পাদকীয়

গ্যাস ও পানির সংকট : নগরবাসীর দুর্ভোগ কতকাল?

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২২, ০১:৪০ এএম

রমজান মাসেও রাজধানীর বেশকিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে পানি ও গ্যাসের সংকট। গ্যাসের সংকটে পবিত্র রমজান মাসের ইফতার এবং সেহরিও তৈরি করতে পারছেন না মুসল্লিরা। একই অবস্থা পানিরও। দিনের বেলায় গোসল বা বাথরুমে যাওয়ার পানি থাকে না ওয়াসার লাইনে। পানিতে ময়লা ও দুর্গন্ধের অভিযোগ তো রয়েছেই। দূষিত পানির কারণে ভয়াবহ আকারে ধারণ করেছে ডায়রিয়া। গ্যাস ও পানি সংকটে দুর্ভোগে নাকাল নগরবাসী। নগরজীবনের এসব দুর্ভোগ কমাতে কর্তৃপক্ষের আশু পদক্ষেপ জরুরি। জানা গেছে, বন্ধ হয়ে গেছে বিবিয়ানা গ্যাস ক্ষেত্রের ছয়টি কূপ। গ্যাসের সঙ্গে বালু উত্তোলিত হওয়ার কারণে প্রথমে একটি কূপ থেকে উত্তোলন বন্ধ করা হলেও পরপর ৬টি কূপ বন্ধ করা হয়। ফলে ৬ কূপ থেকে ৭০ মিলিয়ন ঘনফুট করে মোট ৪২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হতে পারছে না শনিবার রাত থেকে। এতে রাজধানীসহ সারাদেশে তৈরি হয়েছে তীব্র গ্যাস সংকট। দেশের সব চেয়ে উৎপাদনশীল গ্যাস ক্ষেত্র বিবিয়ানায় একসঙ্গে ছয়টি কূপ বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়টিকে ‘বিরল ঘটনা’ হিসেবে উল্লেখ করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে রাজধানী ঢাকার বেশিরভাগ এলাকায়ই তৈরি হয়েছে তীব্র গ্যাস সংকট। রাজধানীর গ্রিন রোড, ক্রিসেন্ট রোড, সেন্ট্রাল রোড, ভূতের গ?লি, কাঁঠালবাগান, বাসাবো, সবুজবাগ এলাকায় গ্যাস সরবরাহে সমস্যা দেখা দেয়। নিভু নিভু করে জ্বলতে থা?কে চুলা। দুপুরের পর একেবা?রে বন্ধ হ?য়ে যায় গ্যাস। কো?নো কো?নো এলাকায় সামান্য পরিমাণ গ্যাস ?ছিল। কিন্তু সে আগুনে ইফতারি বানা?নো থে?কে শুরু ক?রে দৈন?ন্দিন বাসার কোনো রান্নাও করার মতো অবস্থা নেই। অনেকেই সিলিন্ডারের এলপিজি গ্যাস দিয়ে রান্নার কাজ করছেন। গ্যাস না পেলেও প্রতি মাসে গ্যাস বাবদ বিল তাদের গুনতে হচ্ছে ঠিকই। ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ বলছে, ঢাকায় বর্তমানে দৈনিক পানির চাহিদা রয়েছে ২৪০ কোটি লিটার। আর ওয়াসা উৎপাদন করছে ২৪৫ কোটি লিটার। চাহিদার চেয়েও সংস্থাটি ৫ কোটি লিটার পানি বেশি উৎপাদন করছে। সেই অনুযায়ী রাজধানীতে পানি সংকট থাকার কথা নয়, কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। পানিতে গন্ধ থাকায় তা পান করাও মুশকিল। গরমের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওয়াসার পানির সংকটও তীব্র হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। গরমে নগরবাসীর পানির চাহিদা বেড়ে যায় অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। ফলে চাপ বাড়ে এ খাতের ওপরই। সেজন্য গ্রীষ্ম মৌসুম সামনে রেখে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর উচিত সংকট লাঘবে পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ করা। সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে নগরবাসীর দুর্ভোগ লাঘব করা সম্ভব। সেবা সংস্থার কর্তৃপক্ষ বলছে, দ্রুত এসব সমস্যা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। এটাই নিয়ম হয়ে গেছে যে, কোনো সমস্যা তৈরি হওয়ার পরই কেবল তা সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হবে। স্বাভাবিক নিয়মে চাহিদা সামাল দেয়া ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয় না। বিদ্যুৎ ও পানির মতো জরুরি সেবাগুলোতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দরকার। আমরা জানি, এই সেবাগুলোতে আমাদের প্রচুর অপচয় ও সিস্টেম লস হয়ে থাকে। পানি ও গ্যাসের অপচয় এবং অবৈধ সংযোগ বন্ধের ব্যবস্থা নেয়া গেলে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নত হতে পারে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App