×

সারাদেশ

সুনামগঞ্জে ব্রি-২৮ ধানে ব্লাস্টের আক্রমণ, দিশেহারা কৃষক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ এপ্রিল ২০২২, ০১:০৩ পিএম

ব্রি-২৮ ধান হাওরের কৃষকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। বেশি ফলনশীল ও দ্রুত  কেটে তুলা যায় বলেই এই ধানের জনপ্রিয়তা বেশি। শান্তিগঞ্জে এবার আগাম জাতের এ উচ্চ ফলনশীল ব্রি-২৮ জাতের ধান চাষ করে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। ধানের নেক ব্লাস্ট (শীষ মরা) রোগের আক্রমণে তারা এখন দিশেহারা। অধিক খরচে আবাদ করে কৃষকের মাথায় এখন হাত পড়েছে।

অনেকেই এখন জমির ধান কেটে বাড়িতে আনতে চান না বলে জানিয়েছেন। ব্রি-২৮ জাতের ধানে চিটার পরিমাণ বেশি হওয়ায় খড় ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যাবে না বলে ধান কাটতে অনীহা কৃষকদের। তাদের দাবি শীষ মরা রোগে আক্রান্ত ধানের খড়ও গবাদিপশু খেতে চায় না।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন হাওর ঘুরে এবং কৃষকরা জানিয়েছেন, ব্রি-২৮ জাতের ধানের শীষ শুকিয়ে সাদা হয়ে চিটায় পরিণত হয়েছে। কৃষকদের মতে এ রোগের নাম ‘শীষ মরা’। আর কৃষি অফিসের মতে এটি ‘নেক ব্লাস্ট’ রোগ। এমন অবস্থায় কৃষকদের মাথায় এখন হাত। হাওরের কৃষকেরা সব সময়ই অকালবন্যার আতঙ্কে থাকেন। এ কারণে কৃষকেরা সাধারণ আগাম জাতের ধানের দিকে ঝুঁকে থাকেন। এ ক্ষেত্রে তাদের সামনে কয়েকটি দেশীয় জাতের ধান রয়েছে। কিন্তু এসব জাতের ধানের ফলন তুলনামূলক কম হয়। এ কারণে কৃষকেরা উচ্চফলনশীল জাতের ধান চাষ করে থাকেন। কিন্তু উচ্চফলনশীল জাতের বেশিরভাগ ধানই দেরিতে ঘরে ওঠে। তবে তুলনামূলকভাবে আগে ব্রি-২৮ ধান। ফলে উচ্চফলনশীল জাতগুলোর মধ্যে ব্রি-২৮-ই বেশি জনপ্রিয়। গত গত কয়েক বছর ধরে কৃষকেরা এ জাতের ধান চাষ করে যেমন ভালো ফলন পেয়ে আসছেন, তেমনি আগাম ঘরেও তুলতে পারছেন। কিন্তু এবার তারা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

কৃষক আলী হোসেন বলেন, দুই কেদারে লাগিয়েছিলাম ব্রি-২৮ ধান। এই দুই কেদার জমিতে ধান হয়নি বললেই চলে। বেশিরভাগ ধানে চালের বদলে ছোঁচা (চিটা) দেখা যাচ্ছে। ফলে ক্ষতি সম্মুখীন হয়েছি।

সাংহাই হাওরের কৃষক সইফুল মিয়া বলেন, ব্রি-২৮ ধান উচ্চফলনশীল ও আগাম জাতের। ফলে হাওর অঞ্চলে দ্রুত জনপ্রিয়তা পায় এই ধান। এবারে এ ধানে ফলন বিপর্যয় হওয়ায় কৃষকদের মাথায় হাত উঠছে।

ডুংরিয়া এলাকার কৃষক সাজ্জাদ মিয়া জানান, এক বিঘা ধান কেটে বাড়িতে নিয়েছি, এই ধানের খড় গরুও খেতে চায় না।

উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী এবার শান্তিগঞ্জ উপজেলায় মোট ২২ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। তার মধ্য দুই হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে ব্রি-২৮ আবাদ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শান্তিগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাজেদুর রহমান বলেন, এখন যে ব্রি-২৮ ধান চাষ হয় তা বহু পুরনো জাত। এই ধান আগাম চাষ করা, ঠাণ্ডাজনিত কারণ ও সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আমরা এ ধান চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করছি, কারণ এ পুরনো জাত না চাষ করে কৃষকরা যদি একই প্রকৃতির আরও বিভিন্ন জাতের উচ্চ ফলনশীল ধান চাষ করেন তাহলে লাভবান হবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App