×

সম্পাদকীয়

পানির যথাযথ ব্যবহারে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ এপ্রিল ২০২২, ১২:৩৮ এএম

পানির যথাযথ ব্যবহারে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পানির অপচয় রোধ করতে হবে। আমাদের যে পানিসম্পদ আছে, সেটার যতœ নিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ব্যবহার উপযোগী রাখতে হবে। পানিসম্পদ নষ্ট হয়ে গেলে কোনো সম্পদই থাকবে না। এজন্য পানির অপচয় রোধ ও পানির যতেœ সবাইকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। গতকাল সোমবার বিশ্ব পানি দিবস-২০২২ উপলক্ষে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ পরামর্শ দেন। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য খুবই সময়োপযোগী। প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে গুরুত্ব দিয়ে সংশ্লিষ্টদের যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। জানা গেছে, ঢাকায় বর্তমানে দৈনিক পানির চাহিদা ২৫০-২৫৫ কোটি লিটার। এর পুরোটাই সরবরাহ করে ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (ওয়াসা)। তবে বিভিন্ন ত্রæটি-বিচ্যুতি এবং অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার কারণে ঢাকা ওয়াসার সরবরাহ করা পানির একটা বড় অংশ অপচয় হয়ে যায়। সম্প্রতি প্রকাশিত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা ওয়াসার সরবরাহ করা পানির ৪০-৫০ শতাংশ পানিই অপচয় হয়ে যায়। এ হিসাবে বর্তমানে ঢাকায় প্রতিদিন ১০০-১২৫ কোটি লিটার পানি অপচয় হচ্ছে। রাজধানীতে ৫ হাজার বস্তিতে বসবাস করা প্রায় ৪০ লাখ মানুষ ওয়াসার অবৈধ সংযোগের পানি ব্যবহার করছে। অবৈধ সংযোগের মাধ্যমে ব্যবহার হওয়া বিপুল পরিমাণ পানি অপচয়ের তালিকায় চলে যাচ্ছে। এছাড়া নির্মাণ কাজ, গৃহস্থালি বা বাসার গাড়ি ধোয়ার কাজে প্রচুর পানি অপচয় আমরা লক্ষ্য করি। অবাক করার বিষয়। যেন দেখার কেউ নেই। প্রধানমন্ত্রী বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের কথা গুরুত্ব দিয়েছেন। পানির মৌলিক উৎসগুলোর মধ্যে বৃষ্টির পানি অন্যতম। সময় এসেছে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ ও সংরক্ষণের নীতিমালা, চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করার। পানি বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী চার দশকের মধ্যে আমাদের দেশের ভূগর্ভস্থ পানির পরিমাণ ভয়ংকরভাবে হ্রাস পাবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বারবার এ ব্যাপারে সতর্কবার্তা দিয়ে আসছেন। আমরা বিষয়গুলো আমলে নিচ্ছি না। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশে অঞ্চলভেদে এক হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়। উপকূল ও পাহাড়ি অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি। এসব অঞ্চলে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ সুফল দেবে। বাংলাদেশে গড়ে ২ হাজার ৪৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। প্রায় ২০ বছর আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটা নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। যাতে সরকারি ভবনগুলোতে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা রাখার কথা বলা হয়েছিল। ভূগর্ভে যেন বৃষ্টির পানি প্রবেশ করতে পারে সে জন্য পর্যাপ্ত উন্মুক্ত জায়গা রাখার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সে নির্দেশনা যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ প্রক্রিয়াটিও সহজ। বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করার পর তা পরিষ্কার করে ৬-৯ মাস মেয়াদে সহজেই সংরক্ষণ করা সম্ভব। যদি ৬ মাসের মধ্যে বৃষ্টি নাও হয় তাতে কোনো সমস্যা হবে না। কারণ বছরে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয় তা দিয়ে বাংলাদেশের সব চাহিদার অবসান ঘটানো সম্ভব। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণে আমাদের দেশে আইন রয়েছে। তার যথাযথ প্রয়োগ প্রয়োজন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App