×

সারাদেশ

নেত্রকোণায় পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে কয়েকশ একর হাওরের ফসল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২২, ০১:৪৪ পিএম

নেত্রকোণায় পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে কয়েকশ একর হাওরের ফসল

পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে জমি, কাঁচা ধানই কাটছেন কৃষকরা। ছবি: ভোরের কাগজ

নেত্রকোণা জেলার খালিয়াজুড়ি সদর ইউনিয়নের কয়েকটি হাওরের কয়েকশ একর জমির বোরো ধান তলিয়ে গেছে ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের পানিতে। অব্যাহতভাবে ঢলের পানি আসতে থাকলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এই উপজেলার ২১ হাজার হেক্টর জমির ফসলই তলিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন কৃষক ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা। পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ১০ সেন্টিমিটার। এ বিষয়ে খালিয়াজুরী কৃষি বিভাগ বলছে, ইতোমধ্যে ক্ষতি হয়েছে ১শ ১৩ হেক্টর জমির ধান। খালিয়াজুরী সদর ইউনিয়নের কীর্তনখোলা হাওর, চুনাই হাওর, বাদিয়ারচর হাওর, টাকটারের হাওর, মনিজান হাওর, লেবরিয়া হাওর, হেমনগর হাওর চাকুয়া ইউনিয়নের গঙ্গবদও হাওর, নয়াখাল হাওর, গাজীপুর ইউনিয়নের বাগানী হাওর ও ডাকাতখালি হাওরের সব ধান তলিয়ে গেছে। খালিয়াজুরী কৃষি কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ঢলের পানি প্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। পানির এমন প্রবাহ থাকলে সপ্তাহখানের মধ্যেই ফসল রক্ষা বাঁধ উপচে খালিয়াজুরী উপজেলার সমস্ত বোরো ফসল তলিয়ে যাবে। এ উপজেলায় এবার ২১ হাজার ১শ ২০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা। নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত জানান, ভারতের চেরাপুঞ্জি থেকে বৃষ্টির পানি বাংলাদেশের সুনামগঞ্জের যাদুকাটা ও সুরমা নদী দিয়ে খালিয়াজুড়ির ধনু নদীতে ঢল আকারে নামছে। ৩০ মার্চ থেকে ৩ এপ্রিল সন্ধ্যা পর্যন্ত ধনু নদীর পানি বেড়েছে পৌনে ৬ ফুট। এরমধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় বেড়েছে ৩ ফুট। তিনি আরো বলেন, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে আগামী কয়েকদিনও মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্ববাস রয়েছে। যদি সেখানে বৃষ্টি হয় তবে কয়েক দিনের মধ্যে সেই বৃষ্টির পানি এসে তা ধনু নদীতে বিপদসীমা অতিক্রম করবে। তিনি আরও বলেন, নেত্রকোণার হাওরে এবার ১৮৩ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। ২৩ কোটি ৬ লাখ টাকার ব্যয় বরাদ্দের এ বাঁধ মজবুত হলেও অতিরিক্ত পানি বেড়ে উপচে পড়লে হাওরের বোরো ফসল রক্ষা কঠিন হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান বলেন, নির্দিষ্ট একটি নিয়মের উচ্চতায় প্রতি বছর হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এবারও নিয়ম অনুযায়ী, বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এখন অতিরিক্ত মাত্রায় পানি বেড়ে গেলেও আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো বালু ভর্তি বস্তা দিয়ে পানি ঠেকিয়ে ফসল বাঁচাতে। আর ইতিমধ্যে যেসব কৃষকের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে সেসব ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা মাধ্যমে সহায়তা দেয়া হবে।এবার জেলায় ১ লাখ ৮৪ হাজার ৮ শ ২৮ হেক্টর জমিতে বোরো ফসলের চাষ করা হয়েছে। খালিয়াজুরী উপজেলা কৃষি অফিসার জসিম উদ্দিন জানান, আজ দুপুর পর্যন্ত ৫/৬ ইঞ্চি পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে। দখিনা বাতাসে হাওরের পানি ধীরে ধীরে ফুলে উঠছে।এপর্যন্ত ডুবে যাওয়া মোট বোরো ফসলের ২৫ শতাংশ ফসল কৃষকরা তুলতে পেরেছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App