×

সম্পাদকীয়

রমজানে অপরাধ দমন

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২২, ০৩:২৪ এএম

রমজান মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ইতোমধ্যে প্রশাসন নানা উদ্যোগের কথা ভাবছে। রোজা ও ঈদকে সামনে রেখে বিশেষ অভিযান পরিচালনার কথাও ভাবা হচ্ছে। বিশেষ করে রমজান মাসে রাজধানীতে ছিনতাইসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ে যায়। ছিনতাই, টানা পার্টি, অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টির দৌরাত্ম্য, জাল টাকার ছড়াছড়ি, ডাকাতি- এ ধরনের অপরাধের সংখ্যা বাড়বে বলে আশঙ্কা সাধারণ মানুষের। এমতাবস্থায় প্রশাসনের বিশেষ উদ্যোগ জরুরি। ছিনতাইয়ের ঘটনা প্রায়ই হচ্ছে। ডিএমপির অপরাধ বিভাগের তথ্যানুযায়ী, ২০২১ সালে ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা হয় ১৪৫টি, ২০২০ সালে ১৭৬টি, ২০১৯ সালে ১৫৫টি, ২০১৮ সালে ২১৬টি, ২০১৭ সালে ১০৩টি, ২০১৬ সালে ১৩২টি, ২০১৫ সালে ২০৫টি ও ২০১৪ সালে ২৬৫টি মামলা হয়। এ বছরের প্রথম তিন মাসেই রাজধানীর শতাধিক স্পটে ৪৬২টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। চলতি মার্চ মাসেই বেশ কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি মিরপুরে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে নিহত হন ‘গরিবের চিকিৎসক’ বুলবুল হোসেন। শুধু এ মাসেই নয়, গত ফেব্রুয়ারি মাসজুড়েই ঢাকা মহানগরীতে ছিনতাইয়ের আধিক্য দেখা যায়। ছুরি, চাপাতি কিংবা আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। এমনকি ছিনতাইয়ের ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ। ছিনতাই রোধে পুলিশ কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। যদিও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, অপরাধীদের গ্রেপ্তারে প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালিত হচ্ছে, অনেক চক্র ধরাও পড়ছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তাহলে প্রশাসনের এত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে কেন, তা একটি দুর্বোধ্য বিষয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির কথা বলে বেড়ালেও প্রকৃত অবস্থা যে ভিন্ন, বুলবুল হোসেন নিজের জীবন দিয়ে তা দেখিয়ে গেছেন আমাদের। শুধু কথায় ও বক্তৃতা-বিবৃতিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির কথা না বলে বাস্তবে তা দৃশ্যমান করে তোলার ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দায়িত্বশীল হতে হবে। পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে সহযোগী একটি পত্রিকায় প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর ১৪০টি স্পটে ছিনতাই নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। পুলিশ স্থানগুলো চিহ্নিত করতে পারলেও ছিনতাই ঠেকাতে পারছে না। মানুষের নির্বিঘেœ পথচলার অধিকার কেড়ে নিচ্ছে ছিনতাইকারীরা। বিশেষ করে ভোরে এবং সন্ধ্যার পর তাদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। জননিরাপত্তার স্বার্থে ছিনতাইকারীদের দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরো তৎপর হতে হবে। ছিনতাই চক্রকে ধরা ও জননিরাপত্তা রক্ষায় বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ, র‌্যাব ও অন্যান্য সংস্থার সমন্বিত পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়টি ভাবা যেতে পারে। ছিনতাই রোধে অবশ্যই ছিনতাইকারীদের ধরে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ছিনতাইকারীদের জামিনে বেরিয়ে এসে আবারো ছিনতাইয়ে জড়িত হওয়া খুবই উদ্বেগের। সহজে জামিনে বেরিয়ে এসে তারা যেন আবার এসব অপরাধে জড়াতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App