×

স্বাস্থ্য

বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস: কোন লক্ষণ দেখে সতর্ক হতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ এপ্রিল ২০২২, ০৯:১৯ এএম

বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস: কোন লক্ষণ দেখে সতর্ক হতে হবে

প্রতীকী ছবি

অটিজম মূলত অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার বা এএসডি নামে পরিচিত। এটি মানসিক রোগের এমন এক জটিল অবস্থা যাতে কথা বলতে, যোগাযোগ করতে এবং আচরণের ক্ষেত্রে একাধিক সমস্যা দেখা দেয়। অটিজমে আক্রান্ত ব্যক্তির পক্ষে শব্দ, অঙ্গভঙ্গি, মুখের অভিব্যক্তি ও স্পর্শের মাধ্যমে নিজের ভাব প্রকাশ করা কঠিন। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

পাশাপাশি বিভিন্ন নতুন জিনিস শেখার ক্ষেত্রেও সমস্যা হতে পারে। কখনও কখনও আক্রান্তের দক্ষতা অসমভাবে বিকশিত হয়। যেমন- কথোপকথনে সমস্যা হলেও সঙ্গীত, গণিত, স্মৃতি বা কোনো নির্দিষ্ট কাজে রোগী অস্বাভাবিক রকমের ভালো হতে পারে।

উপসর্গ

এ রোগের প্রাথমিক উপসর্গগুলো কী? কলকাতা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার (২ এপ্রিল) বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসে জানান, এক্ষেত্রে শিশুদের বৃদ্ধির একাধিক স্তর থাকে। দৈহিক বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক বৃদ্ধিও এমনই একটি স্তর। এসময় শিশু মাকে দেখে হাসে, কোনোকিছুর দিকে আকার ইঙ্গিতে নির্দেশ করে কিংবা শিশুর শব্দস্ফূরণ হয়। অর্থাৎ সমাজে চলতে শেখার শুরু হয়। এ প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন না হওয়াই অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডারের উপসর্গ। কারও সঙ্গে মেলামেশা না করা, অনেক খেলনার মধ্যেও শুধু একটি খেলনা নিয়ে খেলা, নতুন কিছুতে আগ্রহ না দেখানো, নাম ধরে ডাকলে সারা না দেয়া বা একটানা আপন মনে থাকার মতো উপসর্গ এ রোগের প্রাথমিক উপসর্গগুলোর মধ্যে অন্যতম।

কোন বয়সে সতর্ক থাকতে হবে

সৌরভ বলেন, সদ্যজাত অবস্থা থেকেই এ সমস্যা শুরু হতে পারে। তবে স্কুলে যাওয়ার আগেই মূল উপসর্গগুলো পরীক্ষা করা দরকার। আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব পেডিয়াট্রিক্স ১৬-২৪ মাস বয়সী শিশুদের বিশেষভাবে পরীক্ষার পরামর্শ দিচ্ছে। এ পরীক্ষা প্রাথমিকভাবে বাড়িতে মা-বাবাই করতে পারেন। বয়স অনুযায়ী শিশুর ব্যবহারে কোনো অসামঞ্জস্য দেখলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

তবে অনেক ক্ষেত্রে স্বাভাবিক শিশুদেরও বৃদ্ধি দেরিতে হতে পারে। এক্ষেত্রে অভিভাবকদের প্রতি সৌরভের পরামর্শ, সবচেয়ে সহজ উপায় হলো, পোলিও টিকার সঙ্গে যে কার্ড দেয়া হয় সেটি দেখা। টিকাকরণের কার্ডে একাধিক ভাষায় বয়স অনুযায়ী শিশুদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও প্রবৃত্তির উপসর্গ লেখা থাকে। এ ধাপগুলো মা-বাবা মিলিয়ে দেখতে পারেন। যদি কোনো গণ্ডগোল চোখে পড়ে, তবে দ্রুত চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

কাদের ঝুঁকি বেশি

পরিসংখ্যানগতভাবে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের মধ্যে অটিজম চারগুণ বেশি দেখা যায়। তবে যে কোনো জাতিগোষ্ঠী বা সামাজিক পটভূমির মানুষের মধ্যেই এ রোগ দেখা দিতে পারে। জীবনধারার সঙ্গে এর বিশেষ কোনো যোগ নেই। তবে পরিবারে এ রোগের ইতিহাস থাকলে এ রোগের ঝুঁকি বাড়ে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি বেশি বয়সে সন্তানধারণ করলে, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় অ্যালকোহল বা অ্যান্টি-সিজার জাতীয় ওষুধ খেলে অটিস্টিক শিশু জন্মানোর ঝুঁকি বেড়ে যায়। কিছু গবেষণায় ডায়েবেটিস, স্থূলতা, ফিনাইলকিটোনুরিয়া ও রুবেলা এ রোগের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিতে পারে বলে দাবি করা হলেও, এ বিষয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

চিকিৎসা

এখন পর্যন্ত অটিজমের বিশেষ কোনো প্রতিকার নেই। কিন্তু প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পরলে অটিজমে আক্রান্ত শিশুর বিকাশ সহজতর হতে পারে। তাই উপসর্গ দেখা গেলে যথাশীঘ্র চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিৎ। রোগীভেদে প্রয়োজনীয় ওষুধ ছাড়াও আচরণ ও যোগাযোগভিত্তিক বিভিন্ন থেরাপি, ইন্টিগ্রেশন থেরাপি, দৃশ্য-শ্রাব্য মাধ্যমের ব্যবহার ও সৃজনশীল নানা অভ্যাসের অনুশীলনের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়ে থাকে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App