×

সম্পাদকীয়

ফাইভজি তরঙ্গ বরাদ্দ : মানসম্মত সেবা ও সুলভ সাশ্রয়ী রেট নিশ্চিত করুন

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ এপ্রিল ২০২২, ০১:০৬ এএম

ফাইভজি তরঙ্গ বরাদ্দ : মানসম্মত সেবা ও সুলভ সাশ্রয়ী রেট নিশ্চিত করুন

পঞ্চম জেনারেশন ইন্টারনেটসেবা ফাইভজি যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। গত বৃহস্পতিবার দুটি ব্যান্ডের নিলামে দেশের ৪ মোবাইল অপারেটরের কাছে ১০ হাজার ৫৪৫ কোটি ৭০ হাজার টাকার তরঙ্গ বিক্রি করেছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। পর্যায়ক্রমে মোবাইল অপারেটরগুলো তাদের কার্যক্রম শুরু করবে। দেশের ইতিহাসে এবারই সবচেয়ে বেশি পরিমাণ তরঙ্গের নিলাম হলো, যেখানে ফোর-জির পাশাপাশি ফাইভজি নেটওয়ার্ক চালুর জন্য তরঙ্গ বিক্রি হলো। বর্তমানে দেশে ফোরজি সেবা চালু রয়েছে। ফাইভজি চালু হলে ইন্টারনেটের গতি কয়েকগুণ বেড়ে যাবে আশা করা হচ্ছে। দেশে ফাইভজি মোবাইল ফোনসেবা চালু হচ্ছে, এটি নিঃসন্দেহে একটি ভালো খবর। এর মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আরেক ধাপ এগোবে দেশ। তবে ফাইভজি নামে মাত্র চালুই যথেষ্ট হবে না, এই সেবা ঠিকঠাক মতো এবং সুলভে প্রাপ্তি নিশ্চিত করার চ্যালেঞ্জ নিতে হবে সংশ্লিষ্টদের। গত ১২ ডিসেম্বর রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল অপারেটর টেলিটকের মাধ্যমে দেশে ফাইভজি পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর, বাংলাদেশ সচিবালয়, সংসদ ভবন, সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও টুঙ্গিপাড়া- এই ৬ জায়গা ফাইভজি কভারেজের আওতায় আসছে। সারাদেশে এই সেবা চালু হলে ফোরজি প্রযুক্তির চেয়ে নেটওয়ার্ক সক্ষমতা বহুগুণ বেড়ে যাবে। বিশেষ করে চিকিৎসাসেবায় ব্যবহৃত শরীরে লাগানো ফিটনেস ডিভাইসগুলো নিখুঁত সময়ে সংকেত দিতে পারবে, জরুরি চিকিৎসা বার্তাও পাঠাতে পারবে। তবে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, দেশে মোবাইল ফোন অপারেটররা যেখানে থ্রিজি কিংবা ফোরজি সেবা ঠিকমতো দিতে পারছে না, সেখানে এই নতুন সেবা কতটা দিতে পারবে। বর্তমানে দেশে কোনো অপারেটরই গ্রাহকদের মানসম্পন্ন থ্রিজি সেবাও দিতে পারছে না। ফোরজি দূরের কথা। সাধারণভাবে এ সেবাগুলো সাশ্রয়ী হওয়ার কথা ছিল। এতদিন অপারেটরগুলো যে সেবা দিয়ে আসছে তা যথেষ্ট সাশ্রয়ী নয়। ৫০ শতাংশের অধিক গ্রাহক এখনো ফোরজির আওতার বাইরে। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, ফাইভজি চালুর সিদ্ধান্ত কতটা বাস্তবসম্মত। দেশে টুজি মোবাইল ফোন সেবার পরিবর্তে ২০১৩ সালে থ্রিজি সেবা চালু করা হয়। এরপর ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে চালু হয় ফোরজি সেবা। ফোরজি চালু হলেও সারাদেশে থ্রিজি সেবাই সঠিকভাবে নিশ্চিত হয়নি এখনো। ফাইভজির বেলায় কি একই অবস্থা হবে? এ রকম নানা প্রশ্ন গ্রাহকদের মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছে। আর এই নিম্নমানের সেবার কারণে সরকারও অপারেটরের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে, সেটাও আমাদের জানা নেই। অপারেটর কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগের যেন অন্ত নেই। অতিরিক্ত অর্থ কেটে নেয়া থেকে শুরু করে নানা অভিযোগ হরহামেশাই আসছে গণমাধ্যমে। মূলত নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্নতা, নিম্নমানের ভয়েস সেবা, কল ড্রপ, এসএমএস আদান-প্রদানে সময়ক্ষেপণ ও নানা প্রলোভন দেখিয়ে অতিরিক্ত অর্থ কেটে নেয়ার অভিযোগগুলোই বেশি। এমন অবস্থা কাম্য ছিল না। গ্রাহক স্বার্থরক্ষায় নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষকে আরো কঠোর হতে হবে। প্রয়োজনে অভিযোগের ধরন বিবেচনায় জরিমানাসহ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ফাইভজির মানসম্মত সেবা ও সুলভ সাশ্রয়ী রেট নিশ্চিত করতে হবে। গ্রাহক স্বার্থরক্ষায় বিটিআরসি আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন ও তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করবে- এমনটাই প্রত্যাশা করছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App