×

সারাদেশ

৫৭ বছরের জীবনে একদিনও মুখে তোলেননি ভাত!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২২, ১১:৪০ এএম

৫৭ বছরের জীবনে একদিনও মুখে তোলেননি ভাত!

৫৭ বছরের জীবনে একদিনও ভাত খাননি শ্যামপুর ইউ সি উচ্চ বিদ্যলয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আনারুল ইসলাম। ছবি: ভোরের কাগজ

জন্মের পর কোনোদিন ভাত খাননি এমন একজন মানুষের খোঁজ মিলেছে। তার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে। তিনি আনারুল ইসলাম। সম্প্রতি তিনি দাবি করেছেন, জন্মের পর কোনোদিন ভাত খাননি তিনি। এমনকি কেউ বসে ভাত খেলে তার পাশেও যান না তিনি। এমনকি কেউ দাওয়াত দিলে আগে থেকেই বলে দেন, তিনি ভাত খাবেন না।

আনারুল ইসলামের বর্তমান বয়স ৫৭ বছর। তার বাড়ি উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের শরৎনগর হাজিপাড়া গ্রামে। তিনি শ্যামপুর ইউসি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক। আজ শুক্রবার (১ এপ্রিল) সকালে সরেজমিন উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের শরৎনগর গ্রামে আনারুলের পরিবার সূত্র জানায়, ১৯৬৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন আনারুল ইসলাম। পড়াশোনা শেষ করে প্রথমে স্থানীয় একটি মাদরাসার শিক্ষকতা শুরু করেন। গত ছয় বছর ধরে শ্যামপুর ইউ সি উচ্চ বিদ্যলয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। জীবনসায়াহ্নে এসেও তিনি কোনোদিন ভাত খাননি। কোনো অনুষ্ঠানে গেলেও আগে জানিয়ে দেন তিনি ভাত খাবেন না। তার জন্য আলাদাভাবে রুটির ব্যবস্থা রাখতে হবে।

এ বিষয়ে আনারুল ইসলাম বলেন, জন্মের পর থেকে শেষবয়স পর্যন্ত ভাত খাইনি। ছোটবেলায় আত্মীয়স্বজনরা ভাত সামনে দিলেও খেতে মন চাইনি। তারপর থেকে আর ভাত খাওয়া হয়নি। এখন আমার বয়স প্রায় ৫৭ বছর। আমার তিনবেলার খাবারের পছন্দের তালিকায় রয়েছে রুটি, মাংস, আলু ভাজি, মিষ্টি ও পরোটা। এখনও আমার সামনে কেউ ভাত খেলে আমি সরে যাই।

শ্যামপুর ইউ সি উচ্চ বিদ্যলয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আল মামুন বলেন, এ স্কুলে আমি ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে পড়াশুনা শুরু করি। তখন থেকেই জানি আনারুল স্যার ভাত খান না। সারাবছর রুটি খেয়ে থাকেন তিনি। তাই স্যারকে সবাই ‘রুটি স্যার’ বলে চিনে।

আনারুল ইসলামের বড় ভাই হাবিবুর রহমান বলেন, ছোটবেলা থেকেই আনারুল ভাত খায় না। এমনিক তার সামনে ভাতের থালা দিলে রাগ করতো। একদিন মুখে ভাত দেয়ার পরে সে অচেতন হয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ পর আবার স্বাভাবিক হয়। সেই থেকে আমরা তাকে অন্য খাবার খাইয়ে বড় করেছি।

শ্যামপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, আমি অনেক আগে থেকে আনারুলকে চিনি। তিনি জন্মের পরে কোনোদিন ভাত খাননি। অন্য খাবার খেয়ে জীবনযাপন করেন। তবে আনারুল বেশি পছন্দ করেন রুটি। তিনবেলা তিনি রুটি খান।

এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. এস এম মাহমুদুর রশিদ বলেন, যদিও আমাদের দেশের মানুষ ভাত খায়। কিন্তু একজন মানুষ ভাত না খেয়েও অন্য খাবার খেয়ে বেঁচে থাকতে পারে সেটি আমার কাছে অদ্ভুত লাগছে। সম্ভবত ছোটবেলায় আনারুলের পরিবারের লোকজন তাকে সেভাবে ভাত খেতে জোরাজুরি করেনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App