×

সম্পাদকীয়

ভোজ্যতেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে আসুক

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২২, ০৫:৩৭ এএম

রমজানের আগে ভোজ্যতেলের দাম লাগামছাড়া উদ্বেগের। তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু কোনো সুফল আসছে না। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার অজুহাতে স্থানীয় বাজারে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে ভোজ্যতেল লিটারে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেশি নেয়া হয়। এ পরিস্থিতিতে বাজার অভিযানের পাশাপাশি ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর তেল সরবরাহ ও পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলোর কারখানা পরিদর্শন শুরু করে। পরিদর্শনে বেশ কিছু তথ্য অনিয়ম পাওয়া যায়। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের বাজারে ভোজ্যতেল আমদানিকারক ও পরিশোধনকারী ৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪টিকে তলব করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। তাদের জবাবে সন্তুষ্ট না হয়ে আগামী বুধবার আবারো শুনানিতে ডেকেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদা বছরে প্রায় ১৫ লাখ টন। এর মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ তেল আমদানি করতে হয়। কোম্পানিগুলো অপরিশোধিত ভোজ্যতেল আমদানি করার পর পরিশোধন করে তা বাজারজাত করে। এ কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়লে দেশের বাজারে সরাসরি প্রভাব পড়ে। জানা গেছে, বর্তমানে দেশে ভোজ্যতেলসহ কোনো পণ্যের ঘাটতি নেই। কিন্তু তারপরও সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে ভোজ্যতেল- এ প্রশ্ন সামনে আসছে। ভোজ্যতেলের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির পেছনে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজির প্রমাণ পেয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। শিগগিরই অভিযুক্ত ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করার কথা জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। রোজায় বাজার তদারকি শুরুর আগেই দ্রব্যমূল্য কয়েক দফা বাড়িয়ে দেয়ার এই কৌশল বিগত বছরগুলোতেও দেখা গেছে। রমজানের সময় ভোজ্যতেল ছাড়াও চিনি, ডাল, ছোলা, মসলা ইত্যাদি পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। ব্যবসায়ীরা মওকা বুঝে এ সময়টাতেই চাহিদাসম্পন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন। বড় থেকে ছোট ব্যবসায়ী সবার প্রবণতা এ সময় বেশি লাভ তুলে নেয়ার। এবারো সেই আলামত লক্ষ করা যাচ্ছে। চিনি, তেল, আদা, পেঁয়াজ ইত্যাদি নিত্যপণ্যের দাম গত এক সপ্তাহে বেড়েছে। তরিতরকারির দামও ঊর্ধ্বমুখী। লাফিয়ে লাফিয়ে ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধির ফলে চরম বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের খেটে-খাওয়া মানুষ। কিছুদিন আগেই জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। এতে জনজীবনে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন ব্যয় বাড়ছে, কিন্তু সে তুলনায় মানুষের আয় বাড়ছে না। বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে, যাতে বাজারকে অস্থিতিশীল করতে না পারে সেদিকে লক্ষ রাখার কথা জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। অবশ্য এসব তৎপরতা প্রতি বছরই দেখা যায়। রমজানে বেশি চাহিদাসম্পন্ন পণ্যের পর্যাপ্ত মজুত থাকার এবং যে কোনো মূল্যে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার ঘোষণা দেন বাণিজ্যমন্ত্রী। প্রতি বছর ভোজ্যতেল আমদানি বাবদ বিপুল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়। অথচ সরিষার তেল হতে পারে আমাদের অন্যতম বিকল্প ভোজ্যতেল। এদিকে সরকারের নজর দেয়া উচিত। রোজায় বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে পণ্য বিপণন, বাজার মনিটরিং ইত্যাদি যেসব পরিকল্পনা থাকে সেগুলো যেন যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। পণ্য পরিবহন নির্বিঘœ রাখতে বিশেষ করে কৃষিপণ্যের সরবরাহে যাতে কোনো বাধার সৃষ্টি হতে না পারে সেদিকে নজর রাখতে হবে সংশ্লিষ্টদের।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App