×

খেলা

চার উইকেট হারিয়ে ডারবানে ব্যাকফুটে টাইগাররা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২২, ০৯:৫৮ পিএম

চার উইকেট হারিয়ে ডারবানে ব্যাকফুটে টাইগাররা

সিমন হারমারের বলে আউট হয়ে হতাশ নাজমুল হোসেন শান্ত

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে শুক্রবার চার উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে টাইগাররা। ম্যাচের দ্বিতীয় দিন আজ সকালে ৬ উইকেট হাতে রেখে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৩৪ রান যোগ করতেই সবগুলো উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। তৃতীয় সেশন শেষ হওয়ার আগেই ব্যাট হাতে নামার সুযোগ পায় মুমিনুল বাহিনী। দিনের শেষ দিকে ৪৭ ওভার ব্যাট করে ৪ উইকেটের বিনিময়ে লাল সবুজের প্রতিনিধিদের সংগ্রহ মাত্র ৯৮ রান। এখনো ২৬৯ রানে পিছিয়ে রয়েছে রাসেল ডমিঙ্গোর শিষ্যরা। শনিবার দুপুর ২টায় ডারবানে তৃতীয় দিনে ব্যাটিংয়ে নামবে মাহমুদুল হাসান জয় ও তাসকিন আহমেদ। টাইাগারদের হয়ে ১৪১ বলে ৪৪ রানে অপরাজিত আছেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। প্রোটিয়াদের হয়ে সিমন হারমার একাই ৪১ রান দিয়ে পেয়েছেন ৪ উইকেট।

ডারবানে শুক্রবার দ্বিতীয় দিনের শুরুটা দারূণ হয়েছে টাইগারদের। নতুন বল পেয়ে টানা দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলেন খালেদ। তবে শেষ পর্যন্ত হ্যাটট্রিকের দেখা পাননি এই পেসার। ৯৮তম ওভারের শেষ বলে টেম্বা বাভুমাকে বোল্ড করে প্রোটিয়াদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি তুলে নিয়েছেন মেহেদি মিরাজ। এরপর ৯৯ ওভারের প্রথম বলে মহারাজকেও বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান এবাদত হোসেন। আরো একবার পরপর দুই বলে দুই উইকেট তুলে নেয় টাইগাররা। ১২১ তম ওভারের শেষ বলে মেহেদি হাসান মিরাজের বলে অলিভিয়ার ব্যক্তিগত ১২ রানে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হলে ৩৬৭ রানেই থেমে যায় প্রোটিয়াদের প্রথম ইনিংস। বাংলাদেশের হয়ে খালেদ আহমেদ ৯২ রানে নেন ৪ উইকেট । ক্যারিয়ারের আগের ৩ টেস্টে খালেদের উইকেট ছিল ১টি। ডারবান টেস্টের প্রথম ইনিংসে পেয়েছেন ৪ উইকেট। এছাড়া মেহেদী হাসান মিরাজ ৯৪ রানে ৩টি এবং এবাদত হোসেন ৮৬ রানে ২টি উইকেট লাভ করেন।

বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে গতকাল প্রথম দিন শেষে ৪ উইকেটের বিনিময়ে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ২৩৩ রান। প্রথম দিনের দ্বিতীয় সেশনে টাইগাররা ৩৩ রানের মধ্যে তুলে নেয় ৩ উইকেট। তৃতীয় সেশনেও একটি উইকেট তুলে নেয় টাইগাররা। আলোকস্বল্পতার কারণে দিনের ১৩.১ ওভার বাকি থাকতেই প্রথম দিনের খেলা শেষ করেন আম্পায়ার। প্রথম দিন শেষে ৭৬.৫ দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২৩৩ রান। ৬৪ বলে ২৭ রানে কাইল ভেরেন এবং ১১৯ বলে ৫৩ রানে অপরাজিত আছেন টেম্বা বাভুমা।

আগের দিন বাকি থাকা একটি বল করে দ্বিতীয় দিন শুরু করেন খালেদ। এরপর বাংলাদেশ অপেক্ষা করেছে নতুন বলের জন্য। ৮০ ওভার শেষে নতুন বল পেয়ে জ্বলে ওঠার ইঙ্গিত দেন পেসাররা। ৮৩তম ওভারে তাঁর দ্বিতীয় বলে খালেদের এলবিডব্লিউর শিকার হয়ে ২৮ রান করে সাজঘরে ফেরেন কাইল ভেরেন। সিমে পড়ে ভেতরে ঢোকা বলটা মাঠের আম্পায়র আউট দিলেও রিভিউ নেন ভেরেন। এরপর তৃতীয় আম্পায়ারও তাকে আউট দিলে প্রোটিয়াদের একটি রিভিউ নষ্ট হয়।এরপর খালেদের পরের বলেই নতুন ব্যাটার উইয়ান মোল্ডারও ফিরে যান ০ রানে। তার আউটসুইং ডেলিভারিটি ব্যাটের কানা ছুঁয়ে গালিতে দাঁড়ানো মাহমুদুল হাসানের হাতে ধরা পড়ে। বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে দারূণ এক ক্যাচ নেন মাহমুদুল। স্লিপে থাকা ফিল্ডারের ক্যাচটি ছিল দর্শনীয়। এরপর ৯৮ তম ওভারে প্রোটিয়াদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি নেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ৯৮ তম ওভারের শেষ বলে টেম্বা বাভুমাকে নার্ভাস নাইনটিতে ফেরান এই স্পিনার। ৯৩ রান করে মিরাজের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান বাভুমা। এরপর ৯৯তম ওভারের প্রথম বলেই আরো একটি উইকেট শিকার করেন পেসার এবাদত হোসেন। এবারও পরপর দুই বলে দুই উইকেট। বাভুমার আউট হওয়ার একবল পর কেশভ মহারাজও ১৯ রান করে এবাদতের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেন। এরপর স্কোরবোর্ডে ৬ রান যোগ করার পর প্রোটিয়ারা আরো একটি উইকেট হারাতে পারত। লিজাড উইলিয়ামস এবাদতের বলে এলবিডাব্লিউ হলে আম্পায়র আউটের সংকেত দেন। কিন্তু ব্যাটারের রিভিউয়ে আবার সিদ্ধান্তের পরিবর্তন আসে। জীবন পেয়ে নবম উইকেটে হার্মার ও উইলিয়ামস মিলে যোগ করেন ৩৪ রান। এরপর ১০৯তম ওভারে ব্যক্তিগত ১২ রান করে খালেদ আহমেদের চতুর্থ শিকার হন উইলিয়ামস। এবার আরো একবার স্লিপে দারুণ ক্যাচ ধরেন মাহমুদুল হাসান।

দশম উইকেটে ডুয়ান অলিভিয়ারকে নিয়ে ৩৫ রানের জুটি গড়েন হারমার। ১২১ তম ওভারের শেষ বলে মেহেদি হাসানের বলে অলিভিয়ার ব্যক্তিগত ১২ রানে এলবিডাব্লিউ হলে ৩৬৭ শেষ প্রোটিয়াদের প্রথম ইনিংস। ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন হার্মার।

নিজেদের প্রথম ইনংসে ব্যাট করতে নেমে আজ দলীয় ২৫ রানে প্রথম উইকেট হারিয়ে চা বিরতিতে যায় টাইগাররা। ৩৩ বলে ১টি বাউন্ডারিতে ৯ রান করে হারমাারের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন বাঁহাতি ওপেনার সাদমান ইসলাম। এরপর দ্বিতীয় উইকেটের জুঁটিতে জয়ের সঙ্গে দারুণ পার্টনারশিপের পথে এগিয়ে যাচ্ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। দলীয় ৮০ রানে হারমারের বলকে এক পা এগিয়ে ডিফেন্স করতে গিয়েছিরেন শান্ত। কিন্তু বল ফাঁকি দিয়ে স্টাম্পে আঘাত হানে। ২ ছক্কা ও ২ চারের সাহায্যে ব্যক্তিগত ৩৮ রানের ইনিংস এখানেই শেষ হয় তার। এরপর উইকেটে আসেন টাইগার অধিনায়ক মুমিনুল হক। তবে তিনি ফিরেছেন শূন্য রানেই। দ্বিতীয় উইকেটের পর তৃতীয় উইকেটে মুমিনুল হক আউট হয়েছিলেন দুই ওভার পরে। তবে মাঝখানে এই দুই ওভারে একটি রানও স্কোরবোর্ডে যোগ হয়নি। দ্বিতীয় দিন শেষ হতে মাত্র ২ ওভার বাকি ছিল। তখন আবারো টাইাগার শিবিরে আঘাত হানে সিমন হারমার। হারমারের ঘূর্নি মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে লেগে উইকেটরক্ষকের হাতে চলে যায়। প্রথমে আম্পায়ার প্রোটিয়াদের আবেদনে সাড়া না দিলেও পরবর্তীতে রিভিউ নিয়ে সফল হয় স্বাগতিকরা। এরপর নাইটম্যান হিসেবে উইকেটে আসেন তাসকিন আহমেদ। শেষ পর্যন্ত মাহমুদুল হাসান জয় ৪৪ ও তাসকিন আহমেদ ০ রানে অপরাজিত ছিলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App