যুক্তরাষ্ট্রে তিনতলা বাড়ির সন্ধান পাওয়ায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহা ও তার ভাই অনন্ত কুমার সিনহার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৫ মে দিন ধার্য করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) মামলাটির এজাহার আদালতে আসে। এরপর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ মামলাটির এজাহার গ্রহণ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এ দিন ধার্য করেন।

এর আগে এসকে সিনহা ও তার ভাই অনন্ত কুমার সিনহার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি করেন সংস্থাটির উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান। যুক্তরাষ্ট্রে তিনতলা বাড়ির সন্ধান পাওয়ায় মামলায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১২ জুন দুই লাখ ৮০ হাজার ডলারে (বাংলাদেশি টাকায় দুই কোটি ৪০ লাখ ৮০ হাজার টাকা) সিনহার জন্য তিনতলা একটি বাড়ি কেনেন তার ভাই অনন্ত কুমার। বাড়িটি কেনার আগে ৩০ বছরের কিস্তিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে অনন্ত নিজের জন্য এক লাখ ৮০ হাজার ডলার ব্যাংক ঋণ নিয়ে আরও একটি বাড়ি কিনেছিলেন। পেশায় দন্ত চিকিৎসক অনন্ত প্রথম বাড়িটি ৩০ বছরের কিস্তিতে কিনলেও নিজের ভাইয়ের জন্য বাড়ি কিনেছেন নগদ টাকায়।

আরও জানা যায়, ২০১৮ সালে অনন্ত কুমার সিনহা নিউজার্সির প্যাটারসনে অবস্থিত ভ্যালি ন্যাশনাল ব্যাংকের একটি হিসাবে ৫ মার্চ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত ৬০ হাজার ডলার জমা হয়। ওই একই হিসাবে অন্য একটি উৎস থেকে একই বছরের ১১ এপ্রিল থেকে ২০ জুন পর্যন্ত এক লাখ ৯৬ হাজার ৪৫৮ ডলার জমা হয়। এস কে সিনহার বাড়ি কেনার বা বিদেশে অর্থপাচারে বৈধ কোনো উৎসের সন্ধান পায়নি সংস্থাটি। দুদক সংশ্লিষ্ট সূত্র মনে করে এস কে সিনহা বিভিন্ন সময়ে ঘুষ হিসেবে যেসব টাকা গ্রহণ করেছেন তা বিদেশে পাচার করেছেন।

এদিকে গত বছরের ৭ অক্টোবর ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজউকের প্লট বরাদ্দ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এস কে সিনহার বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

এছাড়া গত বছরের ৯ নভেম্বর সাবেক ফারমার্স ব্যাংক (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) থেকে চার কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতি ও অর্থপাচারের মামলায় পৃথক দুই ধারায় এস কে সিনহাকে চার বছর এবং সাত বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত।