×

খেলা

প্রথম দিনেই দ. আফ্রিকার চার উইকেট তুলে নিল টাইগাররা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩১ মার্চ ২০২২, ০৯:৪০ পিএম

প্রথম দিনেই দ. আফ্রিকার চার উইকেট তুলে নিল টাইগাররা

মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে আনন্দে মতোয়ারা টাইগার অধিনায়ক মুমিনুল হক

বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট ম্যাচে বৃহস্পতিবার প্রথম দিন শেষে ৪ উইকেটের বিনিময়ে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ২৩৩ রান। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্ভুক্ত দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে ডারবানের কিংসমিডে টস জিতে ফিন্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল টাইগার অধিনায়ক মুমিনুল হক। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে দুই প্রোটিয়া ওপনারের দাপটে প্রথম সেশনে উইকেটের দেখা পায়নি। তবে দ্বিতীয় সেশনটা টাইগাররা নিজেদের দখলে রাখে। ৩৩ রানের মধ্যে তুলে নেয় ৩ উইকেট। তৃতীয় সেশনেও একটি উইকেট তুলে নেয় টাইগাররা। আলোকস্বল্পতার কারণে দিনের ১৩.১ ওভার বাকি থাকতেই প্রথম দিনের খেলা শেষ করেন আম্পায়ার। প্রথম দিন শেষে ৭৬.৫ দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২৩৩ রান। ৬৪ বলে ২৭ রানে কাইল ভেরেন এবং ১১৯ বলে ৫৩ রানে অপরাজিত আছেন টেম্বা বাভুমা।

প্রোটিয়াদের বিপক্ষে টস করতে নেমে নতুন এক মাইলফলক স্পর্শ করেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। দেশের সপ্তম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টের সাদা পোশাকে ৫০তম ম্যাচ খেলতে নেমেছেন এই ব্যাটসম্যান। দক্ষিণ আফ্রিকার টেম্বা বাভুমা ডারবানে নিজের ক্যারিয়ারের ৫০তম টেস্ট ম্যাচ খেলতে নামেন বৃহস্পতিবার। আফ্রিকার ২৪তম খেলোয়াড় হিসেবে এই মাইলফলকে পা রেখেছেন তিনি। দেখা পেয়েছেন ক্যারিয়ারের ১৮তম অর্ধশতকের। দীর্ঘদিন পর টেস্ট স্কোয়াডে ফিরে আসলেও পেটের পীড়ার জন্য প্রথম টেস্টের একাদশে নেই তামিম ইকবাল। এছাড়া পিঠের চোটের জন্য একাদশে নেই তরুণ পেসার শরিফুল ইসলামও। ইনজুরি কাটিয়ে টেস্ট একাদশে ফিরেছেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদুল হাসান জয়। সর্বশেষ নিউজিল্যান্ড সিরিজের মতো প্রোটিয়াদের মাটিতেও ৩ পেসার ও ১ স্পিনার নিয়ে একাদশ সাজিয়েছেন মুমিনুল হক।

টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো সূচনা করেছিলেন দুই উদ্বোধনী প্রোটিয়া ব্যাটার ডিন এলগার ও সারেল আরভিয়া। এই দুই ব্যাটারের পার্টনারশিপে ১১৩ রান যোগ হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোরবোর্ডে। প্রথম উইকেটে তাদের জুঁটির ও দলীয় অর্ধশত রান পূর্ণ হয়েছে মাত্র ৬৯ বলে। তবে এর আগেই অধিনায়ক ডিন এলগার তার ব্যক্তিগত ৫০ রান করেন মাত্র ৬০ বলে। ক্যারিয়ারে আরেকটি অর্ধশতক হাঁকানোর জন্য ৯টি চার মেরেছেন তিনি। ২৫ ওভার শেষে দলীয় ৯৫ রানে উইকেটশূন্য থেকেই মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় প্রোটিয়ারা। মধ্যাহ্ন বিরতি থেকে ফিরে এসে পরবর্তী দুই ওভারে মধ্যেই এই জুটির শতরানে দলীয় শতরান পূরণ হয়।

প্রথম সেশনে টাইগাররা কোন উইকেটের দেখা না পেলেও দ্বিতীয় সেশনে প্রোটিয়াদের ৩৩ রানের মধ্যেই তিনটি উইকেট তুলে নিয়ে দাপট দেখায় মিরাজ-খালিদরা। চা বিরতিতে যাওয়ার আগে ৩ উইকেটে ১৬৩ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। মধ্যাহ্নবিরতির পর টাইগার বোলাররা দারুণভাবে জ্বলে ওঠে। ইনিংসের ৩৪তম ওভারে অধিনায়ক এলগারকে সাজঘরে ফেরান খালেদ আহমেদ। ব্যক্তিগত ৬৭ রানে সেট হয়ে যাওয়া এই ব্যাটার লাফিয়ে ওঠা বলে হকচকিয়ে উইকেটের পেছনে দাড়িয়ে থাকা লিটন দাসকে ক্যাচ দেন। পরের ওভারেই আরেক ওপেনার সারেল এরউই আউট হয়েছেন ব্যক্তিগত ৪১ রানে। মেহেদি হাসান মিরাজের বল তার ব্যাটের কোণায় লেগে স্টাম্পে আঘাত হানে। অর্ধশতকের আক্ষেপ নিয়েই সাজঘরে ফিরতে হয়েছে তাকে। এর আগেও একবার ব্যক্তিগত ৩২ রানে মিরাজের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিলেও উইকেটরক্ষক লিটন দাস ঠিকমতো বলটা গ্লাভসে রাখতে না পারায় জীবন পান এরউই। তিন নামা ব্যাটার কিগান পিটারসেন রয়েছেন দারুণ ফর্মে। ভারতের বিপক্ষে জোহানেসবার্গ ও কেপটাউন টেস্টে চার ইনিংসে তিনটি অর্ধশতকের সাথে শতক পেয়েছেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সর্বশেষ ইনিংসেও। তাকে আউট করার দারুণ এক সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ। তাসকিন আহমেদের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন এই ব্যাটার। টাইগারদের আবেদন আম্পায়ার সাড়া না দিলে নিজেদের আবেদনে নিজেরাই আস্থা রাখতে না পেরে পরে আর রিভিউ নেননি। আর এতেই রক্ষা পেয়ে যান পিটারসেন। এরপর ইনিংসের ৪৬তম ওভারে দারুণ থ্রোতে পিটারসনকে রান আউটের ফাঁদে ফেলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তাসকিন আহমেদের বলে টেম্বা বাভুমা অফ সাইডে ঠেলে দিয়ে প্রান্ত বদল করতে শুরু করলেও পিটারসন আসার আগেই সরাসরি থ্রোতে স্টাম্প ভেঙ্গে দেন মিরাজ।

এরপর দলীয় ১৮০ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। এবাদত হোসেনের বলকে উঠিয়ে মারতে গিয়ে ৩০ গজেই ধরা পড়েন রায়ান রিকেল্টন। ব্যক্তিগত ২১ রানে মুমিনুল হকে হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।

বাংলাদেশের হয়ে একটি করে উইকেট পেয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ, খালিদ আহমেদ ও এবাদত হোসেন।

পরিসংখ্যানে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তেমন সুখকর স্মৃতি নেই টাইগারদের। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ১২ টেস্ট জয়ের কোনো রেকর্ড নেই বাংলাদেশের। দেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত ৬ ম্যাচের দুইটিতে ড্র করলেও প্রোটিয়াদের মাটিতে ৬ ম্যাচেই হেরেছে বাংলাদেশ। তন্মেধ্যে ৫টি ছিল ইনিংস ব্যবধানে হার। একটিতে ৩৩৩ রানের পরাজয়। তবে একই রকম পরিসংখ্যান ছিল ওয়ানডে ফরম্যাটেও। সম্প্রতি শেষ হওয়া প্রোটিয়াদের মাটিতেই ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। এই আত্মবিশ^াসই টেস্ট সিরিজের জন্য খেলোয়াড়দের একধাপ এগিয়ে নিয়ে এসেছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App