×

জাতীয়

‘বদলে যাওয়া কক্সবাজার’ উৎসব উদ্বোধন বৃহস্পতিবার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২২, ০৪:৩০ পিএম

‘বদলে যাওয়া কক্সবাজার’ উৎসব উদ্বোধন বৃহস্পতিবার

ফাইল ছবি

‘বদলে যাওয়া কক্সবাজার’ উৎসব উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
‘বদলে যাওয়া কক্সবাজার’ উৎসব উদ্বোধন বৃহস্পতিবার

ভিডিও কনফারেন্সে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

কক্সবাজারে আসছেন একাধিক মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী

জমকালো আয়োজনে থাকছে কনসার্ট, আতশবাজি

স্বপ্লোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সুপারিশ গেল বছরের ২৪ নভেম্বর জাতিসংঘে অনুমোদন পেয়েছে। ৫২ বছরের বাংলদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হচ্ছে। স্বাধীনতার পর অবকাঠামো ও বিনিয়োগে পিঁছিয়ে থাকা দক্ষিণ এশিয়ায় কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থান কক্সবাজারের চিত্রও এক দশকে পাল্টে গেছে।

সাগর ছোঁয়া রানওয়ে। মুক্তার রঙে ঝিনুকের মতো রেল স্টেশন। অর্থনীতির গেম চেঞ্জার গভীর সমুদ্রবন্দরসহ আরও কত কি! দেশের অন্যান্য স্থানের চেয়ে এ জেলার সামগ্রিক উন্নয়ন চোখে পড়ার মতো। ছোট-বড় ৭৭টি উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে এক লাখ কোটি টাকারও বেশি।

এই বদলে যাওয়া কক্সবাজারের সাফল্য তুলে ধরে বৃহস্পতিবার (৩১) মার্চ সৈকতের লাবণী পয়েন্টে দিনব্যাপি অনুষ্ঠিত হবে ‘উন্নয়নের নতুন জোয়ার, বদলে যাওয়া কক্সবাজার’ উৎসব। যেখানে তুলে ধরা হবে বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা সংগ্রাম, ঘুরে দাঁড়ানো বাংলাদেশের ইতিহাস। জমকালো উৎসবটি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এদিন সৈকতের অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত থাকবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। উৎসবটি আয়োজন করছেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অর্থনৈতিক বিভাগ। বাস্তবায়ন করছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।

এদিকে মহামারি কাটিয়ে চাঙ্গা পর্যটন শিল্প। প্রতিদিন ফেনিল সাগরের তীরে ভিড় করেন হাজার হাজার পর্যটক। এবার সৈকতে “উন্নয়নের নতুন জোয়ার, বদলে যাওয়া কক্সবাজার” উৎসবে লাখো মানুষের জমায়েত আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিন আল পারভেজ জানান, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অর্থনৈতিক বিভাগের তত্ত্বাবধানে উৎসবটি বাস্তবায়ন করছে জেলা প্রশাসন। উৎসবে লক্ষাধিক মানুষের জমায়েত হবে। এর বাইরে বেড়াতে আসা পর্যটকরা তো রয়েছেই। একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিকে সাজসজ্জা ও মঞ্চ তৈরির কাজ দেয়া হয়েছে। অনুষ্ঠান স্থলে চারটি স্টল বসানো হবে। যেখানে বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ, প্রধানমন্ত্রী ও কক্সবাজারের সামগ্রিক উন্নয়নচিত্র তুলে ধরা হবে।

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন প্রেরিত অনুষ্ঠানমালার সূচিতে এ উৎসবকে দুই পর্বে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম পর্ব অনুষ্ঠান সকাল ১০টায় শুরু হয়ে পর্যায়ক্রমে চলবে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত। এর মধ্যে রয়েছে, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, স্বাগত বক্তব্য, উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ বিষয়ে ডকুমেন্টরি প্রদর্শন।

সকাল সাড়ে ১০টায় কবিতা আবৃতি করবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহাম্মদ নুরুল হুদা। এরপর স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় দেশাত্ববোধক গান ও পল্লী সঙ্গীত, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে স্কুল শিক্ষার্থীদের সংলাপ, স্কুল শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

পরে স্কুল পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হবে। বেলা পৌনে একটায় স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায়। অতিথিদের আগমনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এরপর রয়েছে স্থানীয় শিশু শিল্পীদের অংশগ্রহণে সমবেত জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনা।

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিনের স্বাগত বক্তব্যের পর ‘জোরশে চলো বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হবে।

এরপর সন্ধ্যা ছয়টা ৫০ মিনিটে স্থানীয় উন্নয়নের উপর উপস্থাপনা। এতে বক্তব্য রাখবেন, ভুমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব ডা. আহমদ কায়কাউসের সঞ্চালনায় উন্নয়নের সুবিধাভোগীদের বক্তব্যের পর অনুষ্ঠানের সভাপতি অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মুস্তফা কামাল বক্তব্য রাখবেন। সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় প্রধানমন্ত্রীকে সম্মান জানিয়ে ‘ও জোনাকি’ গানের ভিডিওচিত্র চিত্রায়ন করা হবে। এরপর সাতটা ২০ মিনিটে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরপরই ‘একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার’ গানের সাথে দলীয় নৃত্য ও সৈকতের আকাশ রাঙানো হবে হরেক রঙের আতশবাজিতে। সবশেষে মঞ্চ মাতাবেন দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড ফুয়াদ অ্যান্ড ফ্রেন্ডস ও চিরকুট।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) সৈয়দ মুরাদ ইসলাম বলেন, সমুদ্র সৈকতে যেহেতু উৎসবটি হচ্ছে এতে অনেক পর্যটকের সমাগম হবে। এ জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশ, সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বীচ কর্মী মোতায়েন থাকবে। পাশাপাশি পর্যটন স্পটগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হবে।

প্রসঙ্গত, গেল বছরের ২৪ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ ৭৬তম বৈঠকের ৪০তম প্লেনারি সভায় বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সুপারিশ জাতিসংঘে অনুমোদন পায়। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে পরবর্তী ধাপে উত্তরণের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। উত্তরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ৫ বছর প্রস্তুতির সময় পেয়েছে। ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গণ্য হবে বাংলাদেশ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App