×

সম্পাদকীয়

খুন-খারাবি নিয়ন্ত্রণ জরুরি

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২২, ০১:৫২ এএম

খুন-খারাবি নিয়ন্ত্রণ জরুরি

রাজনৈতিক ও সামাজিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হরহামেশাই বড় ধরনের খুনের ঘটনা ঘটত। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এ ধরনের খুনের ঘটনা আগের তুলনায় কমে গেছে। বেড়ে গেছে বীভৎস, বিকৃত ও লোমহর্ষক খুনের ঘটনা। প্রতিদিনই এই ধরনের খুনের ঘটনা কোথাও না কোথাও ঘটছে। পাশাপাশি নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, অপহরণ, মাদক কারবার, অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য বাড়ছে। খুনের ঘটনার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে পুলিশ জানায়, ব্যক্তিগত বিরোধ, পারিবারিক কলহ, আর্থিক লেনদেন, মাদক, সামাজিক আধিপত্য নিয়ে বিরোধ, জমিজমা দখল এবং কোথাও কোথাও রাজনৈতিক কারণে এসব হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। সাধারণ মানুষের মাঝে বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। এসব কেবল আইনশৃঙ্খলার অবনতির দৃষ্টান্তই নয়, সামাজিক অসুস্থতারও লক্ষণ। রাজধানীতে হঠাৎ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সন্ত্রাসী ও ছিনতাইকারীরা। চলতি বছরের প্রথম ৮৫ দিনে ৩৪ জন খুন হয়েছেন। সর্বশেষ গত রবিবার ভোরে দুর্বৃত্তরা মিরপুরের শেওড়াপাড়ায় বুলবুল হোসেন নামের এক দন্ত চিকিৎসককে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। এর আগের দিন শনিবার সন্ধ্যায় সবুজবাগের বেগুনবাড়ীতে বাসায় ঢুকে শিশুসন্তানদের সামনে তানিয়া নামে এক গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে শাহজাহানপুরে ব্যস্ত সড়কে সন্ত্রাসীদের গুলিতে প্রাণ হারান মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরিন প্রীতি। এছাড়া সম্প্রতি দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে ছয় পুলিশ সদস্য আহত হন। ডিএমপির মাসিক অপরাধচিত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজধানীতে চলতি বছরের গত দুই মাস জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে খুনসহ নানা অপরাধে ৫ হাজার ২৩টি মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে ২১টি খুনের মামলা, সাতটি ডাকাতি, ২৬টি দস্যুতা, ২৬টি ছিনতাই ও চাঁদাবাজি, ধর্ষণসহ অন্যান্য নারী নির্যাতনের ৩১১টি মামলা, সাতটি অপহরণ, গাড়ি চুরিসহ অন্যান্য চুরির অভিযোগে ৩৪৫টি মামলা অন্যতম। সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, সামাজিক অস্থিরতা, পারিবারিক বন্ধন ছিন্ন হওয়া ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের কারণে এসব ঘটনা ঘটছে। ভোগবাদী হয়ে উঠছে মানুষ। কমছে মানুষের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধাবোধ। এ কারণে তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে একে অপরকে নৃশংস খুন করতে দ্বিধা করছে না। সাধারণভাবে এ ধরনের খুন-খারাবি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিই নির্দেশ করে। দেশে আইনের শাসন, অপরাধীর উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা বলবৎ থাকলে অপরাধ প্রবণতা নিয়ন্ত্রণে থাকারই কথা। আমাদের দেশে এ ক্ষেত্রে দুর্বলতা আছে তা স্বীকার করতেই হবে। অনেক আলোচিত, চাঞ্চল্যকর হত্যা-নির্যাতনের ঘটনা বিচারহীন থাকছে দিনের পর দিন। অপরাধীরা নানাভাবে প্রভাব খাটিয়ে লঘু দণ্ডে পার পেয়ে যেতে পারছে। নাগরিকদের রক্ষা করাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব। যে কোনো অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পর দ্রুত তার রহস্য উদ্ঘাটন করা এবং অপরাধীকে শাস্তির আওতায় আনার কোনো বিকল্প নেই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App