×

মুক্তচিন্তা

কুমিরা-গুপ্তছড়া নৌরুট উন্মুক্ত চাই

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২২, ০১:৩১ এএম

কুমিরা-গুপ্তছড়া নৌরুট উন্মুক্ত চাই
স›দ্বীপ থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম নৌপথ। ৭টি ফেরিঘাট থাকলেও সচল আছে কুমিরা-গুপ্তছড়া ঘাট। এই ঘাট দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করে হাজার হাজার মানুষ। যাতায়াতে ২০ মিনিটের পথ স্পিডবোট ভাড়া গুনতে হচ্ছে ২৫০ টাকা। যা পৃথিবীর আর কোথাও আছে বলে কারো জানা নেই। পূর্ব ঘোষণা ছাড়া গত ১ ফেব্রুয়ারি হঠাৎ ৫০ টাকা বৃদ্ধি করে ৩০০ টাকায় নিয়ে আসে স্পিডবোট ভাড়া। পরে সমালোচনার মুখে পড়ে ৭ ফেব্রুয়ারি আবারো ভাড়া ২৫০ টাকায় কমিয়ে আনে। ১ মাস যেতে না যেতে ১৫ মার্চ ঘাট ইজারাদার তার ফেসবুক পোস্টে স্পিডবোট ভাড়া পুনরায় ৩০০ টাকা করার ঘোষণা দেন জেলা পরিষদকে না জানিয়ে। যা ১৮ মার্চ থেকে কার্যকর হয়েছে। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, ২০১৩ সালে ঘাটের দায়িত্ব নেয়ার পর অকটেনের দাম ৬৯ থেকে বেড়ে ৯০ টাকা, ইয়ামাহা মবিল ২৫২ থেকে বেড়ে ৫৫২ টাকা এবং স্পিডবোটের যন্ত্রাংশের দাম বেড়ে যাওয়ায় ভাড়া বর্ধিত করা হয়েছে। এছাড়া তিনি উল্লেখ করেন লাশ পারাপার সম্পূর্ণ ফ্রি করে দিয়েছেন। যেটা আসলে সত্যি নয়। এখনো অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে লাশ পারাপার করতে হচ্ছে দ্বীপের বাসিন্দাদের। তিনি নতুন লাইফ জ্যাকেটের কথা বললেও পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেট না থাকায় সব যাত্রীকে এখনো দেয়া হয় না। জানা যায়, প্রতিদিন গড়ে ১০০-১৫০টি স্পিডবোট যাত্রী পারাপার করে থাকে। কমপক্ষে ১২ জন যাত্রী নিয়ে ১০০টি স্পিডবোট যাত্রী পারাপার করলে ঘাট ইজারাদার শুধু স্পিডবোট থেকেই দৈনিক ৩ লাখ টাকা আয় করছে। মোট এই আয় থেকে প্রতিদিন ৯০ হাজার টাকা জেলা পরিষদকে দেয়ার পর অন্যান্য খাতে সবমিলিয়ে প্রতিদিন ৬০ হাজার টাকা খরচ ধরলেও মালবাহী ট্রলার ও যাত্রীবাহী ট্রলারের আয় ছাড়া শুধু স্পিডবোট থেকেই প্রতিদিন প্রায় দেড় লাখ টাকা ইজারাদারের আয় থাকে। তবুও ইজারাদার বলছেন লস দিয়ে তাকে ঘাট চালাতে হয়। এদিকে যাত্রী হয়রানি তো আছেই। যাত্রীর সঙ্গে মালামালের ভাড়ার নেই কোনো নিয়ম। গত ২ মার্চ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবাসী দীর্ঘদিন কুয়েত থেকে আসার পর কুমিরা ঘাটে মালামালের টিকেটের হিসাব চাইলে টিকেট কাউন্টারের কর্মচারীরা কোনো উত্তর দিতে পারেনি। ফলে ওই প্রবাসীর ১৫-২০ কেজি ওজনের ৪টা ব্যাগের জন্য ৪টা টিকেটের মূল্য পরিশোধ করতে হয়েছে। পরে স্পিডবোটে আসার পর যখন স্পিডবোট চালককে জিজ্ঞাস করা হয় তাকে কয়টা টিকেটের হিসাব দেয়া হয়েছে? স্পিডবোট চালক উত্তর দেয় মালামালের ২টা টিকেটের হিসাব দিয়েছে। এর মানে ২টা টিকেটের মূল্য কাউন্টারের কর্মচারীরা নিজেদের পকেটে ঢুকিয়েছে। অলিউল করিম নামে একজন জানান, তার সঙ্গে ১টি ছোট বস্তা ও একটি কার্টুন যার ওজন ৪০ কেজি। এই দুটির জন্য তাকে তিনটি টিকেট নিতে হয়েছে। এভাবে চলছে যাত্রী হয়রানি। কেউ কিছু বলতে গেলে বা দুর্ভোগের ভিডিও ধারণ করতে গেলে তাকে নাজেহাল করে ঘাট কর্মচারীরা। দুজন নৌপরিবহনমন্ত্রী এর আগে নির্দেশ দিয়েছিলেন স্পিডবোটের ভাড়া ২০০ টাকায় রাখতে, কিন্তু কে শুনে কার কথা। ইজারাদারের এই বর্ধিত ভাড়া নিয়ে ক্ষুব্ধ সাধারণ যাত্রীরা। গত ২৫ মার্চ স›দ্বীপের তরুণরা অযৌক্তিক স্পিডবোট ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে ও ঘাট ইজারা উন্মুক্ত করে নিরাপদ নৌ যাতায়াতের দাবিতে মোটরসাইকেল র?্যালি করতে গেলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। দ্বীপের মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। তাদের দাবি ঘাট একক ইজারাদারের কাছে না রেখে উন্মুক্ত করে দেয়া হোক। কারণ ১৫০-২০০ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয় স্পিডবোট ভাড়া। ইজারাদার কেন যাত্রীদের দাবি মেনেও নিচ্ছেন না, আবার ঘাটও ছাড়ছেন না এটাই তাদের প্রশ্ন। জিসান মাহমুদ স›দ্বীপ, চট্টগ্রাম। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App