×

জাতীয়

শেষ হলো ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ’ ভাস্কর্য প্রদর্শনী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২২, ০৮:০৩ পিএম

শেষ হলো ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ’ ভাস্কর্য প্রদর্শনী
শেষ হলো ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ’ ভাস্কর্য প্রদর্শনী

চারুকলায় ভাস্কর্য প্রদর্শনীর সমাপনী দিন বৃহস্পতিবার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক, অন্যান্য অতিথি ও পুরস্কার জয়ী শিল্পীরা। ছবি: ভোরের কাগজ

শেষ হলো ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ’ ভাস্কর্য প্রদর্শনী

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক সপ্তাহব্যাপী বিশেষ ভাস্কর্য প্রদর্শনীর আয়োজনটি শেষ হয়েছে।

গত ১৮ মার্চ ৩৬টি ভাস্কর্য এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান ও শহরে স্থাপিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোকচিত্রী মোজ্জামেল হক টিটুর ৬০টি ভাস্কর্যের আলোকচিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারি ও উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে শুরু হয় এই প্রদর্শনী। আজ বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) সমাপনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শেষ হয় এই প্রদর্শনী।

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক। স্বাগত জানান ভাস্কর্য বিভাগের চেয়ারপরসন নাসিমা হক মিতু। ধন্যবাদ জানান চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন।

অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ভাস্কর্য চর্চায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ভাস্কর হামিদুজ্জামান খানকে স্মারক ও ১ লাখ টাকার রেপ্লিকা প্রদান করা হয়। এছাড়া, প্রদর্শিত ৩টি শিল্পকর্মকে পুরস্কৃত করা হয়। ‘জাতির জনক’ শীর্ষক আবক্ষ ভাস্কর্যের জন্য ইসমে আজম, পল্লব দত্ত ও শেখ সাহাবুদ্দিনকে যৌথভাবে প্রথম পুরস্কার দেওয়া হয়। ‘রক্তবর্ণ’ শীর্ষক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক স্থাপনা শিল্পের জন্য অমিয় শংকর দাসকে দ্বিতীয় পুরস্কার এবং ‘অভ্যন্তরীণ অর্জন’, শীর্ষক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ভাস্কর্যের জন্য রূপম রায়কে তৃতীয় পুরস্কার প্রদান করা হয়। পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে ক্রেস্ট, সনদ ও পঞ্চাশ হাজার টাকার চেক ও রেপ্লিকা প্রদান করা হয়।

[caption id="attachment_341609" align="alignnone" width="1080"] প্রদর্শনী ঘুরে দেখছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক[/caption]

সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক বলেন, এই ভাস্কর্য প্রদর্শনীর আয়োজনের মাধ্যমে চারুকলা অনুষদ তাদের নামের সাথে কাজের সমন্বয় ঘটিয়েছে। ভাস্কর্য হলো দেশের মূল্যবান স্থাপনা। একটি ভাস্কর্যের সাথে আবেগ জড়িত থাকে। দেশের অন্যান্য উন্নয়ন সময়ের সাথে তার গৌরব হারাতে থাকে কিন্তু ভাস্কর্য দেশের গৌরবকে ধারণ করে। সময়ের সাথে সাথে মানুষ ভাস্কর্যের তাৎপর্য বুঝতে শুরু করেছে যখন, তখন থেকে তারাও নিজেদের ঐতিহ্য সচেতনতায় সোচ্চার হয়েছে।

তিনি বলেন, যে সমস্ত ধর্ম ব্যবসায়ীরা মনে করে ভাস্কর্য আমাদের ধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক এবং ঐতিহ্যের সাথে যায় না, তারা আসলে জানেনা পৃথিবীর অনেক দেশেই ভাস্কর্য আছে। এমনকি তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, ইরাক, ইরানের মতো মুসলিম রাষ্ট্রেও ভাস্কর্যের সমাহার রয়েছে। মূলত দেশে যারা ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে কথা বলে তারা হলো সেসময়ের মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী অপশক্তি। তারা তখনও বিভিন্ন আজেবাজে মন্তব্য করত। এরা আজকেও তাদের স্বভাব নিয়ে বেঁচে আছে। যেমন কুকুর তেমন মূল্য তাদের দিলেই তারপর কাজের কাজ হবে। ভাস্কর্য নির্মাণে সাহসী ও সুন্দর উদ্যোগ গ্রহণে তিনি চারুকলা অনুষদ ও ভাস্কর্য বিভাগের সকলকে ধন্যবাদ জানান।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সরকার ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেন, আমাদের কাছে যখন এই ধরনের ভাস্কর্য প্রদর্শনীর একটি প্রস্তাব দেয়া হয় তখন সাথে সাথেই আমরা গ্রহণ করি, কেননা এটি জাতীয় প্রোগ্রামে আমাদের অংশগ্রহণের একটি বড় সুযোগ। এখানে ভাস্কর্যের যেই সংগ্রহ (কালেকশন) সেটি অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এই ভাস্কর্য প্রদর্শনী উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সমুচিত জবাব দেওয়ার শক্তিশালী উপায়।

সৃজনশীল কাজের বহিঃপ্রকাশ ঘটানোর মাধ্যমে উগ্রতার ও সাম্প্রদায়িকতার সমুচিত জবাব দেয়া সম্ভব। আমাদের আরো একটি বড় কাজ করার সুযোগ রয়েছে। সেটি হলো বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় যে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো বিশেষকরে ভাস্কর্য রয়েছে সেগুলোর একটি করে প্রতিকৃতি রেপ্লিকা তৈরি করে একটি জাদুঘরে সংরক্ষণ করা জরুরি। এ ব্যাপারে সরকার সহযোগিতা করলে বিশ্ববিদ্যালয় সেটির উদ্যোগ নেবে বলে জানান উপাচার্য।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App