×

অর্থনীতি

ব্যাংক খাত বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন হবে না : অর্থমন্ত্রী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২২, ০৬:৩৫ পিএম

ব্যাংক খাত বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন হবে না : অর্থমন্ত্রী

বৃহস্পতিবার সোনালী ব্যাংকের ৫০ বছরপূর্তি ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ছবি: ভোরের কাগজ

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে এ দেশের মানুষকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করার লক্ষ্যে ব্যাংকগুলোর সহযোগিতা লাগবে। সবার সহযোগিতায় এদেশ উন্নত হবে। দেশের অর্থনীতি ও ব্যাংকিং ব্যবস্থা ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। ব্যাংক খাত বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন হবে না। দেশের উন্নয়ন না হলে ব্যাংকগুলোও তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে পারবে না।

অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েই আমি ব্যাংকের ওপর নজর দেই। ব্যাংকগুলোকে বলেছি সরকারের অর্থসহায়তা যাতে নিতে না হয়। সে বিশ্বাস তারা রেখেছে, আমি ঠকিনি। আমি অনুরোধ করে বললাম, আর রিফাইন্যান্সিং নয়। নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে হবে। গত তিন বছরে শর্টফল ঘাটতি কাটাতে সরকারের ফান্ড থেকে অর্থসহায়তা দেয়া হয়নি। এরপরেও ব্যাংকগুলো ভালো জায়গায় আছে। ২০২১ সাল শেষে প্রায় সব ব্যাংক লাভে রয়েছে। এরপরে ব্যাংকগুলোকে বলা হলো, ঋনের সুদের হার কমাতে হবে। অনেক সমালোচনা হলেও ব্যাংকগুলো এটা বাস্তবায়ন করে। এতে করে ব্যাংকগুলো বরং লাভবান হয়েছে। কভিড অতিমারির সময়েও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ পরিশোধ করতে পেরেছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের ৫০ বছরপূর্তি ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের প্রথম অর্থ সচিব এম মতিউল ইসলাম, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, সাবেক গভর্নর ড. ফরাসউদ্দিন ও ড. আতিউর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্যাংকের সিইও ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আতাউর রহমান প্রধান। অনুষ্ঠানে সোনালি ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিংএর উদ্বোধন করা হয়।

সোনালী ব্যাংক নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, জনগণের আস্থার ঠিকানা সোনালী ব্যাংক, সে আস্থার জায়গাটি ধরে রাখতে হবে। আজকের এই দিনে সোনালী ব্যাংকের জন্ম। এ ব্যাংকের সঙ্গে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নাম জড়িয়ে আছে। সঙ্গত কারণেই সোনালী ব্যাংক জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসের ঠিকানা। ১৯৭২ সালে সোনালী ব্যাংক ২৪৬টি শাখা নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে ১২২৯টি শাখা নিয়ে দেশের জনগণকে সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশকে নিয়ে বলা হয়, অমাাদের মাথাপিছু জাতীয় আয় ৯০০ ডলারে পৌছাতে হলে ১২৫ বছর লাগবে। আমরা তাদের মন্তব্য মিথ্যা প্রমাণ করে মাত্র ৪০ বছরে ৯২৩ ডলার অতিক্রম করেছি। এখন আমরা পরবর্তী ১০ বছরে ২৫৯১ ডলারে পৌছে সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছি।

এ সময় তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের ১২ বছরে ব্যাংকিং খাতের অনেক সফলতা রয়েছে। এ সময়ে আমরা তফসিলি ব্যাংকগুলোর ঋণের সুদহার ১২ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে ৭ দশমিক ১ শতাংশের মধ্যে নিয়ে এসেছি। ২০০৫-২০০৬ সালে সারাদেশে ব্যাংকের শাখা ছিল ৬৪২৫ টি। বর্তমানে তা বেড়ে ১০ হাজার ৯৩৯টি। ২০০৬ সালে খেলাপি ঋণের হার ছিল ১৩ দশমিক ২%। বর্তমানে ৮ দশমিক ১ শতাংশ। এখানে উল্লেখ্য ২০০৬ সালে ঋণস্থিতির পরিমাণ ছিল ১লাখ ৫২ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে ১২ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা। আগে কৃষঋণ বছরে বিতরণ হতো ৬ হাজার ৯৩৭ কোটি টাকা। এখন তা ৪ গুণ বেড়ে ২৫ হাজার ৭১১ কোটিতে দাড়িয়েছে। সরকারের নতুন উদ্ভাবনের আওতায় মোবাইল ব্যাংকিং সুবিধার আওতায় এসেছে ১১ কোটি ৪৪ লাখ মানুষ। ২০০৬ সালে ব্যাংক খাতে মুনাফা ছিল ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। ২০২০ সালে বেড়ে ৫ হাজার ২৭৯ কোটি টাকায় দাড়িয়েছে। ২০২১ সালের প্রথম ছয় মাসেই মুনাফার পরিমাণ দাড়িয়েছে ৪ হাজার ১৪৬ কোটি টাকা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App