×

সম্পাদকীয়

পাহাড়ে রক্তপাত বন্ধ হবে কখন?

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২২, ১২:৫০ এএম

পাহাড়ে রক্তপাত বন্ধ হবে কখন?

পাহাড়ে বন্ধ হচ্ছে না রক্তপাত। প্রায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঝরছে তাজা প্রাণ। গত সোমবার সকালে পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির দুর্গম রাজস্থলীতে আঞ্চলিক সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) ও মগ লিবারেশন পার্টির (এমএলপি) দুই গ্রুপের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে চারজন নিহত হয়েছেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে সহিংসতা নতুন নয়। গত দেড় বছরে আঞ্চলিক দলগুলোর সংঘাতে সেখানে অর্ধশতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গত ২ ফেব্রুয়ারি বান্দরবানের রুমায় সেনাবাহিনী ও সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় একজন সেনা সদস্য ও তিন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। এ ঘটনার এক মাস পরই ৫ মার্চ বান্দরবানের রোয়াংছড়ি-রুমা সীমান্তের পালংক্ষ্যং এলাকায় দুই সশস্ত্র গ্রুপের গোলাগুলিতে নিহত চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এর সঙ্গে জড়িত মূলত জনসংহতি সমিতির দুটি অংশ এবং ইউপিডিএফ ও ইউপিডিএফ-গণতান্ত্রিক। পাহাড়ি অধিবাসীদের মধ্যেই এ পক্ষগুলোর কমবেশি সমর্থন রয়েছে। তারা কেউ পার্বত্য শান্তিচুক্তির পক্ষে, কেউ বিপক্ষে। আদিবাসী ও সেটলারদের মধ্যেও বিবাদ-সংঘাতের ঘটনা ঘটে। জানা যায়, সোমবারের ঘটনায় পাইন্দ পাড়ায় পাহাড়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জেএসএস ও এমএলপির সশস্ত্র সদস্যদের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ ঘটে। কিছুদিন পরপরই অশান্ত হয়ে উঠছে পার্বত্যাঞ্চল। রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলায় পাহাড়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ঘটছে প্রাণহানি। পার্বত্যাঞ্চলে পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন ও পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন আন্দোলনের নামে সক্রিয় আঞ্চলিক সংগঠনগুলো নিজেরাই পারস্পরিক দ্ব›েদ্ব লিপ্ত থাকছে সবসময়। আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিনিয়ত চলছে বন্দুকযুদ্ধ ও অপহরণের ঘটনা। আমরা চাই না, দেশবাসী কেউ চাইবে না- দেশের অঞ্চলবিশেষে অবিরাম রক্ত ঝরুক, লাশ পড়ুক, মায়ের বুক খালি হোক, গৃহিণী সঙ্গীহারা হোক, সন্তান পিতৃহারা হোক। সভ্য সমাজে এমনটিই কাম্য। আর এ কারণেই আমাদের আহ্বান : পাহাড়ে রক্তপাত বন্ধের স্থায়ী ব্যবস্থায় সরকার নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে আসুক। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ঐকমত্যের সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির আওতায় সে সময়কার বিচ্ছিন্নতাবাদী শান্তি বাহিনীর ২ হাজার সশস্ত্র কর্মী অস্ত্র সমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। অবসান ঘটে অব্যাহত রক্তপাতের। দুঃখজনক ব্যাপার, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এখনো এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের দিকে সবসময় বন্দুক তাক করে থাকছে। প্রায়ই শোনা যাচ্ছে পাহাড়ি জনপদে অপহরণ, রক্তাক্ত সংঘর্ষ, জমি দখলের খবর। পার্বত্যাঞ্চলে শান্তি বজায় রাখতে সরকারকে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। আঞ্চলিক গ্রুপগুলোর সন্ত্রাসী তৎপরতা নিয়ন্ত্রণ করে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দিতে হবে। পার্বত্য শান্তিচুক্তির বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করে এর সুফল দৃশ্যমান করতে হবে পার্বত্যবাসীর কাছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App