×

জাতীয়

আজ থেকে শতভাগ বিদ্যুতায়নের মাইলফলকে বাংলাদেশ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২২, ১২:০১ এএম

আজ থেকে শতভাগ বিদ্যুতায়নের মাইলফলকে বাংলাদেশ

ফাইল ছবি

এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে আজ রবিবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সশরীরে উপস্থিত থেকে দেশের সর্ববৃহৎ এই বিদ্যুতকেন্দ্র উদ্বোধন করবেন। এরপর সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন তিনি। এই সমাবেশ থেকেই দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও সচিব, চীনা রাষ্ট্রদূত, বিসিপিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতারা উপস্থিত থাকবেন।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে বিদ্যুৎকেন্দ্র ও আশপাশের এলাকায় এখন সাজ সাজ রব। রংবেরঙের আল্পনা দিয়ে সাজানো হয়েছে জেলেদের মাছ ধরার ২২০টি নৌকা, যেগুলো উদ্বোধন স্থলের পাশে রাবনাবাদ নদীতে ভাসবে। প্রতিটি নৌকায় রংবেরঙের পোশাকে থাকা পাঁচজন জেলে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন। প্রধানমন্ত্রী আগমন উপলক্ষে কঠোর নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা হয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৪ সালে বাংলাদেশ নর্থওয়েস্ট পাওয়ার কোম্পানি ও চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট এন্ড এক্সপোর্ট করপোরশনের (সিএমসি) মধ্যে দুটি ইউনিট থেকে মোট ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি হয়। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার ধানখালীতে কয়লাভিত্তিক এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিটের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে বেশ কিছু দিন আগে। প্রথম ইউনিটটি ২০২০ সালের ১৫ মে প্রথম উৎপাদনে আসে। ওই বছরের ডিসেম্বর মাসে দ্বিতীয় ইউনিটের নির্মাণকাজও শেষ হয়। কিন্তু গোপালগঞ্জ সাবস্টেশনের ধারণ ক্ষমতা কম থাকায় এবং গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকার আমিনবাজার পর্যন্ত সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ না হওয়ায় দ্বিতীয় ইউনিটের ৬৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এখনো জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়নি। এগুলোর কাজ এখনো চলছে। আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে দ্বিতীয় ইউনিট থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ যুক্ত হবে।

পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প পরিচালক শাহ গোলাম মাওলা জানান, পায়রা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র দক্ষিণাঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে সবচেয়ে বড় অবদান রাখবে। ১ হাজার একর জমির ওপর নির্মিত কয়লাভিত্তিক এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার। তবে পুরো টাকা খরচ হয়নি। ১শ মিলিয়ন ডলারের মতো সাশ্রয় হয়েছে। পরিবেশবান্ধব এই কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতিদিন ১৩ হাজার টন কয়লার প্রয়োজন হবে। এখন দ্বিতীয় ফেইজের নির্মাণকাজ চলছে। আগামী ২০২৪ সালের ডিসেম্বর নাগাদ নির্মাণকাজ শেষ হলে এই প্রকল্প থেকে মোট ২ হাজার ৬৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে বিদ্যুৎকেন্দ্র ও আশপাশের এলাকা সাজানো হচ্ছে নতুন সাজে। কুয়াকাটা মৎস্যজীবী সংগঠন আশার আলো সমবায় সমিতির সভাপতি নিজাম শেখ বলেন, দক্ষিণবঙ্গের উন্নয়নের রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কলাপাড়ায় আসছেন, এর থেকে সুখবর আর কী হতে পারে। আমাদের বেড়ে ওঠা জেলেপল্লীতে। নৌকা আমাদের জীবনেরই একটি অংশ। তাই প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে ২২০টি নৌকাকে রংবেরঙের ডিজাইন করে সাজানো হয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নের নজীবপুর গ্রামের আন্ধারমানিক নদীর তীরে বরিশাল চারুকলা বিদ্যালয়ের ১০ জন শিল্পী এ নৌকাগুলোকে প্রস্তুত করেছেন। এগুলো বিদ্যুৎকেন্দ্রের জেটি সংলগ্ন রাবনাবাদ নদীতে বিভিন্ন স্লোগান, প্লেকার্ড, ফেস্টুন দিয়ে সুসজ্জিত অবস্থায় সারিবদ্ধভাবে থাকবে। যাতে প্রধানমন্ত্রী কলাপাড়া, কুয়াকাটা ও উপকূলীয় জেলেদের কথা ভুলে না যান।

পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন সাংবাদিকদের জানান, শুধু পায়রা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রই নয়, দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। তার আগমনকে ঘিরে ইতোমধ্যে আমরা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে নিরাপত্তা পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। এই নিরাপত্তার মধ্যে কোভিড প্রটোকলও রয়েছে। এরই মধ্যে চার স্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তা গড়ে তোলা হয়েছে। এছাড়া সাদাপোশাকেও কঠোর নজরদারি করা হচ্ছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App