বিএনপির দুঃসময় চলে গেছে তা নয় বর্তমান নিজেদের সময় তার চেয়ে বড় দুঃসময় বলে কিছু নেই এমনটাই দাবি করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। আজ বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

দলটির সাবেক মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে বিএনপি।

দলের দুঃসময় চলছে মন্তব্য করে গয়েশ্বর রায় বলেন, রাষ্ট্র যতদিন আছে ষড়যন্ত্র ততদিন থাকবে। রাজনীতির যতদিন থাকবে ততদিন ষড়যন্ত্র থাকবে। আমাদের নেত্রী যেহেতু ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সব সময় ঊর্ধ্বে রাখতে চান সে জন্য তার দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হবে সেটাই স্বাভাবিক।

নিজ দলের নেতাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, দলে ভালো মন্দ লোক থাকবে সেটা যেমন ঠিক আছে, তেমনই ভালো কাজটা ভালো লোকদের দিয়ে করাটাও উচিত। সব কথা সবাইকে নিয়ে বলা যায় না। কেন আমরা দলের নিবেদিত কর্মীদের মূল্যায়ন করতে পারিনা?

খন্দকার দেলোয়ার হোসেনকে মূল্যায়ন করে করতে গিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, খন্দকার দেলোয়ার একমাত্র ভাগ্যবান ব্যক্তি যার মৃত্যুর পর প্রতিটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে, তার কফিনে ফুল দেয়া হয়েছে, এমনকি আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগও তার জন্য শোক বার্তা পাঠিয়েছে- এটাই তার সবচেয়ে বড় অর্জন। তবে তার যতটুকু সম্মান পাওয়ার কথা ছিলো জনগণ দিলেও দল থাকে দেয়া হয়নি।

দলটির প্রয়াত নেতা মওদুদ আহমদের সমালোচনায় গয়েশ্বর বলেন, কথাটা শুনতে খারাপ লাগলেও বলতে হয় ব্যারিস্টার মওদুদের রাজনীতিতে অবদান আছে, পাশাপাশি দলের বিপরীতে দাঁড়ানোর রেওয়াজও আছে। তার একটা রাজনৈতিক বর্ণাঢ্য জীবন তিনি সব সময় স্রোতের অনুকূলে থাকতে চেষ্টা করতেন, প্রতিকুলতাকে খুব একটা দেখা যায়নি।

দলের দুঃসময়ে ও দলের সুসময় থাকা সবাই যেখানে সমান সেখানে কাউকে ছোট বড় করে তুলনা করার প্রয়োজন নাই। আমরা সবসময় যেমন ভালো লোক নিয়ে চলতে পারি না। দলের নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করতে পারি না।

তিনি বলেন, ৪০ বছর লড়াই-সংগ্রাম করে এখনো বন্দি আছেন আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া তিনি মুক্ত নন তাই আমরা এত কৃতিত্বের দাবিদার হয় কি করে যে আমাদের নেত্রী মুক্ত করতে পারি না।

গয়েশ্বর বলেন, যে দেশের আদালত শেখ হাসিনার কথায় চলে, যে দেশের বিচারকরা শেখ হাসিনার নাম শুনলে আতঙ্কে ভুগে সেই দেশে বিচার পাব কোথা থেকে? আমাদের জন্য অবিচারই নির্ধারিত। এই নির্ধারিত অবিচার দূর করতে হলে আমাদেরকে দেলোয়ার হোসেন বৃদ্ধ বয়সে দেশের প্রতি দলের প্রতি যা করে দেখিয়েছেন সেটা অনুসরণ করে সামনে অগ্রসর হতে হবে, তবেই দেশ ও জনগণকে মুক্ত করা যাবে।

দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ বিএনপির অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।