×

সম্পাদকীয়

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার : বাজার নিয়ন্ত্রণে জোর মনিটরিং দরকার

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২২, ১২:৩৮ এএম

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার : বাজার নিয়ন্ত্রণে জোর মনিটরিং দরকার

আশার খবর, আসন্ন রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে ভোজ্যতেল, চিনি ও ছোলার ওপর ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে এটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত। তবে বাজারে এর প্রভাব কেমন পড়বে সেটা দেখার বিষয়। অবশ্য অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ বিষয়ে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন। বিশেষ করে ব্যবসায়ী মহলের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি টিসিবির মাধ্যমে বিতরণের জন্য ১ কোটি ৭১ লাখ লিটার ভোজ্যতেল, ১৪ হাজার টন চিনি, ১৯ হাজার টন মসুর ডাল ও ১০ হাজার টন ছোলা ক্রয়প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। মানুষের কষ্ট রোধে ইউনিয়ন পর্যায়ে টিসিবির কার্যক্রম ছড়িয়ে দেয়া হবে। আমরাও চাই আসন্ন রমজানে সরকারের উদ্যোগগুলো সঠিকভাবে পালন হোক। তাহলে কিছুটা হলেও মানুষের কষ্ট লাঘব হবে। আমরা দেখছি ভোজ্যতেলের দাম কী পরিমাণ বেড়েছে। বিশ্ববাজারের দোহাই দিয়ে এমন কারসাজি হচ্ছে। অথচ দেশে ভোজ্যতেলসহ কোনো পণ্যের ঘাটতি নেই। কিন্তু তারপরও সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে ভোজ্যতেল। রোজায় বাজার তদারকি শুরুর আগেই দ্রব্যমূল্য কয়েক দফা বাড়িয়ে দেয়ার এই কৌশল বিগত বছরগুলোতেও দেখা গেছে। রোজা শুরুর আগে বাজারের এই হালচাল উদ্বেগের। রমজানের সময় ভোজ্যতেল, চিনি, ডাল, ছোলা, মসলা ইত্যাদি পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। ব্যবসায়ীরা মওকা বুঝে এ সময়টাতেই চাহিদাসম্পন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন। বড় থেকে ছোট ব্যবসায়ী সবার প্রবণতা এ সময় বেশি লাভ তুলে নেয়ার। এবারো সেই আলামত লক্ষ করা যাচ্ছে। চিনি, তেল, আদা, পেঁয়াজ ইত্যাদি নিত্যপণ্যের দাম গত এক সপ্তাহে বেড়েছে। তরিতরকারির দামও ঊর্ধ্বমুখী। জানা গেছে, বাজারে ভোজ্যতেলের সংকট নেই। পাশাপাশি খোলা তেলেরও সরবরাহ পর্যাপ্ত। এরপরও বিক্রেতারা প্রতি সপ্তাহে বাড়তি দরে তেল বিক্রি করছেন। কয়েক মাস ধরেই ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানো হচ্ছে। এদিকে পেঁয়াজের বাজার আবারো ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছে। গত দুই সপ্তাহ আগে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে যাতে বাজারকে অস্থিতিশীল করতে না পারে সেদিকে লক্ষ রাখার কথা জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। অবশ্য এসব তৎপরতা প্রতি বছরই দেখা যায়। রমজানে বেশি চাহিদাসম্পন্ন পণ্যের পর্যাপ্ত মজুত থাকা এবং যে কোনো মূল্যে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার ঘোষণা দেন বাণিজ্যমন্ত্রী। সরকারের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকে ভোগ্যপণ্যের উৎপাদক ও বিপণনকারীরা আশ্বাস দেন রমজানে কোনো পণ্যের দাম বাড়বে না। কিন্তু এরপরও রমজানের আগে বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। মানতেই হবে যে, অতীতের তুলনায় গত কয়েক বছরে রোজার সময় ভোগ্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার মোটামুটি সফলতার পরিচয় দিয়েছে। মূল্যবৃদ্ধি রোধ করতে না পারলেও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে সক্ষম হয়েছে। এবার সে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারকে আগের তুলনায় বেশি সতর্ক থাকতে হবে। কাজেই রোজা শুরুর আগেই যাতে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর কৌশল বাস্তবায়ন করতে না পারেন সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে এখন থেকেই। রোজায় বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে পণ্য বিপণন, বাজার মনিটরিং ইত্যাদি যেসব পরিকল্পনা থাকে সেগুলো যেন যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App