×

খেলা

টাইগ্রেসদের প্রতিপক্ষ হারের বৃত্তে থাকা পাকিস্তান

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২২, ১২:২৩ এএম

টাইগ্রেসদের প্রতিপক্ষ হারের বৃত্তে থাকা পাকিস্তান

প্রতিপক্ষের ব্যাটারকে সাজঘরে ফিরিয়ে টাইগ্রেস ফিল্ডারদের উল্লাস। সোমবার পাকিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে মাঠে নামবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা

নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে শুক্রবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৬ রানে হেরেছে পাকিস্তান। এ নিয়ে আসরে ৩টি ম্যাচ খেলে ৩টিতেই হারের মুখ দেখল তারা। এর আগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে ১০৭ রানে ও পরের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সাত উইকেটে হেরেছে পাকিস্তান। ১৪ মার্চ পরবর্তী ম্যাচে তারা বাংলাদেশের মেয়েদের মুখোমুখি হবে। টাইগ্রেসরা এবারই প্রথম বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছে। নিগার সুলতানা জ্যোতিরা নিজের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এবং দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হারলেও দুই ম্যাচেই লড়াই করে হেরেছে। আগামী সোমবার হারের বৃত্তে ঘোরপাক খাওয়া পাকিস্তানকে হারাতে পারলে বিশ্বকাপে প্রথম জয়ের দেখা পাবে টাইগ্রেসরা। ১৯৯৯ সালে টাইগাররা প্রথমবার বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে ওই আসরে ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুস, ইনজামামুল হকের মতো খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া শক্তিমালী পাকিস্তানকে হারিয়ে চমক দেখিয়েছিল। এবার সালমা, জাহানারা, জ্যোতিদের সামনে সেই সুযোগের হাতছানি।

এবার দক্ষিণ আফ্রিকার মেয়েরা ২টি ম্যাচ খেলে ২টিতেই জয়ের দেখা পেয়ে পয়েন্ট টেবিলের তিন নম্বরে অবস্থান করছে। দক্ষিণ আফ্রিকার দেয়া ২২৪ রানের জবাবে ১ বল হাতে থাকতেই ২১৭ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান।

নিউজিল্যান্ডের মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে শুক্রবার টসে জিতে শুরুতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন পাকিস্তানের অধিনায়ক বিসমাহ মারুফ। পাকিস্তানি মেয়েদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২২৩ রান সংগ্রহ করে দক্ষিণ আফ্রিকান মেয়েরা। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে একটু বিপাকেই পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। দলীয় ৯ রানে প্রথম উইকেটের পর ২১ রানের মধ্যে তাদের দ্বিতীয় উইকেটও তুলে নেয় পাকিস্তান। ওপেনার লি ২ রান করে ফিরে যান ফাতিমা সানার বলে ক্যাচ দিয়ে। তিন নম্বরে নামা তাজমিন ব্রিটসও ২ রান করে ডায়ানা বেগের বলে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন।

এরপর দলের হাল ধরেন লরা ভলভার্ডট ও অধিনায়ক সিউন লুস। তৃতীয় উইকেটে এ দুজনের ৮৯ রানের জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা। দলীয় ১১০ রানে এসে ভলভার্ডট ইনিংস সেরা ৯১ বলে ১০টি চারে ৭৫ রান করে গুলাম ফাতিমার বলে তার হাতেই ক্যাচ দিয়ে আউট হন। এরপর মিগনন ডু প্রিজ (০) ও মারিজান কাপ (৭) করে গুলাম ফাতিমার শিকার হন।

১০ রানের ব্যবধানে আরো দুই ব্যাটারকে হারিয়ে বিপাকে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেখান থেকে ক্লো ট্রায়নকে সঙ্গে নিয়ে হাল ধরেন অধিনায়ক সিউন। ট্রায়ন ৩৮ বলে এক বাউন্ডারি ও এক ছয়ে ৩১ রানের ইনিংস খেলে আউট হলে ৫৫ রানের এই জুটি ভাঙে। এরপর উইকেটরক্ষক তৃষা ছেত্তিকে নিয়ে সপ্তম উইকেটে দলীয় সংগ্রহ ২০০ রান পার করেন অধিনায়ক। সিউন লুস ১০২ বলে দুই বাউন্ডারি ও এক ছয়ে ৬২ রানের সাবধানী ইনিংস খেলে ফাতিমা সানার এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে ফিরে যান। ছেত্তি ২৬ বলে ৩১ রান করে ইনিংসের শেষ বলে ফাতিমা সানার তৃতীয় শিকার হয়ে ফিরলে ৯ উইকেটে ২২৩ রান তুলতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা।

পাকিস্তানের হয়ে ফাতিমা সানা ও গুলাম ফাতিমা সর্বেচ্চ ৩টি করে উইকেট নেন। ২২৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সপ্তম ওভারে ধাক্কা খায়। শবনিম ইসমাইলের এই ওভারে ২টি উইকেট হারায় পাকিস্তান। তাও আবার পরপর দুই বলে ওপেনার সিদ্রা আমিন (১২) ও অধিনায়ক বিসমাহ মারুফকে (০) সাজঘরে ফেরান। হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি হলেও শেষ পর্যন্ত তা পূর্ণ হয়নি এই দক্ষিণ আফ্রিকান বোলারের।

তবে ধাক্কাটা সামলে উঠতে সময় নেয়নি পাকিস্তান। নাহিদা খান ও ওমাইমা সোহেলের জুটি তৃতীয় উইকেটে ৬৯ রান যোগ করেন স্কোর বোর্ডে। ওপেনার নাহিদা ৭১ বলে ৫ পাঁচ বাউন্ডারিতে ৪০ রান করে আয়াবোঙ্গা খাকার শিকার হন। এরপর নিদাদারের সঙ্গে ওমাইমার জুটি পাকিস্তানকে জয়ের আশা দেখায়। তাদের ৪৯ রানের জুটি ভাঙে ওমাইমা ১০৪ বলে সাত বাউন্ডারিতে ৬৫ রান করে বিদায় নিলে স্কোর বোর্ডে তখন ৩৮ ওভার শেষে ১৪৪ রানে চার উইকেট।

শেষ ১২ ওভারে তখন পাকিস্তানের দরকার ৮০ রান, হাতে তখনো ছয় উইকেট। জয়ের এত কাছে থেকেও আর শেষ রক্ষা হয়নি পাকিস্তানের। ওমাইমার বিদায়ের পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে পাকিস্তান। আলিয়া রিয়াজ (০), ফাতিমা সানা (৯) করে ফেরেন। তবে তখনো এক পাশে লড়ে যান নিদা। সপ্তম উইকেটে সিদ্রার সঙ্গে ৩১ রানের জুটি এরপর ডায়ানার সঙ্গেও জুটি গড়ে ৩০ রান করেন তিনি। শেষ দুই ওভারে দরকার ছিল ২২ রান। ডায়ানা ৪৯তম ওভারের প্রথম দুই বলে টানা ২টি চার মেরে ম্যাচে উত্তেজনা বাড়ালেও ওই ওভারে পঞ্চম বলে দলীয় ২১৩ রানে এসে নিদা ব্যক্তিগত ৫৫ রানে ফিরলে পাকিস্তানের আশাও নিভে যায়।

শেষ ওভারে ১০ রান লাগত পাকিস্তানের। এমন পরিস্থিতিতে বল হাতে নেন ইসমাইল। ডায়ানা প্রথম বলে দুই রান করতে পারলেও দ্বিতীয় বলেই বোলারের দুর্দান্ত ফিরতি ক্যাচে আউট হন। জিততে হলে শেষ চার বলে প্রয়োজন ৮ রান, আর দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার একটি উইকেট। এমন উত্তেজনাকর অবস্থায় দুই ব্যাটার নাশরা সান্ধু ও ফাতিমা পরের তিন বলে যোগ করেন মাত্র এক রান। পঞ্চম বলে ফাতিমা আউট হলে ৪৯.৫ ওভারেই ২১৭ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান।

দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে শবনিম ইসমাইল সর্বোচ্চ তিন উইকেট এবং মারিজানে কাপ ও আয়াবোঙ্গা খাকা ২টি করে উইকেট পেয়েছেন। ম্যাচসেরা হয়েছেন শবনিম ইসমাইল।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App