রাজধানীর ফকিরাপুল এলাকায় অভিযান চালিয়ে মনির আব্দুর রাজ্জাককে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। শনিবার (৫ মার্চ) কাউন্টার টেররিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।

কুমিল্লা লাকসামের বাসিন্দা মনির আব্দুর রাজ্জাক বাহরাইন প্রবাসী। অনলাইনে বিভিন্ন কন্টেন্ট দেখে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হন তিনি। জঙ্গি সংগঠন গাজওয়াতুল হিন্দে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের বিচারক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর হামলার পরিকল্পনা ছিল তার। আর তা বাস্তবায়নে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পরিবারের কাউকে না জানিয়ে দেশে আসেন মনির।

হামলা চালিয়ে আবারও বাহরাইনে পালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন এ ব্যক্তি। এজন্য সেলফ রেডিকালাইজড মনির বেশকিছু স্থানে রেকিও করেন। তার সঙ্গে কোনো জঙ্গি সংগঠনের যোগসাজশ পাওয়া যায়নি। তাই আমরা তাকে সেলফ রেডিকালাইজড বলছি। সাইবার স্পেসে বিভিন্ন কন্টেন্ট দেখে নিজেই উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে হামলার পরিকল্পনা করেন তিনি। তাকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে দেশ আরও একটি বড় ঘটনা থেকে রক্ষা পেল। তাকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে তার পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিতে পেরেছি।

রবিবার (৬ মার্চ) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিটিটিসির প্রধান অতিরিক্ত  ডিআইজি মো. আসাদুজ্জামান।

তিনি বলেন, কুমিল্লার লাকসামের বাসিন্দা মনির ২০০৭ সালে শ্রমিক হিসেবে বাহরাইনে যায়। ২০১৮ সালে দেশে এসে আবার বাহরাইনে যায়। সেখানেই তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন রেডিকালাইজড কনটেন্ট দেখে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হন।

নিজেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেসব কন্টেন্ট শেয়ার করতেন। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা ডিভাইস বিশ্লেষণ করে ভয়ংকর তথ্য পাওয়া গেছে।

তিনি আরও বলেন, সেলফ রেডিকালাইজড মনির একপর্যায়ে জিহাদের প্রস্তুতি নেয়। তারই অংশ হিসেবে পরিবারের কাউকে না জানিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দেশে আসেন। পুলিশ ও বিচারকের ওপর হামলার পরিকল্পনা করেন তিনি। ঘটনা ঘটিয়ে আবারও ফেরত যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল।

নিজে জিহাদের জন্য প্রস্তুতি নেয়ার পাশাপাশি মনির অন্যকেও উদ্বুদ্ধ করতেন উল্লেখ করে সিটিটিসি প্রধান বলেন, তিনি গাজওয়াতুল হিন্দের দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে বিভিন্ন স্ট্যাটাস দিতেন। বাহরাইনে তার পাকিস্তানী এক সহকর্মীর সঙ্গে পরিচয়ের সূত্রে পাকিস্তানী পরিচয় দিয়ে একটি আইডি খোলেন। সেটি দিয়ে নানা রকম সরকারবিরোধী, উস্কানীমূলক পোস্ট দিতেন মনির। তার ধারণা ছিল যেহেতু তিনি বিদেশে যেহেতু তাকে কেউ ধরতে পারবেনা।

পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, দেশে এসে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সে ছদ্মবেশে বিভিন্ন জায়গা রেকি করছিল। এ অবস্থায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আমরা মনে করছি, তাকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে বাংলাদেশ আরও একটি বড় ঘটনা থেকে রক্ষা পেলো। তাকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে তার পরিকল্পনা নাসাৎ করে দিতে পেরেছি।

তার কিছু সহযোগীদের নাম আমরা পেয়েছি। তাদেরকে গ্রেপ্তারে কাজ চলছে। মনিরকে আদালতে রিমান্ড প্রার্থনা করে পাঠানো হচ্ছে। আশা করছি তাকে রিমান্ডে পাব। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানা যাবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।