×

আন্তর্জাতিক

ইউক্রেনে কেন নো-ফ্লাই জোন ঘোষণা করেনি ন্যাটো

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২২, ০৬:২৭ পিএম

ইউক্রেনে কেন নো-ফ্লাই জোন ঘোষণা করেনি ন্যাটো
ইউক্রেনে কেন নো-ফ্লাই জোন ঘোষণা করেনি ন্যাটো
সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পায় ইউক্রেন। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নেতৃত্বে ন্যাটোর সদস্যপদ পাওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছিল ইউক্রেন। শুক্রবারই আন্তর্জাতিক সামরিক সংস্থা ন্যাটোর ৩০ টি দেশ ন্যাটোর সদর দফতর বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে সাক্ষাৎ করেছিল। ইউক্রেন পরিস্থিতিতে ন্যাটোর পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, সেই নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। ন্যাটোর শুক্রবারের বৈঠকে সময়ে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধে সাময়িক যুদ্ধবিরতির কথা ঘোষিত হয়নি। এই ন্যাটোকে নিয়ে ইউক্রেন-রাশিয়া যাবতীয় সমস্যার সূত্রপাত। ইউক্রেন আগে সোভিয়েই ইউনিয়নের অংশ ছিল। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পায় ইউক্রেন। অন্যদেশগুলোর জন্য আরও বেশি প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নেতৃত্বে ন্যাটোর সদস্যপদ পাওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছিল ইউক্রেন। সেখানে রাশিয়ার ঘোরতর আপত্তি ছিল। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানতেন, আমেরিকা নেতৃত্বাধীন ন্যাটোর সদস্যপদ যদি ইউক্রেন পেয়ে যায় তবে, রুশ সীমান্তের আমেরিকার নিঃশ্বাস অনিবার্য। সেই কারণ প্রথমে সেনা মোতায়েন করে কূটনৈতিক চাপ এবং পরবর্তী সময়ে সটান ইউক্রেন আক্রমণ করে বসেন পুতিন। তবে বারবার ন্যাটোর সাহায্য প্রার্থনা করলেও যুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ থেকে ন্যাটো বিরত থাকে। এমনকী জেলেনস্কির আবদেন প্রত্যাখান করে ইউক্রেনে ‘নো-ফ্লাই জোন’ ঘোষণা করেনি ন্যাটো। ন্যাটো কথাটির অর্থ নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন। ন্যাটো বিভিন্ন দেশের সরকাররে সামরিক জোট। ইউরোপের ২৮ টি দেশে এবং উত্তর আমেরিকার ২ টি দেশে ন্যাটোর সদস্য। ন্যাটো নর্থ আটলান্টিক অ্যালায়েন্স নামেও পরিচিত। মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৯ সালে নিরাপত্তার স্বার্থে ন্যাটো তৈরি করা হয়েছিল।৩০ টি দেশের ন্যাটোর সদস্যপদ রয়েছে, এবং তারা সকলেই আমেরিকার বন্ধু হিসেবে পরিচিত। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ন্যাটোর সদস্য দেশগুলির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রাথমিকভাবে ন্যাটোর সদস্য সংখ্যা ১২ হলে বর্তমানে সংখ্যাটা ৩০। ব্রিটেন, ফ্রান্স, ইটালি, জার্মানি, বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, পর্তুগাল, পোল্যান্ড, কানাডা, আমেরিকার মত দেশগুলির ন্যাটোর সদস্য। ‘নো-ফ্লাই জোন’ কথাটির অর্থ হল কোনও একটি দেশের আকাশসীমাতে এক বা একাধিক নির্দিষ্ট দেশের বিমান ওড়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা। কূটনৈতিক সংঘাত ও যুদ্ধকালেই ‘নো-ফ্লাই জোন’ প্রয়োগ করা হয়। যেমন ইউক্রেন রাশিয়ার ক্ষেত্রে ‘নো-ফ্লাই জোন’ প্রয়োগ করেছে, ফলে কোনও রাশিয়ান বিমান ইউক্রেনের আকাশপথ ব্যবহার করতে পারবে না। আকাশপথে বিমান হানা রোধের কারণেই ‘নো-ফ্লাই জোন’ প্রয়োগ করা হয়। ন্যাটো এর আগে সদস্যপদ না থাকা সত্ত্বেও লিবিয়া, বসনিয়ার মত দেশের ক্ষেত্রে ‘নো-ফ্লাই জোন’ প্রয়োগ করেছিল। তবে ‘নো-ফ্লাই জ়োন’ প্রয়োগের অর্থই হল আংশিকভাবে সেই দেশের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া। ন্যাটোর ইউক্রেনে ‘নো-ফ্লাই জোন’ প্রয়োগ করেনি। যদি ন্যাটো ‘নো-ফ্লাই জোন’-এর প্রয়োগ করত, তবে ইউক্রেনের আকাশ পথে কোনও রাশিয়ান বিমান উড়লেই ন্যাটো সেই বিমানকে আক্রমণ করতে পারত। এমনকী ন্যাটো আকাশপথে রুশ বিমানগুলির ওপর গুলিও চালাতে পারত। তবে ন্যাটো এই বিশেষ নিয়ম প্রয়োগ করল রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা প্রবলভাবে বৃদ্ধি পেত। ইউক্রেন বা রাশিয়া কেউই ন্যাটোর সদস্য দেশ নয়। পুতিন মনে করেন রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য ন্যাটো অন্যতম বড় বিপদ। ন্যাটো ক্রমশই রাশিয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছে, সেই কারণে সম্প্রতি এই সামরিক সংস্থার সমালোচনাও করেছিল রাশিয়া। পুতিন জানিয়েছিলেন, এই কারণে তিনি ইউক্রেনে আক্রমণ করেছিলেন। রুশ প্রেসিডেন্টের হুঁশিয়ারির পরই ইউক্রেনের পক্ষ নিয়ে পরমাণু শক্তিধর রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামতে অনিচ্ছুক ন্যাটো। ন্যাটো মনে করছে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন সমালোচনা ছাড়া এখনই আর কিছু করার উপায় কারণ, রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামলে বিশ্বে পরমাণু যুদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনাও প্রবল।  

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App