×

সম্পাদকীয়

ভোজ্যতেলের দাম লাগামছাড়া : রমজানের আগে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ মার্চ ২০২২, ১২:৫৪ এএম

ভোজ্যতেলের দাম লাগামছাড়া : রমজানের আগে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে

রমজানের আগে ভোজ্যতেলের দাম বেড়ে যাওয়া দুঃখজনক। এমন চিত্র নতুন নয়। প্রতি বছর রমজানের আগে অসাধু ব্যবসায়ীরা এমন আচরণ করে থাকে। অথচ দেশে ভোজ্যতেলসহ কোনো পণ্যের ঘাটতি নেই। কিন্তু তারপরও সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে ভোজ্যতেল। ভোজ্যতেলের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির পেছনে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজির প্রমাণ পেয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। শিগগিরই অভিযুক্ত ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করার কথা জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। রোজায় বাজার তদারকি শুরুর আগেই দ্রব্যমূল্য কয়েক দফা বাড়িয়ে দেয়ার এই কৌশল বিগত বছরগুলোতেও দেখা গেছে। রোজা শুরুর আগে বাজারের এই হালচাল উদ্বেগের। রমজানের সময় ভোজ্যতেল, চিনি, ডাল, ছোলা, মসলা ইত্যাদি পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। ব্যবসায়ীরা মওকা বুঝে এ সময়টাতেই চাহিদাসম্পন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন। বড় থেকে ছোট ব্যবসায়ী সবার প্রবণতা এ সময় বেশি লাভ তুলে নেয়ার। এবারো সেই আলামত লক্ষ করা যাচ্ছে। চিনি, তেল, আদা, পেঁয়াজ ইত্যাদি নিত্যপণ্যের দাম গত এক সপ্তাহে বেড়েছে। তরিতরকারির দামও ঊর্ধ্বমুখী। জানা গেছে, বাজারে ভোজ্যতেলের সংকট নেই। পাশাপাশি খোলা তেলেরও সরবরাহ পর্যপ্ত। এরপরও বিক্রেতারা প্রতি সপ্তাহে বাড়তি দরে তেল বিক্রি করছেন। কয়েক মাস ধরেই ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানো হচ্ছে। এদিকে পেঁয়াজের বাজার আবারো ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছে। গত দুই সপ্তাহ আগে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে তা ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে যাতে বাজারকে অস্থিতিশীল করতে না পারে সেদিকে লক্ষ রাখার কথা জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। অবশ্য এসব তৎপরতা প্রতি বছরই দেখা যায়। রমজানে বেশি চাহিদাসম্পন্ন পণ্যের পর্যাপ্ত মজুত থাকার এবং যে কোনো মূল্যে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার ঘোষণা দেন বাণিজ্যমন্ত্রী। সরকারের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকে ভোগ্যপণ্যের উৎপাদক ও বিপণনকারীরা আশ্বাস দেন রমজানে কোনো পণ্যের দাম বাড়বে না। কিন্তু এরপরও রমজানের আগে বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। মানতেই হবে যে, অতীতের তুলনায় গত কয়েক বছরে রোজার সময় ভোগ্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার মোটামুটি সফলতার পরিচয় দিয়েছে। মূল্যবৃদ্ধি রোধ করতে না পারলেও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখতে সক্ষম হয়েছে। এবার সে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারকে আগের তুলনায় বেশি সতর্ক থাকতে হবে। কাজেই রোজা শুরুর আগেই যাতে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ানোর কৌশল বাস্তবায়ন করতে না পারে সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে এখন থেকেই। রোজায় বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে পণ্য বিপণন, বাজার মনিটরিং ইত্যাদি যেসব পরিকল্পনা থাকে সেগুলো যেন যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। পণ্য পরিবহন নির্বিঘœ রাখতে বিশেষ করে কৃষিপণ্যের সরবরাহে যাতে কোনো বাধার সৃষ্টি হতে না পারে সেদিকে নজর রাখতে হবে সংশ্লিষ্টদের।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App