×

খেলা

নারী বিশ্বকাপের পর্দা উঠবে শুক্রবার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ মার্চ ২০২২, ১০:৫৩ পিএম

নারী বিশ্বকাপের পর্দা উঠবে শুক্রবার

আইসিসি উইম্যান ওয়ানডে বিশ্বকাপ

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে শুক্রবার (৪ মার্চ) শুরু হচ্ছে আইসিসি নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১২তম আসর। এই নিয়ে তৃতীয়বারের মতো নারী বিশ্বকাপ আয়োজন করছে কিউইরা। নারী বিশ্বকাপের উদ্বোধনী দিনে হবে একটি ম্যাচ। বে ওভালে মুখোমুখি হবে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায় ম্যাচটি শুরু হবে। গাজী টিভিতে খেলাটি সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। এছাড়া স্টার স্পোর্টস নেটওয়ার্কেও নারী বিশ্বকাপের সবগুলো ম্যাচ দেখা যাবে।

আইসিসি নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের এবারের অংশগ্রহণকারী দলগুলো হলো অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড, ভারত, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। র‌্যাঙ্কিংয়ের নয় ও দশ নম্বরে অবস্থান করছে আয়ারল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা। বাছাইপর্ব পেরোতে না পারায় বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ হারিয়েছে আইরিশ ও লঙ্কান নারীরা। এবারের টুর্নামেন্টও লিগভিত্তিক অনুষ্ঠিত হবে। লিগপর্বে প্রত্যেকটি দলই ৭টি করে ম্যাচ খেলবে। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ চার দল সেমিফাইনাল খেলার সুযোগ পাবে। এরপর আগামী ৩ এপ্রিল হ্যাগলে ওভালে ফাইনাল দিয়ে শেষ হবে ১২তম আসরে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট অর্জনের লড়াই।

নারী ক্রিকেটের উন্নয়নের জন্য বিশ্বকাপের এ আসরের প্রাইজমানিকে ইতোমধ্যে দ্বিগুণ করেছে আইসিসি। সবকিছু মিলিয়ে নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে সব দলকে দেয়া হবে ৩৫ লাখ ডলার, যা শেষ আসরের তুলনায় ৭৫ শতাংশ বেশি। নারী বিশ্বকাপের এ আসরে চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ১৩ লাখ ২০ হাজার ডলার। ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হওয়া নারী বিশ্বকাপের দ্বিগুণ এ প্রাইজমানি। গত আসরের তুলনায় ২ লাখ ৭০ হাজার ডলার বেশি অর্থাৎ ৬ লাখ ডলার পাবেন রানার্সআপরা। এছাড়া সেমিফাইনালে হেরে যাওয়া দুদল পাবে ৩ লাখ ডলার করে। প্রথম রাউন্ডে বাদপড়া চার দল পাবে ৭০ হাজার ডলার করে।

ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হওয়া গত আসরে প্রথম রাউন্ডে বাদপড়া টিমগুলো পেয়েছিল মাত্র ৩০ হাজার ডলার করে। এর বাইরেও দলগুলোর জন্য প্রাইজমানি রেখেছে আইসিসি। প্রথম রাউন্ডে প্রতিটি ম্যাচে জয়ী দলগুলো পাবে ২৫ হাজার ডলার করে। এ সমীকরণে প্রথম রাউন্ডের ২৮ ম্যাচে উইনিংস বোনাস হিসেবে দেয়া হবে মোট ৭ লাখ ডলার। নারী ক্রিকেটের প্রসারের জন্য প্রায়ই বিনিয়োগ বৃদ্ধির কথা বলে থাকে আইসিসি। বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রকল্প বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে গত দুই আসর ধরেই ক্রমাগতভাবে প্রাইজমানির পরিমাণ বাড়িয়ে যাচ্ছে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

গত ১১তম আসরের আগে মাত্র দুবার বিশ্বকাপের আয়োজন করেছিল নিউজিল্যান্ড। ১৯৮২ সালের আয়োজনে ঘরের মাঠেও শিরোপা জয় করতে পারেনি তারা। তবে ২০০০ সালে দ্বিতীয়বার শুধু বিশ্বকাপের আয়োজনই করেনি, সেই সঙ্গে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে নারী বিশ্বকাপের প্রথম শিরোপা জয় করেছে কিউইরা। শিরোপা জয়ের আসরসহ টানা তিন আসরে ফাইনাল ম্যাচ খেলেছিল নিউজিল্যান্ড। ১৯৯৩ সালে নারী বিশ্বকাপের পঞ্চম আসরে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিল তারা। ইংলিশ নারীদের কাছে ৬৭ রানে হেরে প্রথম শিরোপা জয়ের স্বপ্ন ভেঙেছিল তাদের।

১৯৯৭ সালে পরবর্তী আসরে ভারতে আবারো ফাইনালে উঠেছিল নিউজিল্যান্ড। ভারতের মাটিতে প্রতিপক্ষ ছিল অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়া ষষ্ঠ আসরে নিউজিল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারিয়ে চতুর্থ শিরোপা জয় করেছিল। সপ্তম আসরে ঘরের মাঠে আবারো অস্ট্রেলিয়াকে ফাইনালে পেয়েছিল স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। প্রথম শিরোপা জয়ের তীব্র ইচ্ছায় লিংকনে অজি নারীদের ৪ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জয় করেছিল নিউজিল্যান্ড। আগের ১১তম আসরে সর্বোচ্চ ছয়বার শিরোপা জয় করেছে অস্ট্রেলিয়া। বর্তমানে আইসিসি ওডিআই র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষেও অবস্থান করছে তারা।

তবে সর্বশেষ আসরে ফাইনালে মাত্র ৯ রানে হারিয়ে চতুর্থ শিরোপা জয় করেছিল স্বাগতিক ইংল্যান্ড। আইসিসি নারী বিশ্বকাপের এ আসরের নতুন দল হলো বাংলাদেশ। আগামী ৫ মার্চ ইউনিভার্সিটি ওভালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করবে টাইগ্রেসরা। এরপর লিগপর্বে খেলবে আরো ৬টি ম্যাচ। ৭ মার্চ নিউজিল্যান্ড, ১৪ মার্চ পাকিস্তান, ১৮ মার্চ ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ২২ মার্চ ভারত, ২৫ ও ২৭ মার্চ যথাক্রমে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাঘিনীরা। আন্ডারডগ হিসেবে বিশ্বকাপ খেলতে গিয়ে কোনো ম্যাচ না জিতলেও ৭০ হাজার ডলার (প্রায় ৬০ লাখ টাকা) পাবে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটে দল। আর দারুণ পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে কোনো ম্যাচ জিততে পারলেই প্রতি ম্যাচের জন্য যোগ হবে ২৫ হাজার ডলার করে।

নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপের মিশন শুরু করার জন্য গত ৩ ফেব্রুয়ারি সিঙ্গাপুর হয়ে অকল্যান্ডের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছে জ্যোতিরা। আইসিসি নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১২তম আসরে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের বাঘিনীরা হলেন- নিগার সুলতানা জ্যোতি (অধিনায়ক), সালমা খাতুন, রুমানা আহমেদ, ফারজানা হক পিংকি, জাহানারা আলম, শামীমা সুলতানা, ফাহিমা খাতুন, মোসাম্মত রিতু মণি, মুর্শিদা খাতুন, নাহিদা আক্তার, শারমিন আক্তার সুপ্তা, লতা মণ্ডল, সোবহানা মোস্তারি, ফারিহা ইসলাম তৃষ্ণা, সুরাইয়া আজমিম। এছাড়া ট্রাভেলিং রিজার্ভের জন্য আছেন সানজিদা আক্তার মেঘলা ও নুজহাত তাসনিয়া। নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপকে স্মরণীয় করে রাখতে বদ্ধপরিকর নিগার সুলতানা জ্যোতিরা।

প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচের পূর্বে এক সংবাদ সম্মেলনে টাইগ্রেস অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি বলেছেন, আমরা এই বিশ্বকাপকে স্মরণীয় করে রাখতে চাই। কারণ এটা আমাদের প্রথম বিশ্বকাপ। নিজেদের সেরাটা দিতে চাই এখানে। আমাদের অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছে, যারা আমার কাজ সহজ করে দেয়। তারা জানে, দলে তাদের কত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। মূল ম্যাচে কী করতে হবে সেটাও তাদের জানা। অনেক তরুণ খেলোয়াড় আছে যারা ভালো করেছে গত কয়েক মাসে। অনেক অলরাউন্ডার আছে, তারা শেষ টুর্নামেন্টে ভালো ভূমিকা পালন করেছে। আশা করি, মূল ম্যাচে আমরা ভালো করব। আমরা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর থেকেই কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি। কারণ এটাই আমাদের সেরা সুযোগ। এটা আমাদের সেরা স্কোয়াড।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App