×

জাতীয়

হাতিরঝিল থানার ওসিসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২২, ০৯:৪৭ পিএম

হাতিরঝিল থানার ওসিসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা

প্রতীকী ছবি

হাতিরঝিল থানার ওসিসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা

হাতিরঝিল থানা

বিয়ের নামে প্রতারণার পর কাবিননামা দেওয়ার কথা বলে আত্মীয়ের বাসায় নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেছেন এক নারী। মামলায় তিনি ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের আটকের পর ঘুষ নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়ায় হাতিরঝিল ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ, পরিদর্শক (তদন্ত) মহিউদ্দিন ফারুক, ওসি (অপারেশন) গোলাম আযম ও দুই এসআই শরীফুল ও চয়নকে আসামি করেছেন।

মঙ্গলবার (১ মার্চ) ঢাকার সাত নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে এ নালিশি মামলা করেন তিনি। ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক জুলফিকার হায়াত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পরে আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন। মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী জাকির হোসেন হাওলাদার এ তথ্য জানান।

ট্রাইব্যুনালের পেশকার ইশতিয়ার আলম জানান, মঙ্গলবার মামলার আদেশ হয়নি, আগামীকাল বুধবার হতে পারে। মামলার অপর আসামিরা হলেন মোসা. আলেয়া, কাজী তোফাজ্জল হোসেন, জাভেল হোসেন পাপন, মো. জামাল, রাকিবুল হাসান, তানীম রেজা বাপ্পী, পান্নু হাওলাদার ও ইউসুফ রিপন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর থেকে ওই নারী বাবার বাড়িতে বসবাস করছেন। এক বছর আগে তার খালাতো বোনের মাধ্যমে আসামি বাপ্পীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে বাপ্পী তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন, একপর্যায়ে ফুঁসলিয়ে তাকে রাজি করান। গত বছরের ২২ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টার দিকে আলেয়া, তোফাজ্জল, পাপন, জামাল, রাকিবুল, পান্নু ও রিপনের উপস্থিতিতে বিয়ে নাটক সাজিয়ে বিয়ে পড়ান ও স্বাক্ষর নেন বাপ্পী। পরে তারা ওই নারীর বাবার ভাড়া বাসায় ওঠেন এবং স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে থাকতে ‍শুরু করেন। মাস দুয়েক পর বাপ্পীর কথাবার্তায় তার সন্দেহ হয়। তখন ওই নারী বিয়ের কাবিননামা চাইলে বাপ্পী তা নিয়ে টালবাহানা করেন। পরে তিনি বুঝতে পারেন যে বাপ্পী তার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।

[caption id="attachment_337770" align="aligncenter" width="700"] হাতিরঝিল থানা[/caption]

মামলায় আরও বলা হয়, গত ১২ ফেব্রুয়ারি কাবিননামা দেওয়ার কথা বলে ওই নারীকে বাপ্পী তার এক আত্মীয়ের বাসায় নিয়ে যান। সেখানে আগে থেকেই আরও পাঁচজন মেয়ে ছিল, যাদের আত্মীয় বলে পরিচয় করিয়ে দেন। পরে আরও দুজন সেখানে আসেন। একপর্যায়ে আলিয়ার সহযোগিতায় জাবেল হোসেন পাপন ও মো. জামাল ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। আলিয়া তার ভিডিও ধারণ করেন ও ছবি তোলেন। পরে ওই নারী কৌশলে সেখান থেকে বের হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান। সেখান থেকে ৯৯৯ কল করে পুলিশের সহযোগিতায় গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ওই হাসপাতালে ওসিসি বিভাগে ভর্তি হন। পরে তিনি ১৬ ফেব্রুয়ারি হাতিরঝিল থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি, পরিদর্শক (তদন্ত), ওসি (অপারেশন) থানায় তাকে বসিয়ে রেখে আসামিদের ধরতে অভিযানে বের হন। পরে আসামি আলিয়াসহ আরও কয়েকজন নারী এবং অপর আসামিদের গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসেন। এরপর ওই নারীকে মামলা করতে না করে পুলিশ। তিনি রাজি না হওয়ায় আসামিরা তাকে এক লাখ টাকা দিতে চান। একপর্যায়ে আসামিরা পুলিশকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দিয়ে ছাড়া পান। পুলিশ মামলা না নিয়ে কয়েকটি সাদা কাগজে ওই নারীর স্বাক্ষর নেয় এবং গালিগালাজ করে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থানা থেকে বের করে দেয়।

ওইদিন রাত ১ টায় বাসায় ফেরার সময় খিলগাঁও এলাকায় পান্নু, রিপন ও পাপনসহ কয়েকজন পথ আটকে তাকে অপহরণের চেষ্টা করে। এ সময় তিনি চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময় তারা তাকে গুম করার হুমকি দিয়ে যায়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App