×

জাতীয়

এই সরকারের আমলেই হুমায়ুন আজাদ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৭:২৭ পিএম

এই সরকারের আমলেই হুমায়ুন আজাদ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি

রবিবার বিকেলে অমর একুশে বইমেলার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে হুমায়ুন আজাদ লেখক-প্রকাশক-পাঠক ফোরাম আয়োজিত সমাবেশে বিচার দাবিতে বিশিষ্ট জনেরা। ছবি: ভোরের কাগজ

প্রথাবিরোধী লেখক, কবি, গবেষক, ভাষাবিজ্ঞানী হুমায়ুন আজাদের হত্যাকাণ্ডের বিচার এই সরকারের আমলেই চেয়েছেন তার মেয়ে মৌলি আজাদসহ অন্যান্য বিশিষ্ট জনেরা।

রবিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে অমর একুশে বইমেলার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে হুমায়ুন আজাদ লেখক-প্রকাশক-পাঠক ফোরাম আয়োজিত সমাবেশে এমন দাবি জানান তারা।

এ আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন আগামী প্রকাশনীর প্রকাশক ওসমান গণি। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, সাংবাদিক জ ই মামুন, বাংলা একাডেমির সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ, সাংবাদিক আকিদুল ইসলাম, কবি মোহন রায়হান, হুমায়ুন আজাদের ছোট ভাই সাজ্জাদ কবীর, প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম, লেখক সৈয়দ জাহিদ হাসান, পিয়াস মজিদ, শিপ্রা আজাদসহ বিশিষ্ট জনেরা।

হুমায়ুন আজাদের মেয়ে মৌলি আজাদ বলেন, ফেব্রুয়ারি মাস মানেই বাবার কাছে ছিল বই মোলা। ১৮ বছর ধরে সেটি নেই। এই সময় তার বিচার চাইতে চাইতে কখনো কখনো ধৈর্যহীন হয়ে গেছি। আবার আপনাদের অনুপ্রেরণায় নতুন উৎসাহ পেয়েছি। আমি এই সরকারের আমলেই আমার বাবার হত্যার বিচার চাই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, প্রথা বিরোধী এবং প্রগতিবাদী কবি ছিলেন হুমায়ুন আজাদ। অসাম্প্রদায়িক, মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ ছিলেন তিনি। নিজে যেমন ভিন্ন মত দিতেন, তেমনি ভিন্ন মতকে গ্রহণ করতে পারতেন। হুমায়ুন আজাদ নেই, কিন্তু তার লেখা রয়ে গেছে। সেগুলো আমাদের প্রগতির পক্ষে, তরুণ প্রজন্মের মানষ গঠনে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ভূমিকা রেখে যাবে। আর সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদীদের যে হামলা হুমায়ুন আজাদের উপর হয়েছিল তার বিচার দ্রুত সম্পন্ন হবে এটাই প্রত্যাশা করি।

মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, সেদিন বিকেলে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করে, আড্ডা দিয়ে সে এখান থেকে বের হলো। তারপরই সে আক্রান্ত হয়। সেই বিকেলের স্মৃতি এখনো হৃদয়ে গাঁথা। হুমায়ুন আজাদ আছেন, থাকবেন। তখন হুমায়ুন আজাদের সঙ্গে সকল লেখকের একটা প্রতিযোগিতা ছিল। এতো কিছুর মধ্যেও যে হুমায়ুন আজাদ এখনো টিকে আছে, এটাই বড় কথা। তিনি একজন শ্রেষ্ঠ মৌলিক লেখক ছিলেন। রবীন্দ্রনাথের পর বাংলা ভাষার উন্নয়নে তিনি মৌলিক কবিতার মাধ্যমে বড় ভূমিকা রেখেছেন। তিনি কখনো আপোষ করেননি। যতদিন বাংলা ভাষা থাকবে, ততদিন হুমায়ুন আজাদ থাকবেন।

জ ই মামুন বলেন, আজাদ স্যার যখন আক্রান্ত হয়েছেন তখন এক অন্য বাংলাদেশ ছিল। তখন বাংলা ভাইয়ের উথান হয়েছিল, ৬৩ জেলায় বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছিল, শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার প্রতি গ্রেনেড হামলা হয়েছিল। ঐ সময় যে বিভৎস বাংলাদেশ আমরা দেখেছি, সেই বাংলাদেশে আর ফিরে যেতে চাই না। এই সরকার মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার। হুমায়ূন আজাদসহ আরও অনেকের উপরেই জঙ্গি হামলা হয়েছে। আমরা সেগুলোসহ হুমায়ূন আজাদের হত্যকাণ্ডের বিচার চাই। আর উন্নয়নের পাশাপাশি দেশে মুক্ত চিন্তার বিকাশ ঘটবে বলেও আশা রাখি।

এর আগে ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারির রাতে পরমাণু শক্তি কমিশনের সামনে বাংলা একাডেমির উল্টো পাশের ফুটপাতে আক্রান্ত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ, যিনি তার লেখনীর জন্য আগে থেকেই সাম্প্রদায়িক অপশক্তির হুমকি পেয়ে আসছিলেন। তখন তাকে চাপাতি ও কুড়াল দিয়ে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। তিনি ২২ দিন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) এবং ৪৮ দিন ব্যাংককে চিকিৎসা নেন। সবশেষ জার্মানির মিউনিখে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই বছরের ১২ আগস্ট তার মৃত্যু হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App