শরীরে মাইন বেঁধে নিজেকে উড়িয়ে রাশিয়ার ট্যাঙ্ক আটকে দিলেন ইউক্রেনের এক সৈনিক। ওই সৈনিকের নাম ভিতালি স্কাকুন ভোলোদিমিরোভিচ। পদমর্যাদায় তিনি ইউক্রেনের নৌ-বাহিনীর ব্যাটালিয়ন ইঞ্জিনিয়ার।

রাশিয়া অধিকৃত ক্রিমিয়া থেকে ইউক্রেনের মূল ভূখণ্ডে প্রবেশের জন্য প্রশস্ত রাস্তা খেরসন প্রদেশ। সেই রাস্তার ওপর হেনিচেস্ক সেতু। রাশিয়ার সাঁজোয়া গাড়ি ও ট্যাঙ্ক সেই পথ দিয়েই মূল ইউক্রেনে ঢুকে পড়ার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ান ভিতালি স্কাকুন ভলোদিমিরোভিচ। যখন দেখলেন, ইউক্রেনে ঢুকে পড়তে মরিয়া রুশ ট্যাঙ্কের সারি এগিয়ে আসছে সেতু লক্ষ্য করে, শরীরে মাইন বেঁধে নিজেকেই উড়িয়ে দিলেন। মুহূর্তে ধ্বসে পড়ল চার লেনের সেতু। থমকে গেল রাশিয়ার ট্যাঙ্ক বাহিনী। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে এখন জাতীয় বীরের মর্যাদা পাচ্ছেন ভিতালি। নিজের প্রাণ দিয়ে রাশিয়ার ট্যাঙ্ক বাহিনীকে রুখে দেয়ার জন্য। মেশিনগান হাতে জান কবুল লড়াইয়ে নামা ইউক্রেনের সেনার মুখে মুখে ঘুরছে ভিতালির বলিদানের কাহিনি।

ভিতালির সহযোদ্ধারা বলেন, ভিতালি একাই সেতুর ওপর মাইন বসানোর কাজ করছিল। হঠাৎ দূরে রাশিয়ার ট্যাঙ্ক বাহিনীকে দেখতে পেয়ে আমরা ওকেস সে খবর জানাই। মাইন বসানোর কাজ তখনও কিছুটা বাকি ছিলো। এসময় ভিতালি আমাদের জানায়, এখন মাইন বসিয়ে সে ফিরে আসার চেষ্টা করলে ট্যাঙ্ককে আটকানো যাবে না। তাই নিজেকেই উড়িয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

সহযোদ্ধারা জানান, এ কথা বলার পরই একটি বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান। ধোঁয়া সরলে দেখা যায়, মাঝখান থেকে নদীতে ভেঙে পড়ে আছে হেনিচেস্ক সেতু। দূরে থমকে দাঁড়িয়ে রাশিয়ার ট্যাঙ্ক বাহিনী।

সেতু ভেঙে যাওয়ায় রাশিয়ার ট্যাঙ্ক বাহিনীকে আরও অনেক সময় নিয়ে ইউক্রেনের মূল ভূখণ্ডে ঢুকতে হয়। এতে সময়ও অনেকটা বেশি ব্যয় হয়। এই সুযোগে নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও খানিকটা মজবুত ও দুর্ভেদ্য করার মূল্যবান সময় হাতে পেয়ে যায় ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। ভিতালিকে মরণোত্তর সম্মান দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী।