×

খেলা

বিশ্বকাপ সুপার লিগে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে বাংলাদেশ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১০:২০ পিএম

বিশ্বকাপ সুপার লিগে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে বাংলাদেশ

বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ফাইল ছবি

তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে শুক্রবার আফগানিস্তানকে ৮৮ রানে হারিয়েছে টাইগাররা। এ জয়ের ফলে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জেতার সঙ্গে বিশ্বকাপ সুপার লিগে পয়েন্ট টেবিলে সবার উপরে বাংলাদেশ। আফগানিস্তান সিরিজ শুরুর আগে বিশ্বকাপ সুপার লিগে টাইগাররা ১২ ম্যাচ থেকে ৮ জয়ে ৮০ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল। ১৫ ম্যাচে ৯ জয়ে ৯৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে ছিল ইংল্যান্ড।

শুক্রবার চট্টগ্রামে আফগানিস্তানকে হারানোর সুবাদে ১৪ ম্যাচে অংশ নিয়ে ১০ জয়ে ১০০ পয়েন্ট নিয়ে এ মুহূর্তে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে ওঠা টাইগাররা ২৮ ফেব্রুয়ারি তৃতীয় ম্যাচে আফগানদের হারাতে পারলে ১১০ পয়েন্ট অর্জন করতে সক্ষম হবে। সেই সঙ্গে প্রথমবার আফগানদের হোয়াইটওয়াশ করতে সক্ষম হবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।

শুক্রবার লিটন দাসের নান্দনিক সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ পয়েন্ট টেবিলেও সেঞ্চুরি করেছে। আফগানদের বিপক্ষে শুক্রবার সিরিজ জেতায় টাইগারদের অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সুপার লিগের পয়েন্টে শীর্ষে থাকা ৮ দলকে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার যোগ্যতা বিচার করা হবে। প্রতিটি দল ২৪ ম্যাচে ২৪০ পয়েন্টের জন্য লড়ছে। যেখানে প্রথম দল হিসেবে বাংলাদেশ ১০০ পয়েন্ট সংগ্রহে সক্ষম হয়েছে। তাও মাত্র ১৪ ম্যাচে। ভারত ১২ ম্যাচ থেকে অর্জন করেছে ৭৯ পয়েন্ট। রোহিতদের অবস্থান তৃতীয়। ১৮ ম্যাচে ৬৮ পয়েন্ট নিয়ে চারে আয়ারল্যান্ড। সমান ১৮ ম্যাচে ৬ জয় শ্রীলঙ্কার। ৬২ পয়েন্ট নিয়ে তারা আছে টেবিলের পঞ্চম স্থানে। ছয়ে থাকা আফগানিস্তান ৮ ম্যাচে অর্জন করেছে ৬০ পয়েন্ট। ৯ ম্যাচে আফগানদের সমান ৬০ পয়েন্ট নিয়ে সাতে অস্ট্রেলিয়া। ১৫ ম্যাচ ৫ জয়ে ৫০ পয়েন্ট ওয়েস্ট ইন্ডিজের। তারা আছে ৮ নম্বরে। নয় আর দশে আছে পাকিস্তান আর দক্ষিণ আফ্রিকা। ৯ ম্যাচ খেলে ৪০ পয়েন্ট বাবর আজমের দলের। ১০ ম্যাচে ৩৯ পয়েন্ট প্রোটিয়াদের।

লিটন দাসের সেঞ্চুরি ও মুশফিকুর রহিমের হাফ সেঞ্চুরিতে ভর করে শুক্রবার ৩০৬ রানের বড় সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ দল। জবাবে ৪৫.১ ওভারে ২১৮ রানে অলআউট হয় আফগানরা। ফলে ৮৮ রানের বড় জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজও জিতে নেয় টাইগাররা। ১৩৬ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলায় ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন লিটন দাস। টস জিতে ব্যাটিং নেয়ার সময় বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল বলেছিলেন, ২৬০ রান করলেই জয়ের জন্য যথেষ্ট হবে মনে করেন তিনি। লিটন-মুশফিকের দাপুটে ব্যাটিংয়ে অধিনায়কের চাওয়া পেরিয়ে আরো ৪৬ রান বেশি করেছে বাংলাদেশ।

দলকে বিশাল সংগ্রহ এনে দেয়ার পথে তৃতীয় উইকেটে ২০২ রানের জুটি গড়েছেন মুশফিক ও লিটন, যা তৃতীয় উইকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের জুটি রেকর্ড। এছাড়া সব মিলিয়ে যে কোনো উইকেটে পঞ্চম সর্বোচ্চ রানের জুটি এটি। এ নিয়েই পঞ্চমবারই কোনো উইকেটে ২০০ রানের জুটি দেখল বাংলাদেশ।

সর্বশেষ পাঁচ ইনিংসের মধ্যে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেয়া লিটন খেলেছেন ১২৬ বলে ১৩৬ রানের ইনিংস। যেখানে ছিল ১৬ চার ও দুইটি বিশাল ছয়ের মার। অন্যদিকে ক্যারিয়ারের ৪১তম ফিফটি করা মুশফিকের ব্যাট থেকে এসেছে ৯ চারের মারে ৯৩ বলে ৮৬ রান। বাংলাদেশের সংগ্রহ আরো বড় হতে পারত। কিন্তু লিটন-মুশফিকের বিদায়ের পর রানের চাকা সচল রাখতে পারেননি আফিফ হোসেন ধ্রুব ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এ দুজনের জুটিতে শেষ ২১ বলে এসেছে মাত্র ২১ রান। যেখানে ছিল মাত্র ১টি বাউন্ডারি। স্লগ ওভারে এমন ধীর ব্যাটিংয়ের কারণেই মূলত ৩০৬ রানের বেশি করতে পারেনি তামিম ইকবাল বাহিনী।

বাংলাদেশের ৩০৬ রানের জবাবে খেলতে নেমে ১০ ওভারেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসে আফগানিস্তান। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই সরাসরি থ্রোয়ে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন আফিফ হোসেন। ইব্রাহিম জাদরানের জায়গায় একাদশে সুযোগ পাওয়া রিয়াজ হাসান করেন ১ রান। অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদিকে কট বিহাইন্ড করেন শরিফুল ইসলাম। হাশমতের ব্যাট থেকে আসে ৫ রান। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে সাকিব আল হাসানের বলে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন ৯ রান করা আজমতউল্লাহ ওমরজাই। এরপর চতুর্থ উইকেট জুটিতে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছিলেন রহমত ও নাজিবউল্লাহ। এ দুজন মিলে গড়েন ৮৯ রানের জুটি। নাজিবের স্ট্রেইট ড্রাইভে ননস্ট্রাইক প্রান্তে স্টাম্প ভাঙলে মাঠে দেখা যায় অনন্য এক ঘটনা।

শেষ পর্যন্ত এ জুটি ভাঙেন তাসকিন। ইনিংসের ২৫তম ওভারে তাসকিনের বলে বোল্ড আউট হন ৫২ রান করা রহমত। পরে ২৯তম ওভারের প্রথম বলে আরেক হাফসেঞ্চুরিয়ান নাজিবকে উইকেটের পেছনে ক্যাচে পরিণত করেন তাসকিন। নাজিবের ব্যাট থেকে আসে ৫৪ রান।

নাজিবের বিদায়ের পর উইকেটে আসার অনুমতি পান গুরবাজ। তবে বেশিক্ষণ থাকা হয়নি তার। সাকিবের বলে প্লেইড অন হওয়ার আগে ৭ রান করতে পেরেছেন এ উইকেটরক্ষক ব্যাটার। সবশেষ ৩৮তম ওভারে অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবীকে সাজঘরে পাঠিয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। নবীর ব্যাট থেকে এসেছে ৩২ রান। নবীর বিদায়ের পরই মূলত জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের। মোস্তাফিজুর রহমানের এক ওভারে পরপর ছয় ও চার মেরে খানিক আশা জাগান রশিদ খান। তবে পরের বলেই তাকে বোল্ড করে দেন মোস্তাফিজ। আউট হওয়ার আগে রশিদ খেলেছেন ২৬ বলে ২৯ রানের ইনিংস।

এরপর বাকি ২ উইকেট নিয়ে জয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারতে লেগে যায় আরো ৪.৪ ওভার। শেষ দুই উইকেটই নেন দুই খণ্ডকালীন বোলার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আফিফ হোসেন। প্রথমে মাহমুদুল হাসান জয়ের দারুণ এক ক্যাচে সাজঘরে ফেরেন ফরিদ উদ্দিন মালিক। ২টি করে উইকেট পেয়েছেন তাসকিন ও সাকিব। আর ১টি করে উইকেট পেয়েছেন মোস্তাফিজ, শরিফুল, মিরাজ, মাহমুদউল্লাহ ও আফিফ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App