×

আন্তর্জাতিক

ইউক্রেন-রুশ হামলা নিয়ে ভাইরাল হওয়া ভুয়া ছবি ও ভিডিও

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৭:০৮ পিএম

ইউক্রেন-রুশ হামলা নিয়ে ভাইরাল হওয়া ভুয়া ছবি ও ভিডিও

রাশিয়ার বিজয় দিবসের প্যারেডের ২০২০ সালের একটি ভিডিও ফুটেজকে অনেকে সাম্প্রতিক সংঘাতের ভিডিও হিসেবে দাবি করছে

ইউক্রেন-রুশ হামলা নিয়ে ভাইরাল হওয়া ভুয়া ছবি ও ভিডিও
ইউক্রেন-রুশ হামলা নিয়ে ভাইরাল হওয়া ভুয়া ছবি ও ভিডিও
ইউক্রেন-রুশ হামলা নিয়ে ভাইরাল হওয়া ভুয়া ছবি ও ভিডিও
ইউক্রেন-রুশ হামলা নিয়ে ভাইরাল হওয়া ভুয়া ছবি ও ভিডিও
ইউক্রেন-রুশ হামলা নিয়ে ভাইরাল হওয়া ভুয়া ছবি ও ভিডিও
ইউক্রেন-রুশ হামলা নিয়ে ভাইরাল হওয়া ভুয়া ছবি ও ভিডিও
ইউক্রেন-রুশ হামলা নিয়ে ভাইরাল হওয়া ভুয়া ছবি ও ভিডিও

ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে বিভ্রান্তিকর অনেক ভিডিও ও ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে ব্যাপকভাবে।

বিবিসি বলছে, বেশ কিছু ভিডিও ও ছবি যেগুলো ইউক্রেন বা পৃথিবীর অন্য কোনো স্থানে হওয়া পুরনো যুদ্ধের ভিডিও। আবার অনেক ছবি বা ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়াচ্ছে যেগুলো সেনা সদস্যদের মহড়ার সময়কার ছবি। এসব বিভ্রান্তিকর ছবি-ভিডিও মিথ্যা বলে প্রচার ও তা সরিয়ে নিয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম টুইটার। এমন কয়েকটি ছবি ও ভিডিও নিয়ে এই প্রতিবেদন।

২০২০ সালে সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজের প্রস্তুতি হিসেবে এই বোমারু বিমানগুলো মহড়া দিচ্ছিল।

ফ্যান্টম জেটস

বৃহস্পতিবার ভোরে হামলা শুরুর পরপরই ইউক্রেনের আকাশে রাশিয়ান বিমান উড়ছে এমন বেশ কয়েকটি ভিডিও টুইটারে পোস্ট করা হয়। মুহূর্তেই সেসব ভাইরাল হয়ে যায়। এর মধ্যে একটি ভিডিও অবশ্য মুছে ফেলা হয়েছে।

সত্যতা যাচাইয়ে দেখা যায়, ওই যুদ্ধবিমানটি যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এফ-১৬ ফাইটিং ফ্যালকন। কোনোভাবেই রাশিয়া বা ইউক্রেনের আকাশে ওই বিমানের ওড়ার কথা নয়।

আকাশে বোমারু বিমান ও সাইরেন

টুইটারে পোস্ট করা ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ইউক্রেনের একটি শহরের ওপর দিয়ে সাইরেন বাজিয়ে অসংখ্য বোমারু বিমান উড়ছে।

বিবিসি বলছে, এই দৃশ্যটি ২০২০ সালের। ওই বছর সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজের প্রস্তুতি হিসেবে এই বোমারু বিমানগুলো মহড়া দিচ্ছিল। আর এই ভিডিওর মূল শব্দের ওপর সাইরেনের শব্দ যুক্ত করে তা টুইটারে পোস্ট করা হয়েছে। তাই বিভ্রান্তিকর এই ভিডিও ইউক্রেন-রুশ হামলার কোনো ঘটনার নয়। এটি ভুয়া ভিডিও।

রুশ ছত্রীসেনা (প্যারাট্রুপার)

আরেকটি ভিডিওতে দাবি করা হয়েছে, রুশ ছত্রীসেনারা ইউক্রেনের খারকিভ শহরে নামছে। টুইটারে এই পোস্ট কয়েক লাখ দেখা হয়েছে। কিন্তু সত্য এই, এই ভিডিও ইউক্রেনের নয়। এই ভিডিও ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো ইন্টারনেটে রাশিয়ায় দেখা গেছে।

ইউক্রেনে ভূপাতিত রাশিয়ার বিমান

টুইটার ও ইউটিউবে পোস্ট করা একটি ভিডিওর শিরোনাম দেওয়া হয়, ইউক্রেনে গুলিতে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান ভূপাতিত। কিন্তু ভিডিওটি কোনোভাবেই ইউক্রেন-রুশ হামলার নয়। ভিডিওর এই ঘটনা লিবিয়ার। আর ওই বিমানটি লিবিয়া সরকারের। ২০১১ সালে লিবিয়ার বেনগাজিতে বিদ্রোহীরা সরকারি ওই বিমানটি গুলি করে ভূপাতিত করে। আরবি ভাষায় উদ্‌যাপনের শব্দ রয়েছে ওই ভিডিওতে। এক দশকের বেশি সময় আগের এই ভিডিওটি বিবিসির সাংবাদিকদের সে সময় দৃষ্টিগোচর হয়েছিল।

মারিওপোলে ভবনে বিস্ফোরণ

টুইটারে একটি বিস্ফোরণের ছবি পোস্ট করে শিরোনাম দেওয়া হয়েছে-এই মুহূর্তের মারিওপোল। ছবিটি পোস্ট করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে ইউক্রেনের সাবেক রাষ্ট্রদূত ভোলোদিমির ইয়েলচেনকো। সেখানে দাবি করা হয়েছে, ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় মারিওপোল শহরের একটি ভবনে বিস্ফোরণের পর আগুন জ্বলছে। কিন্তু যে ভিডিও থেকে ছবিটি নেওয়া হয়েছে ওই ভিডিওটি গত ২৯ জানুয়ারি টিকটকে পোস্ট করা হয়েছিল। কিরিশখানিউ নামের একজন টিকটক ব্যবহারকারী এই ভিডিওটি প্রথমে পোস্ট করেছিলেন। ওই ব্যবহারকারী টিকটকে নিয়মিত নানা দেশের বিস্ফোরণের ছবি ও ভিডিও পোস্ট করে থাকেন।

খারকিভে রাশিয়ার পতাকা উত্তোলন

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে পোস্ট করা একটি ছবি পোস্ট করে দাবি করা হয়েছে, একজন রাশিয়ার সেনা সদস্য ইউক্রেনে খারকিভের মিউনিসিপ্যাল ভবনে রাশিয়ার পতাকা তুলে ধরেছেন। এই ছবির ক্যাপশনটি সঠিক হলেও ঘটনাটি সাম্প্রতিক ইউক্রেন-রুশ হামলার নয়। রিয়েলিটি চেক করে দেখা গেছে, ঘটনাটি ২০১৪ সালের। সে সময় খারকিভের ওই সরকারি ভবনে রাশিয়ার পতাকা উত্তোলনের চেষ্টা করে ওই রাশিয়ান সেনা।

ধোঁয়ার কুণ্ডলী

ধোঁয়ার কুণ্ডলী উড়ছে এমন একটি ছবি টুইটারে পোস্ট করে চীনা ভাষায় ক্যাপশন লেখা হয়েছে। জানানো হয়েছে ছবিটি ইউক্রেন-রুশ হামলার একটি ঘটনা। চীনা ভাষার ওই ক্যাপশন ইংরেজি ভাষান্তর করলে অর্থ দাঁড়ায়-পুতিন মহান, তিনি ইউক্রেনে হামলা চালিয়েছেন।

কিন্তু সত্যতা যাচাই করে দেখা গেছে, ভিডিওটি লেবাননের রাজধানী বৈরুতের। আর ঘটনাটি ২০২০ সালের। বৈরুতের পোর্ট ভবনে এই হামলায় দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা সহজেই যেকোনো ছবি বা ভিডিও পোস্ট করতে পারেন। সেই পোস্ট শেয়ারের মাধ্যমে দ্রুত ভাইরালও হয়ে যেতে পারে। কিন্তু সচেতন ব্যবহারকারীর কোনো পোস্ট শেয়ার করার আগে ভেবে দেখা উচিত যে এই ছবি বা ভিডিওর উৎস সঠিক কি না। উৎস জানা না গেলে তা শেয়ার না করাই ভালো। এতে বিভ্রান্তি ছড়ায় না। আর এই বিভ্রান্তি অনেক সময় বড় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App