×

সারাদেশ

যমুনা সারকারখানায় সংঘর্ষ-গুলি, পুলিশসহ আহত ৩০

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৫:০৮ পিএম

যমুনা সারকারখানায় সংঘর্ষ-গুলি, পুলিশসহ আহত ৩০

যমুনা সারকারখানা

যমুনা সারকারখানায় সংঘর্ষ-গুলি, পুলিশসহ আহত ৩০

বুধবার বিকেল থেকে সৃষ্ট যমুনা সারকারখানার সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা করছে পুলিশ সদস্যরা। ছবি: ভোরের কাগজ

যমুনা সারকারখানায় সংঘর্ষ-গুলি, পুলিশসহ আহত ৩০

জামালপুরের সরিষাবাড়ীর তারাকান্দিতে অবস্থিত যমুনা সারকারখানায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় হামলা, ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেল থেকে বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল পর্যন্ত চলা সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ, সংবাদকর্মীসহ উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, যমুনা সারকারখানার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও তারাকান্দি ট্রাক ট্রাঙ্কলড়ি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম মানিক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলামের মধ্যে বিরোধ চলছিলো। কারখানার শ্রমিক-কমর্চারী ইউনিয়নের (সিবিএ) নির্বাচন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিকেলে সাধারণ সভা আহ্বান করা হয়। এর আগেই বুধবার বিকেলে তারাকান্দি শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আশরাফুল আলম মানিক গ্রুপের যুবলীগ কর্মী খোকন মিয়াকে (৩৫) মারধর করা হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এবং পরে অপর পক্ষের সমর্থকরা জড়ো হয়ে কামরুজ্জামানকে (৪০) পাল্টা মারধর করে। এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। পরে খোকন ও কামরুজ্জামানকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সন্ধ্যায় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এদিকে রাত থেকে দু-পক্ষের সমর্থকরা পুনরায় অবস্থান নিলে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সকালে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। পাল্টাপাল্টি হামলা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপে এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে। এসময় এসআই ফয়জুর রহমান, এসআই সোহাগ এএসআই আবু শামা, সংবাদকর্মী রাইসুল ইসলাম আহত হন। সংঘর্ষে হায়দর আলী, বাবু মিয়া, হারুন রশিদ, বাবু আহমেদ, ছাইফুল হোসেন, মোফাজ্জল হোসেন, আনিসুর রহমান, সাইফুল ইসলাম, ঠান্ডু মিয়া, শফিকুল ইসলাম, মিন্টু মিয়াসহ উভয়পক্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়।

কারখানার শ্রমিক-কমর্চারি ইউনিয়নের (সিবিএ) সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান জানান, আসন্ন সিবিএ নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে একটি পক্ষ এলাকায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। প্রশাসন কঠোর না হলে নির্বাচনে বড় ধরনের সহিংসতার আশঙ্কা রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, সারকারখানার পরিবহন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এমপির লোকজন সাধারণ শ্রমিকদের মারধর করে। শ্রমিকরা পরিবহন বন্ধ করে দেওয়ায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। আমার লোকদের ওপর গুলিবর্ষণ করায় কয়েক জনকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনা ভিন্নখাতে নিতে আমার লোকজনকে দায়ি করা হচ্ছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেন তিনি।

তারাকান্দি ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও পোগলদিঘা ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম মানিক বলেন, সিবিএ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রফিকুল ইসলাম প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। তার ক্যাডারদের দিয়ে এলাকায় হামলা ও ভীতিসঞ্চার করায় বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করছে।

এ ব্যাপারে জামালপুরের এএসপি (সদর সার্কেল) মো. জাকির হোসেন সুমন জানান, যমুনা সারকারখানার সিবিএ'র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এতে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App