প্রসাবের সাধারণ যে ঝাঁজালো গন্ধটি রয়েছে সেটি আসলে অ্যামোনিয়া থেকে উৎপন্ন হয়। কিন্তু তারও একটি মাত্রা রয়েছে। যদি প্রসাবের গন্ধ অসহনীয় হয়ে ওঠে, তবে তা বহুবিধ সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। কখনো কখনো, দুর্গন্ধযুক্ত প্রসাব রোগ সংক্রমণ এবং অন্যান্য অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্যগত অবস্থার উপসর্গ হতে পারে। দেখে নিন এমন কিছু সম্ভাব্য কারণ যা থেকে মাত্রাতিরিক্ত দুর্গন্ধ হয় প্রসাবে।

১. মূত্রনালীর সংক্রমণ ইউটিআই বা মূত্রনালীর সংক্রমণ সাধারণত নানা অযাচিত ব্যাকটেরিয়ার কারণে ঘটে, যা মূত্রাশয়ে সংখ্যাবৃদ্ধি করে। দুর্গন্ধ এই ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতির একটি প্রত্যক্ষ লক্ষণ। তবে শুধু মূত্রের দুর্গন্ধই নয়, প্রসাব করার সময় জ্বালা এবং ঘন ঘন প্রসাব পাওয়ার মতো অন্যান্য একাধিক লক্ষণ দ্বারা ইউটিআই চিহ্নিত করা হয়।

২. পানির অভাব প্রসাব অতিরিক্ত পানি এবং অন্যান্য বর্জ্য পদার্থের মিশ্রণ ছাড়া আর কিছুই নয়। কাজেই যখন পানির পরিমাণ পর্যাপ্ত হয় না তখন অন্য বর্জ্য পদার্থগুলির মাত্রা বা ঘনত্ব বেড়ে যায় ও খারাপ গন্ধ তৈরি হয়।

৩. ডায়াবেটিস গন্ধযুক্ত প্রসাব ডায়াবেটিসের লক্ষণ হতে পারে। ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর শরীর অন্যান্য মানুষের দেহের মতো চিনি হজম করতে সক্ষম হয় না, যার কারণে তাদের প্রসাব মিষ্টি বা ফলের গন্ধযুক্ত হতে পারে। কেবল প্রসাবের গন্ধই নয়, বারংবার মূত্র ত্যাগের প্রবণতাও ডায়াবেটিসের লক্ষণ।

৪. যৌন রোগ যৌনতার মাধ্যমে সংক্রামিত রোগ বা সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ইনফেকশন প্রসাব এবং মূত্রাশয়ে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। কখনো কখনো এই সংক্রমণগুলো মূত্রনালীতে প্রদাহ সৃষ্টি করে যা প্রসাবের গন্ধে পরিবর্তন আনতে পারে। তবে কেবল যৌনতার মাধ্যমে সংক্রামিত রোগই নয়, যোনির সামান্য জ্বালাও দুর্গন্ধযুক্ত প্রসাবের কারণ হতে পারে।

৫. ইস্ট সংক্রমণ যোনিসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে প্রাকৃতিক ভাবে ইস্ট থাকে। কিন্তু এর পরিমাণ অতিরিক্ত বেড়ে গেলে এটি শরীরে, বিশেষত যোনিতে নানা প্রকার জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। দুর্গন্ধযুক্ত প্রসাব মূত্রনালী এবং যোনিপথ সংলগ্ন অঞ্চলে ইস্টের সংক্রমণের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও স্পষ্ট একটি নির্দেশক। এই ধরনের সংক্রমণের ফলে প্রসাবের দুর্গন্ধ ছাড়াও অন্যান্য বেশ কিছু উপসর্গ দেখা যায়, যার মধ্যে যোনি দেশের লালভাব, ফোলাভাব এবং ঘন সাদা স্রাব উল্লেখযোগ্য। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।