×

সারাদেশ

চট্রগ্রাম বইমেলায় ভোরের কাগজের স্টল পরিদর্শনে চসিক মেয়র

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৮:২০ পিএম

চট্রগ্রাম বইমেলায় ভোরের কাগজের স্টল পরিদর্শনে চসিক মেয়র

রবিবার চট্টগ্রামের অমর একুশে বইমেলায় ভোরের কাগজ প্রকাশনার স্টল পরিদর্শন করছেন চট্টগ্রামের সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী। ছবি: ভোরের কাগজ

চট্রগ্রাম বইমেলায় ভোরের কাগজের স্টল পরিদর্শনে চসিক মেয়র

রবিবার চট্টগ্রামের অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনে চট্টগ্রামের সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী। ছবি: ভোরের কাগজ

চট্রগ্রাম বইমেলায় ভোরের কাগজের স্টল পরিদর্শনে চসিক মেয়র

রবিবার চট্টগ্রামের অমর একুশে বইমেলায় ভোরের কাগজ প্রকাশনার স্টল পরিদর্শন করছেন চট্টগ্রামের সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী

চট্টগ্রামের অমর একুশে বইমেলায় কোনো মৌলবাদী বই, জঙ্গিবাদী ভাবধারার কোনো বই রাখা যাবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রামের সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী।

রবিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নগরীর এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়াম চত্বরে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) একুশের বইমেলা উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।

উদ্বোধন শেষে সিটি মেয়র রেজাউল করিম ভোরের কাগজ প্রকাশনার স্টল পরিদর্শন করেন। তিনি ভোরের কাগজ প্রকাশনা থেকে প্রকাশিত ‘একাত্তরের মোস্তাক ও নিয়াজী’ বইটি কিনে নেন। ভোরের কাগজ প্রকাশনার স্টল পরিদর্শন করে মেয়র রেজাউল করিম প্রকাশনার ভূয়সি প্রশংসা করেন।

বইমেলা উদ্বোধনকালে মেয়র রেজাউল করিম বলেন, একুশের বইমেলাকে ঘিরে বিভিন্নভাবে অপপ্রচার-গুজব ছড়ানো হচ্ছে। ইসলামিক, ধর্মীয় বই রাখা যাবে না এমন প্রপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে। এরা একাত্তরেও ছিল, এরা আগেও ছিল, এখনো আছে। এদের প্রেতাত্মারা এখনো মরে যায়নি। ইসলামি, ধর্মীয় বই রাখা যাবে না, এটা কোথাও বলা হয়নি। ইসলামি বই রাখা যাবে। কিন্তু আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই কোনো মৌলবাদী বই রাখা যাবে না। কোনো মিথ্যা প্রপাগান্ডায় কান দেবেন না, গুজবে কান দেবেন না।

তিনি বলেন, জঙ্গিবাদের আশ্রয়দাতা যারা, জঙ্গিবাদকে যারা উৎসাহিত করে, যে বই পড়ে আমাদের তরুণ প্রজন্ম জঙ্গিবাদে উৎসাহিত হয়, সেই সমস্ত বই এই বইমেলাতে রাখা যাবে না। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ। আমরা অনেক রক্তের বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীন করেছি। আমরাই একমাত্র জাতি, যারা নিজের মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য রক্ত দিয়েছি। পৃথিবীর আর কোনো জাতি নিজের মায়ের ভাষার জন্য রক্ত দেয়নি।

[caption id="attachment_336138" align="aligncenter" width="700"] রবিবার চট্টগ্রামের অমর একুশে বইমেলায় ভোরের কাগজ প্রকাশনার স্টল পরিদর্শন করছেন চট্টগ্রামের সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী[/caption]

তিনি বলেন, বইমেলা হচ্ছে বাঙালির প্রাণের উৎসব। এ উৎসব বাঙালি জাতিসত্ত্বা দাঁড় করাতে বিশেষ সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। বইমেলা শুধু বই কেনা-বেচার জায়গা নয়, বইমেলা বাঙালির প্রাণের মেলা। প্রতিবছর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এখানে একুশের বইমেলা করে থাকে। গতবার আমরা করোনার কারণে বইমেলা করতে পারিনি, দুর্ভাগ্য। এবারও দেরি হয়েছে একই কারণে। আমাদের সৌভাগ্য সবার মিলিত প্রচেষ্টায় একটু দেরিতে হলেও সম্মিলিতভাবে বইমেলা করতে পারছি।

স্বাস্থ্যসচেতন হয়ে সরকারি বিধিবিধান মেনে বইমেলাকে সুন্দর করার আহ্বান জানান মেয়র রেজাউল করিম। তিনি বঙ্গবন্ধু নগদ টাকায় কিনে শিশু-কিশোরদের উপহার দেন। জাতীয় পতাকা, চসিক’র পতাকা উত্তোলনসহ বেলুন ও ফেস্টেুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন মেয়র। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিবেদিত করে শুরু হওয়া এ বইমেলায় শিশুদের বই উপহার দেন মেয়র। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর জীবনী সম্পর্কিত বই ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বই শিশুদের হাতে তুল দেন তিনি।

চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিক্ষা স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু। এতে আরো বক্তব্য রাখেন প্যানেল মেয়র আবদুস সবুর লিটন, মো. গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম, সমাজ কল্যাণ স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি আবদুস সালাম মাসুম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা ট্রাষ্টের চেয়ারম্যান ডা. মাহফুজুর রহমান, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহম্মদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সৃজনশীল প্রকাশনা পরিষদের সভাপতি মহিউদ্দিন শাহ আলম নিপু, চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, দুর্বার বাংলার নির্বাহী সম্পাদক অধ্যাপক মাসুম চৌধুরী। আলোচনা সভা শেষে মেলা পরিষদের আয়োজনে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।

চসিক’র উদ্যোগে সৃজনশীল প্রকাশনা পরিষদ ও চট্টগ্রাম নাগরিক সমাজের সহযোগিতায় এই বইমেলা আয়োজন করা হয়েছে। ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে বইমেলা চলবে ১০ মার্চ পর্যন্ত। ১৯ দিনব্যাপি এই মেলায় থাকছে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন, পেশাজীবী সমাবেশ, ছড়া উৎসব, চাঁটগা উৎসব, মরমী উৎসব, লোক উৎসব, রবীন্দ্র উৎসব, কবিতা উৎসব, নৃগোষ্ঠী উৎসব, তারুণ্য উৎসব, নারী উৎসব, বির্তক প্রতিযোগিতা। এসব বর্ণিল আয়োজনে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ সারা দেশের খ্যাতিমান শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, মুক্তিযোদ্ধারা অংশ নেবেন।

প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বইমেলা চললেও ২১ ফেব্রুয়ারি ও অন্যান্য ছুটির দিনে সকাল ১০ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত একটানা এই বইমেলা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। ১ লাখ ৩০ হাজার বর্গফুটের বইমেলায় ১২০টি স্টল থাকছে। এবারের বইমেলায় ভোরের কাগজ প্রকাশনেরও একটি স্টল থাকছে। এছাড়া বইমেলায় বঙ্গবন্ধু কর্নার, নারী লেখক কর্নার, শিশু কর্নার ও ওয়াইফাই জোনও থাকছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App