×

আন্তর্জাতিক

পূর্ব ইউক্রেনে সেনাবাহিনী-বিচ্ছিন্নতাবাদী সংঘাত

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০২:১৩ পিএম

পূর্ব ইউক্রেনে সেনাবাহিনী-বিচ্ছিন্নতাবাদী সংঘাত

ইউক্রেন সংকট। প্রতীকী ছবি

পূর্ব ইউক্রেনে রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ওপর হামলা করেছে ইউক্রেনের সেনারা। যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে তাদের ওপর চার দফা আক্রমণ করেছে তারা। তবে কিয়েভ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিচ্ছিন্নতাবাদীরা হামলা চালিয়ে একটি স্কুল ধ্বংস করে দিয়েছে।

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, যখন ওই স্কুলে কামান দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে, তখন সেখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও ছিলেন। সন্ত্রাসীরা সেখানে অন্তত ২২টি গোলা ছুঁড়েছে। এতে অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন।

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল ডনবাসে ২০১৪ সালে বড় সংঘাতের পর থেকে আট বছর ধরে সংঘাত চলে আসছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাশিয়ার হামলার শঙ্কার মধ্যেই দেশটির সেনাদের সঙ্গে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সংঘাত হয়ে গেল। বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বলছে, হামলায় এখনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে এ বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। খবর সিএনবিসির।

ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চল মূলত রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কয়েক বছর আগে এ অঞ্চলে ইউক্রেন সেনাবাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘাত হয়। পরে মিনস্ক চুক্তি এবং অস্ত্রবিরতির পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। কিন্তু এ অঞ্চলে স্থায়ীভাবে শান্তি কখনোই আসেনি।

বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে সেনাদের সংঘাত পরিস্থিতি কতটুকু গুরুতর সে বিষয়ে এখনও জানা যায়নি। এখন পর্যন্ত অর্গানাইজেশন ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড কো-অপারেশন ইউরোপ (ওএসসিই) কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। এদিকে গত মঙ্গলবার রুশ পার্লামেন্টে বিদ্রোহী অধ্যুষিত ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলকে স্বাধীন প্রজাতন্ত্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বিল পাস হয়। এরপর থেকে ইউক্রেনের সেনারা ও স্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা একে অপরের বিরুদ্ধে দোষারোপ করে আসছে।

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সূত্র নিশ্চিত করেছে, ইউক্রেনে হামলার জন্য অজুহাত খুঁজছে রাশিয়া। সম্ভবত হামলার নাটক করে সে আক্রমণের ভিডিও ফুটেজ তৈরির মাধ্যমে এটি শুরু করবে দেশটি। এরপর ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করবে তারা।

মার্কিন গোয়েন্দাদের এ দাবি জোরালোভাবে অস্বীকার করে গত মঙ্গলবার ইউক্রেন সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহার করেছে রাশিয়া। এমনকি বৃহস্পতিবার কৃষ্ণসাগর থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় দেশটি।

বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও মন্তব্য করেন, ইউক্রেনে হামলার জন্য অজুহাত খুঁজছে রাশিয়া।

পড়ুন : ইউক্রেনে হামলার অজুহাত খুঁজছে রাশিয়া

পাল্টাপাল্টি দোষারোপ

এদিকে, বিচ্ছিন্নতাবাদী অধ্যুষিত পূর্ব ইউক্রেনের স্বঘোষিত প্রজাতন্ত্র লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানায়, মর্টার, গ্রেনেড লঞ্চার ও মেশিনগান ব্যবহার করে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী চারটি স্থানে হামলা চালিয়েছে। ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী অস্ত্রবিরতি চুক্তির লঙ্ঘন করেছে। মিনস্ক চুক্তি অনুযায়ী এখান থেকে সেনাদের প্রত্যাহারের কথা।

তবে পাল্টা অভিযোগ করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীরা একটি কিন্ডারগার্টেনসহ কয়েকটি স্থানে হামলা করেছে। এটি বড় ধরনের উস্কানি। কূটনীতিকদের জন্য বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ, যারা ইউক্রেন সংকট পর্যবেক্ষণ করছেন।

মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টিতে ইউক্রেন সংকট

জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, এটিই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। ইউক্রেন সেনা ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের এ হামলার মাধ্যমে এটাই বোঝা যাচ্ছে যে রাশিয়া ইউক্রেনের উদ্দেশ্যে এগিয়ে আসছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে জানান, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা অবশ্যম্ভাবী।

জাতিসংঘের রাজনীতিবিষয়ক আন্ডারসেক্রেটারি রোজেমারি ডিকার্লো বলেন, ইউক্রেন সংকট সমাধানে কূটনৈতিক সমাধানের বিকল্প নেই।

কী বলছে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র

মস্কো কর্তৃপক্ষ বলছে, যুক্তরাষ্ট্র যদি তাদের নিরাপত্তা দাবি মেনে না নেয় অর্থাৎ ন্যাটোতে ইউক্রেনকে যুক্ত না করার নিশ্চয়তা দেয়, তাহলে তারা সামরিক পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ইউক্রেন সীমান্তে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি ছিল লোকদেখানো। বিকেলে সেনা প্রত্যাহারের পরদিনই রাশিয়া সাত হাজারের বেশি সেনা মোতায়েন করে রেখেছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App