×

খেলা

শুক্রবার ফাইনাল: বরিশাল নাকি কুমিল্লা, কে হাসবে শেষ হাসি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১০:৪৩ পিএম

শুক্রবার ফাইনাল: বরিশাল নাকি কুমিল্লা, কে হাসবে শেষ হাসি

হোম অফ ক্রিকেট মিরপুরে বৃহস্পতিবার বিপিএলের ট্রফি উন্মোচন করেন বরিশালের সহঅধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান ও কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল কায়েস

এবার বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) কে শিরোপা ঘরে তুলবে, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনায় ডুবে আছেন ভক্তরা। এ টুর্নামেন্ট নিয়ে সব অপেক্ষার অবসান হবে শুক্রবার। এদিন বিপিএল ফাইনাল ম্যাচে ফরচুন বরিশালের মুখোমুখি হবে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। আগের সূচি অনুযায়ী ম্যাচটি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও নতুন সূচিতে তা ১ ঘণ্টা এগিয়ে আনা হয়েছে। হোম অব ক্রিকেট মিরপুরে দুই দলের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটি শুরু হবে বিকাল সাড়ে ৫টায়। ফাইনাল ম্যাচ সবসময়ই কঠিন। পুরো টুর্নামেন্টের হিসাব-নিকাশ নিয়ে এখন কেউ ভাবছে না। শুক্রবার যারা ভালো খেলবে, তারাই জিতবে। ফলে ম্যাচে বেশ হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে সাকিব আল হাসান-ইমরুল কায়েসদের মধ্যে শিরোপার জন্য। ফরচুন বরিশাল-কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স দুই দলেই আছেন দেশি-বিদেশি তারকা ক্রিকেটার। বৃহস্পতিবার তারা সবাই অনুশীলনে ঘাম ঝরিয়েছেন। কিন্তু বরিশালের অধিনায়ক সাকিব অনুশীলন করেননি। অফিসিয়াল ফটোসেশনেও ছিলেন না তিনি। তার পরিবর্তে অংশ নিয়েছেন সহঅধিনায়ক কাজী নুরুল হাসান সোহান। তিনি কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল কায়েসের সঙ্গে বিপিএলের ট্রফি উন্মোচন করেন। পরে গণমাধ্যমেও কথা বলেন বরিশালের উইকেটরক্ষক ও ব্যাটসম্যান।

সোহান জানান, সকালে সাকিবকে তিনি জিম করতে দেখেছেন। এরপরই টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্তে তাকে হোটেলে রেখে মাঠে অনুশীলন করতে চলে আসেন বাকি খেলোয়াড়েরা।

এর আগে সাকিব ঢাকার জার্সিতে ২০১২ ও ২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়ন হন। আর ২০১৭ ও ২০১৯ সালে একই দলের হয়ে ফাইনাল খেললেও শিরোপা জেতা হয়নি। এবার সাকিবের ভাগ্যে কী আছে, সেটাই দেখার অপেক্ষায় ভক্তরা। বিপিএলের গত সাত আসরে কোনো শিরোপার স্বাদ নিতে পারেনি বরিশাল। তবে ২০১৬-১৯ সালে দুবার শিরোপা জিতেছে কুমিল্লা। এখন পর্যন্ত বিপিএলে সর্বোচ্চ তিনবার ঢাকা ও একবার করে ট্রফি জিতেছে রংপুর-রাজশাহী। এবার তৃতীয়বার শিরোপা জিততে মুখিয়ে আছে কুমিল্লা। সাকিবদের ছাড় দিতে নারাজ ইমরুল, মঈন ও সুনীলরা।

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার কুমিল্লার দলপতি ইমরুল বলেন, এর আগে কুমিল্লা দুবার ফাইনাল খেলেছে এবং চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আশা করি আমরা একই প্রক্রিয়ায় যাব। প্রথম কোয়ালিফায়ার হেরে আমরা হতাশায় ছিলাম, কী করব না করব। কিন্তু যেভাবে কামব্যাক করেছি আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেক উপরে। রান তাড়া করা বলেন বা প্রথমে ব্যাটিং বলেন সব কিছুতে ইতিবাচক আছি। আমরা এর আগেও বরিশালকে ১৫০-এর নিচে আটকে দিয়েছিলাম। আমরা যে ম্যাচটা জিতেছি, সেটায় আমরা ১৮০ করে তাদের ১০০-এর নিচে অলআউট করেছি। আমাদের বোলিং দিক থেকে কোনো সমস্যা নেই। আমাদের সমস্যাটা হলো ব্যাটিংটা, রান তাড়া করতে গিয়ে আমরা আমাদের পরিকল্পনার প্রয়োগ করতে পারেনি। তাই আমরা আক্রমণাত্মক থাকব।

এদিকে বিপিএলে টানা ৫ ম্যাচে ব্যাটিং-বোলিং মিলিয়ে অলরাউন্ডস পারফরম্যান্স করেছেন সাকিব। যার সুবাদে টানা পাঁচ ম্যাচে সেরার পুরস্কার জিতেছেন। তাছাড়া ফাইনালে দলকে পৌঁছে দিতে চমৎকার ব্যাটিংও করেছেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে টানা পাঁচ ম্যাচে ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’ হওয়ার রেকর্ড নেই কারো। এর আগে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে টানা চারবার ম্যাচসেরা হওয়ার রেকর্ড ছিল পাঁচজনের। তারা হলেন ইংল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার মার্কাস ট্রেসকোথিক, দক্ষিণ আফ্রিকার শার্ল ল্যাঙ্গাভেল্ট, অস্ট্রেলিয়ার শেন ওয়াটসন ও ডেভিড ওয়ার্নার এবং উগান্ডার ভারতীয় বংশোদ্ভূত অলরাউন্ডার দিনেশ নাকরানির।

এর আগে প্রথম কোয়ালিফায়ারে মুখোমুখি হয়েছিল বরিশাল-কুমিল্লা। শেষ ২ ওভারে জয়ের জন্য ইমরুলদের প্রয়োজন ছিল ২২ রান। কিন্তু বরিশালের দুই বোলার মেহেদী হাসান রানা ও মুজিব উর রহমানের দারুণ বোলিংয়ে শেষ পর্যন্ত পারেনি কুমিল্লা। তাদের ১০ রানে হারিয়ে বিপিএল এবারের আসরের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে সাকিব আল হাসানের বরিশাল।

এদিকে এবারের বিপিএলে দারুণ সময় কাটছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে মূল একাদশের বেশ কিছু ক্রিকেটারকে বিশ্রাম দিতেই ছন্দপতন ঘটে তাদের। সেই রেশ থেকে যায় প্রথম কোয়ালিফায়ারে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষেও। তবে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে চেনা রূপে ফেরে কুমিল্লা। সুনীল নারিনের ঝড়ো হাফসেঞ্চুরিতে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে উড়িয়ে ৭ উইকেটের জয়ে ফাইনালে পৌঁছে গেছে ইমরুল বাহিনী। এমনকি ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালিয়ে মাত্র ১৩ বলে হাফসেঞ্চুরি করেছেন কুমিল্লা হয়ে খেলা নারিন। একটুর জন্য বিশ্বরেকর্ড মিস হলেও বিপিএলে নিজের নামটা ঠিকই খোদাই করে লিখে নিলেন ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার। বাংলাদেশের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতায় তিনিই এখন দ্রুততম হাফসেঞ্চুরির মালিক। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে এই কীর্তি গড়েছেন তিনি। এতদিন বিপিএলের দ্রুততম হাফসেঞ্চুরি ছিল আহমেদ শেহজাদের। ২০১২ সালে প্রথম আসরে দুরন্ত রাজশাহীর বিপক্ষে বরিশাল বার্নার্সের হয়ে শেহজাদ ১৬ বলে ফিফটি করেছিলেন। মিরপুরেই ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৩ চার ও ৫ ছক্কায় এই মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন।

এছাড়া করোনাকালে জনপ্রিয় ঘরোয়া ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ঘিরে ভাবনায় ডুবে ছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। দেশি-বিদেশি তারকা ক্রিকেটারে ঠাসা এ টুর্নামেন্ট ঘিরে বাড়তি উত্তেজনা বিরাজ করে সব সময়ই। তাই ক্রিকেটরপ্রেমীদের হতাশ করেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ৬ দল নিয়ে ২১ জানুয়ারি পর্দা ওঠে এই টুর্নামেন্টের। দলগুলো হলো ফরচুন বরিশাল, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, সিলেট সানরাইজার্স, মিনিস্টার ঢাকা, চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও খুলনা টাইগার্স।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App